মৃত্যুবার্ষিকীতে ত্বকীর কবর জিয়ারত করলেন আইভী

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০১৮, ২০:৪৭

নারায়ণগঞ্জের আলোচিত মেধাবী স্কুলছাত্র তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যার পঞ্চম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে তার কবর জিয়ারত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। পাঁচ বছর আগে চাষাড়ায় ত্বকীর লাশে শ্রদ্ধা জানাতে এসে মেয়র আইভী অভিযোগ করেছিলেন, এই হত্যাকাণ্ড শামীম ওসমান ঘটিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জবাসী ক্ষেপে গেলে শামীম ওসমানের বাড়ির ইট খুলে নিয়ে আসার হুংকার দিয়েছিলেন মেয়র আইভী। তবে পাঁচ বছরে চার্জশিটই দাখিল করেননি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।

মঙ্গলবার ত্বকীর কবর জিয়ারতকালে মেয়রের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বিসহ নারায়ণগঞ্জের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ত্বকীর কবরে ফুল দেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) জেলার সমন্বয়ক নিখিল দাস, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েল প্রমুখ।

ত্বকীর কবরে ফুল দিয়ে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের উপদেষ্টা ভবানী শংকর রায় বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত ত্বকী হত্যার বিচার না হবে ততদিন পর্যন্ত ত্বকীর বিচারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবো। সরকার চাইলে সাত খুনের মতো ত্বকী হত্যা মামলা বিচারও দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব।’

২০১৩ সালের ৬ মার্চ বিকালে ত্বকী শহরের শায়েস্তা খান সড়কের বাসা থেকে বের হয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে ৮ মার্চ সকালে চাড়ারগোপে শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে তার মরদেহ পাওয়া যায়। ২০১৩ সালের ৭ মার্চ এ লেভেল পরীক্ষার রেজাল্টে পদার্থবিজ্ঞানে ৩০০ নম্বরের মধ্যে ২৯৭ পেয়েছিল যা সারাদেশে সর্বোচ্চ। কিন্তু এ হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর অতিবাহিত হলেও এখনো পর্যন্ত এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়নি।

ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে প্রতি মাসেই মোমশিখা প্রজ্জ্বলন, সমাবেশ করে চলেছে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ, নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সংগঠন। মৃত্যুবার্ষিকীর মাসে মার্চে কর্মসূচির পরিধিও থাকে একটু বেশি। তবে এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের অনুষ্ঠানে হামলাও হয়েছে কয়েক বার।

ত্বকী নিহতের বছরখানেক আগে নারায়ণগঞ্জের পরিবহন সেক্টরের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম নামে একটি কমিটি গঠন করেছিলেন ত্বকীর বাবা রফিউর রাব্বি। সংগঠনটির দাবি ছিল, নারায়ণগঞ্জ থেকে গুলস্তান যেতে ১৯ কিলোমিটার এবং ফিরে আসতে ২১ কিলোমিটার রাস্তা। কিন্তু পরিবহন ব্যবসায়ীরা আসা যাওয়ার মাঝে ২১ কিলোমিটারের ভাড়া আদায় করেছিল। এ নিয়ে হরতাল পালন করে যাত্রী অধিকার সংরক্ষণ ফোরাম। ওই সময় হরতাল থেকে অ্যাডভোকেট শাহীন মাহামুদকেসহ বেশকজনকে আটক করেছিল পুলিশ।

পরবর্তী সময়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক পরিবহন ব্যবসায়ী ও আন্দোলনকারীদের নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সভা ডাকেন। ওই সময় তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাংসদ সারাহ বেগম কবরী, বর্তমান মেয়র আইভী ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আন্দোলনকারীদের দাবির পক্ষে মত দিলে ডিসি কার্যালয়ের ভেতরে এমপি শামীম ওসমানের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে, যা দেশব্যাপী সমালোচিত হয়েছিল। লাঞ্ছিত হয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন।

ওই ঘটনাকে ইস্যু করেই ত্বকীকে শামীম ওসমান ও তার লোকজন হত্যা করিন বলে অভিযোগ করে আসছেন মেয়র আইভী। ত্বকীর বাবাও শামীম ওসমানের লোকজনদের নাম উল্লেখ করে জেলা পুলিশ সুপারকে একটি লিখিত দিয়েছিলেন। তবে শামীম ওসমান বরাবরই এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজের বা পরিবারের কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করে আসছেন।

(ঢাকাটাইমস/০৬মার্চ/প্রতিনিধি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :