খালেদার জামিন চার যুক্তিতে
বয়স, বিচারিক আদালতে মামলা চলাকালে জামিনে থাকা, তুলনামূলক কম সাজা এবং উচ্চ আদালতে মামলার নথি এলেও পেপার বুক তৈরি না হওয়ায় জামিন পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক আখতারুজ্জামান জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা জরিমানা করেন। সেই দিন থেকেই তিনি কারাগারে বন্দী।
বিচারিক আদালতে রায়ের ১১ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের অনুলিপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। পরদিন উচ্চ আদালতে আপিল করেন তারা। ২২ ফেব্রুয়ারি সে আবেদনের শুনানিতে আপিল গৃহীত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি হয় জামিন আবেদনের শুনানি। তবে মামলার নথিপত্র না দেখে জামিনের বিষয়ে আদেশ দেয়ার কথা জানান হাইকোর্টের দুই বিচারপতি ইনায়েতুর রহিম এবং সহিদুল করিম।
১১ মার্চ নথিপত্র আসার পরদিন খালেদা জিয়াকে চার মাসের জন্য জামিন দেয়ার কথা জানান দুই বিচারপতি। অবশ্য এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার কথা জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ এবং মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে করা জামিন আবেদনে মোট ৪৪টি যুক্তি উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত খালেদা জিয়ার ৭৩ বছর বয়স, বিচার চলাকালে পুরোটা সময় তার জামিনে থাকা, পাঁচ বছরর সাজার বিষয়টিই প্রাধান্য পায়।
হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদা জিয়াকে জামিন দেয়ার পাশাপাশ চার মাসের মধ্যে এ মামলার পেপারবুক তৈরিরও নির্দেশ দিয়েছে। পেপারবুক প্রস্তুত হলে খালেদা জিয়া বা দুদক যে কোনো পক্ষ শুনানির জন্য আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে বলেও জানায় হাইকোর্ট বেঞ্চ।
বেলা ২টা ১৪ মিনিটের দিকে দুই বিচারক এজলাসে আসন গ্রহণ করেন। বেলা আড়াইটার দিকে আদালত জামিনের আদেশ দেন।
খালেদা জিয়ার পক্ষে আদালতে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন, দুদকের পক্ষে খুরশিদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
আদালত জামিনের আদেশ দেয়ায় খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা মঙ্গলবারের মধ্যেই তাদের মক্কেলের মুক্তির আশা করছেন। তবে রাষ্ট্রপক্ষ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন মঙ্গলবার চেম্বার জজে আপিল করবে বলে জানিয়েছে। এই আপিল গৃহীত হলে খলেদা জিয়ার জামিনে মুক্তির বিষয়টি আবার ঝুলে যেতে পারে।
আদালত ছিল কানায় কানায় পূর্ণ
খালেদা জিয়ার জামিনের বিষয়ে আদেশ দেয়া হতে পারে আজ-এটা জানা ছিল আগেই। আদালতের কার্যক্রম শুরুর আগেই খালেদা জিয়ার পক্ষের আইনজীবী এবং গণমাধ্যম কর্মীরা কক্ষে ঢুকেন। ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরাও।
আদালত কক্ষের ভেতরে জায়গা না হওয়ায় আরও বিপুল পরিমাণ লোক বারান্দায়ও অপেক্ষা করে।
আদালত জামিনের আদেশ দেয়ার পর বিএনপির আইনজীবী এবং দলীয় নেতা-কর্মীরা উল্লসিত হন।
(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/এমএবি/ডব্লিউবি)