মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য প্রতি উপজেলায় হচ্ছে বহুতল ভবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৮ মার্চ ২০১৮, ২০:০৯

দেশের অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সব জেলা-উপজেলায় বহুতল আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে, এর জন্য একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে একনেক সভায়।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভায় এ সংক্রান্ত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

সভায় মোট ছয়টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় হবে সাত হাজার ৪৬৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

একনেক সভা শেষে প্রকল্পগুলো নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান লক্ষ্য ছিল মুক্তিকামী জনগণের জন্য একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা। বাসস্থান মানুষের অন্যতম মৌলিক চাহিদা। সরকারের বিভিন্ন আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের নিম্ন ও মধ্যম আয়ের লোকদের আবাসন সুবিধা দেয়া হবে। কিন্তু স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্য অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা এ সুবিধা হতে বঞ্চিত থেকে যান। অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধারা সবাই বয়োজ্যেষ্ঠ এবং উপার্জনক্ষম না হওয়ায় তাদের পক্ষে ভাড়া খরিদ বা এককালীন অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনা সম্ভব নয়। এ লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় তৈরি হবে বহুতল আবাসিক ভবন। ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী আর্থ-সামাজিকভাবে পিছিয়ে পড়া অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থানের ব্যবস্থা করার মধ্যদিয়ে জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে।

মন্ত্রী জানান, এ লক্ষ্যে প্রতি জেলা-উপজেলায় অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্পটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে আজকের একনেকে। চলতি বছর থেকে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে এটি বাস্তবায়নের কাজ করবে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। এ উদ্যোগটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে দুই হাজার ২৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা এবং নির্মাণ করা হবে আট হাজারটি ফ্ল্যাট। দুই ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৪টি এবং চার ইউনিট বিশিষ্ট ২৬৮টি অর্থাৎ মোট ৫৩২টি ভবন নির্মাণ করা হবে। প্রতিটি ইউনিট বা ফ্ল্যাটের আয়তন হবে ৯৮২ বর্গফুট। এতে তিনটি বেড রুম, একটি ড্রইং কাম ডাইনিং রুম, দুটি বাথরুমসহ বারান্দা।

পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, তবে যেসব জেলা বা উপজেলায় তিন বা ততধিক ভবনের প্রয়োজন হবে সেখানে আবাসন কমপ্লেক্স নির্মাণ করে অন্যান্য সুবিধাদি যেমন- অভ্যন্তরীণ সড়ক, লাইটিং ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। মূল খাস জমির উপর ভবনগুলো নির্মাণ করা হবে। তবে যেসব উপজেলায় খাস জমি পাওয়া না যায় সখানে জমি অধিগ্রহণ করা হবে।

১২ তলা ভবন পাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট

আজকের একনেকে সুপ্রিম কোর্ট ভবন প্রকল্পও পাস হয়েছে। প্রকল্প থেকে জানা যায়, সুপ্রিম কোর্ট বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত। এটি হাইকোর্ট ডিভিশন ও অ্যাপিলেট ডিভিশনের সমন্বয়ে গঠিত। এটি একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি ও দুই ডিভিশনের বিচারপতির কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে হাইকোর্ট ডিভিশনের নিম্ন আদালতে মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং সংশ্লিষ্ট অফিসগুলোতে পর্যাপ্ত স্থান না থাকায় প্রয়োজনীয় কাগজপত্র মাটিতে স্তুপ করে রাখা হয়েছে। এতে নানা সময়ে নানা সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে। যা আরও সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া বেশিরভাগ বিচারপতির নিজস্ব চেম্বার নেই। ফলে নিয়মিত এজলাস পরিচালনা ব্যহত হচ্ছে।

এই সংকট মোকাবেলায় নতুন ১২ তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি টাকা। সরকারি অর্থায়ন থেকে এর পুরোটাই বহন করা হয়।

আগামী ২০২০ সালের মধ্যে আইন ও বিচার বিভাগ এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পটির আওতায় একটি ১২ তলা ভবন, ২ তলা সাব স্টেশন ভবন নির্মাণ, জেনারেট, এয়ারকুলার, বিদুৎ্ সাব স্টেশনসহ আবসবাবপত্র কেনা হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘জলবায়ু সহিষ্ণু অবকাঠামো প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ প্রকল্প সম্পর্কে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ জনজীবন ও সম্পদের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ কারণে উপকূলীয় অঞ্চলসমূহ তথা প্রকল্প এলাকায় গ্রামীণ ও নগর অবকাঠামো উন্নয়ন জরুরি। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বেশির ভাগই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সুরক্ষার প্রয়োজনে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বিদ্যমান অবকাঠামোর সমীক্ষা জরুরি। এ পরিপ্রেক্ষিতে, গ্রামীণ ও নগর অঞ্চলে জনগণের জীবন মানোন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হতে সুরক্ষার প্রয়োজনে বাংলাদেশ সরকার, জিসিএফ এবং কেএফডাব্লিউ অর্থায়নে মোট ৬৮৮.০০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে জানুয়ারি, ২০১৮ হতে ডিসেম্বর, ২০২৩ মেয়াদে বাস্তবায়নের জন্য এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।

আজকের একনেক সভায় পাস হওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো - বিমানবন্দর বাইপাস ইন্টারসেকশন-লালবাগ-সালুটিকর-কোম্পানীগঞ্জ-ভোলাগঞ্জ সড়ককে জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণ (১ম সংশোধিত) প্রকল্প, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের ‘সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন কর্মসূচি (সিভিডিপি)-(৩য় পর্যায়)’ প্রকল্প , স্থানীয় সরকার বিভাগের ‘গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়)’ প্রকল্প ।

মন্ত্রীর ব্রিফিংয়ের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা সচিব জিয়াউল ইসলাম, সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম প্রমুখ।

(ঢাকাটাইমস/০৮মার্চ/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

দুঃস্থ ও অসহায়দের মাঝে জনতা ব্যাংকের ইফতার সামগ্রী বিতরণ

ঈদ উৎসব মাতাতে ‘ঢেউ’য়ের ওয়েস্টার্ন সংগ্রহ

৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন একনেকে

সিটি ব্যাংকের ২০২৩ সালের মুনাফা ৬৩৮ কোটি টাকা, বেড়েছে ৩৩%

ঈদ অফারে বিনামূল্যে মিনিস্টারের রেফ্রিজারেটর পেলেন আসাদুজ্জামান সুমন

সোনালী ব্যাংকে ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক নেতৃত্ব ও দেশের উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনাসভা

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ৭টি নতুন উপশাখার উদ্বোধন

স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের শ্রদ্ধা

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে জাতীয় স্মৃতিসৌধে কর্মসংস্থান ব্যাংকের শ্রদ্ধা

স্বাধীনতা দিবসে স্মৃতিসৌধে ইসলামী ব্যাংকের শ্রদ্ধা

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :