ফরিদপুরের পেঁয়াজবীজ ছড়িয়ে যাবে সারাদেশে

মফিজুর রহমান শিপন
ফরিদপুর থেকে
| আপডেট : ০৯ মার্চ ২০১৮, ১৯:৩১ | প্রকাশিত : ০৯ মার্চ ২০১৮, ১৯:০৬

প্রতিবছরের মতো এবছরেও সারাদেশের পেঁয়াজের বীজের চাহিদা মেটাতে প্রস্তুত হচ্ছে ফরিদপুরের কৃষকের মাঠ। কৃষকের আশা এবছরও পেঁয়াজের বীজের বাম্পার ফলন হবে। তবে তারা বলছেন, যদি সরকারি হস্তক্ষেপে ন্যায্য মূল্য মিলে তবেই কৃষকের মুখে স্বস্তির হাসি ফুটবে।

সারা দেশের পেঁয়াজের বীজের জন্য সুখ্যাতি রয়েছে ফরিদপুরের।

আর তাই ফরিদপুরের ৯টি উপজেলার মধ্যে ৫টি উপজেলার কৃষকের মাঠে এখন এমনই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। তাহিরপুরী বীজ থেকে লাগানো এই পেঁয়াজ আবারো মাঠ থেকে বীজ হয়ে কৃষকের ঘরে আসবে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই। কৃষকের আশা এবছর প্রায় ২০০ মেট্রিকটনের বেশি পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন করতে পারবে তারা। পেঁয়াজের বীজের দেশের মোট চাহিদার শতকরা ৭৫ ভাগই সরবরাহ করে ফরিদপুর জেলা।

ফরিদপুর কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে (ফরিদপুর সদর, ভাঙ্গা, নগরকান্দা, সদরপুর, আলফাডাঙ্গা উপজেলায়) তিন হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষাবাদ করা হয়েছে। কম খরচে এবং অল্প সময়ে লাভ বেশি হওয়ায় জেলার এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পেঁয়াজ বীজ আবাদ হয়েছে বলে মনে করেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।

ফরিদপুর অঞ্চলের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কান্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, সরকারের সংগৃহীত মোট পেঁয়াজ বীজের ৭৫ শতাংশ ফরিদপুর জেলা থেকে করে থাকে। চেষ্টা করছি এই বীজ চাষে বেকার যুবকদের উৎসাহিত কতে। তিনি বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকলে জেলার ৫টি উপজেলাতে ২০০ মেট্রিকটনের বেশি বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামের পেঁয়াজ বীজ চাষি মো.বক্কার খান ঢাকাটাইমসকে বলেন, এই বছর বিশ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ বীজের চাষ করছি। খুব ভালো হইছে ক্ষেত। আশা করছি ভাল মানের বীজ উৎপাদন হবে।

একই গ্রামের জলিল মোল্লা ঢাকাটাইমসকে বললেন, এই অঞ্চলের বীজ দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকার বিএডিসির মাধ্যমে সরবরাহ করে। কিন্তু বিএডিসির এবারে আগের মতো বীজ সংগ্রহ করবে না বলে তারা জানিয়েছেন ।

তিনি দাবি করেন, বিএডিসি এবং বিভিন্ন ব্যাংক যদি আমাদের আরো বেশি সহায়তা করে তাহলে ফরিদপুর অঞ্চলের মানুষ আরো বেশি বীজ উৎপাদন করতে পারবে। এতে সরকারকে অন্যদেশ থেকে পেঁয়াজ বীজ আমদানিতে নির্ভর করতে হতো না। গোবিন্দুপুর গ্রামে আরেক পেঁয়াজবীজ চাষি হাবিবুরর রহমান বলেন, আমাগো আবহাওয়া বীজ উৎপাদনে জন্য খুবই উপযোগী। এই বছরে জমিতে যে ফলন দেখছি তাতে বাম্পার উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার জানান, ফরিদপুরের পেঁয়াজের বীজের খ্যাতি দেশব্যাপী। এই অঞ্চলের চাষিরা এই বীজকে কালো সোনা হিসাবে তুলেনা করেন। কারন এই বীজের চাষ করে অনেক বেকার যুবক তাদের বেকারত্ব দূর করে এখন স্বাবলম্বী হয়েছে।

ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক উম্মে সালমা তানজিয়া পেঁয়াজ বীজ প্রসঙ্গে বলেন, ফরিদপুর অঞ্চলের কালো সোনা খ্যাত পেঁয়াজ বীজ দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনের বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। তিনি জানান, আবহাওয়া ভাল থাকলে এবারও জেলায় বাম্পার ফলন হবে পেঁয়াজ বীজের। তিনি জেলার বেকার যুবকদের আরো বেশি করে পেঁয়াজ বীজের চাষের আগ্রহী হওয়ার জন্য আহবান জানান।

(ঢাকাটাইমস/০৯মার্চ/প্রতিনিধি/ ইএস)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :