ভুল চিকিৎসায় প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ মার্চ ২০১৮, ১৯:৪৩

নাটোরের সিংড়ায় ভুল চিকিৎসায় পুবালী বেগম নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সিংড়া উপজেলার আলহেরা ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নিহত পুবালী বেগম উপজেলার বড়চৌগ্রামের অটোচালক আরিফুল ইসলামের স্ত্রী।

এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার বলছে, অটোরিকশাচালক আরিফুল ইসলামের অন্তঃসত্বা স্ত্রী পুবালী বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে মঙ্গলবার সিংড়া শহরের আলহেরা ক্লিনিকে নেয়া হয়। এসময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ প্রসূতিকে দ্রুত অস্ত্রপ্রচার করার তাগিদ দেন। উপায়ন্তর না দেখে কর্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী অর্থ প্রদান করে পুবালীর অস্ত্রোপ্রচারের সিদ্ধান্ত দেয়। হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডাঃ আব্দুল আহাদ অস্ত্রোপাচার করেন। অস্ত্রোপচারের পর পুবালী কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। নবজাতক সুস্থ থাকলেও প্রসূতি পুবালীর প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। হাসাপাতালের ডাক্তার তার ক্ষরণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ জানানো হয় প্রসূতিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে হবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পক্ষ থেকে ঠিক করে দেয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অ্যাম্বুলেন্সে প্রসূতিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার আগেই প্রসূতির মৃত্যু হলেও অ্যাম্বুলেন্স চালক কৌশলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রসূতির নিথর দেহ নামিয়ে দিয়ে চলে আসে।

এসময় হাসাপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক প্রসূতির আগেই মৃত্যু হয়েছে বলে জানালে নিহতের পরিবার লাশ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসে।

বুধবার সকাল ১১টার দিকে নিজ গ্রাম বড়চৌগ্রামে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।

নিহতের স্বামী আরিফুল ইসলাম জানান, ক্লিনিকের ডাক্তার তার স্ত্রীর জন্য চার ব্যাগ রক্ত নিয়েছে। রাত সাড়ে ৮টার দিকে হঠাৎ করে তারা তার স্ত্রীকে রাজশাহী নিতে বলে। এসময় কি হয়েছে জানতে চাইলে ওই ক্লিনিক থেকে বলা হয়। রক্ত বন্ধ করার জন্য রাজশাহী যেতে হবে। ক্লিনিকের লোকজন নিজেরাই অ্যাম্বুলেন্স ঠিক করে দেয়। আর শতভাগ ভুল চিকিৎসায় তার স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

অ্রাম্বুলেন্স চালক ফোরম্যান জানান, রোগীকে রাজশাহী মেডিকেলে নামিয়ে নার্সদের বুঝিয়ে দিয়ে এসেছেন।

সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অ্যাসিসটেন্ট খলিল উদ্দিন জানান, হাসপাতালের নিয়ম মেনেই অ্যাম্বুলেন্স দেয়া হয়েছে।

আলহেলা ক্লিনিকের সত্ত্বাধিকারী ডা. আব্দুল আহাদ ভুল চিকিৎসার অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও মিথ্যা বলে দাবি করে জানান, রোগীকে ভর্তি করার সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। এছাড়া প্রসূতি প্রসবের পর তা কিছুটা বেড়ে যায়। কোন ভুল চিকিৎসার জন্য নয়, প্রকৃতির নিয়মেই প্রসূতির রক্তক্ষণ হচ্ছিল। অ্যাম্বুলেন্স ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের ঠিক করে দেয়ার অভিযোগও বানোয়াট। রোগীর লোকজন যখন কোন অ্যাম্বুলেন্স পাচ্ছিল না তখন তাদের অ্যাম্বুলেন্স পাইয়ে দিতে সহায়তা করা হয়েছে।

সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি লোকমুখে মৌখিকভাবে শুনেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/৭মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :