বিশ্বের ভয়াবহ যত বিমানবন্দর

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৬:৫৫ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৭:০৯

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

গতকাল নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বিমান বিধ্বস্তে নিহত হয়েছেন ৪৯ জন। মারাত্মক আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২২ জন। এ দুর্ঘটনার পর উঠে এসেছে এ বিমানবন্দরে বিমান ওঠানামার ভয়ংকর সব তথ্য। বিশ্বের এমন সব বিমানবন্দর রয়েছে যেগুলো বিমান ওঠানামা করাতে গেলে পাইলটকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিতে হয়। তারপরও থেকে যায় অসংখ্য ঝুঁকি।

ইন্টারনেট ঘেঁটে বিশ্বের এমন কিছু বিমানবন্দরের তথ্য ঢাকাটাইমসের পাঠকদের জন্য নিচে তুলে দেয়া হলো-

ম্যাটেকেইন এয়ার স্ট্রিপ, আফ্রিকা

রানওয়েতে খানিক দূর গিয়ে তারপর আস্তে আস্তে আকাশে ওড়ে বিমান। পাইলটরা রানওয়েতে নির্দিষ্ট দূরত্বের চেয়েও অনেক সময় বিমানকে এগিয়ে নিয়ে তারপর আকাশে ওড়েন। কিন্তু এ বিমানবন্দরে এমন কাজ মোটেই সম্ভব নয়। এমনকি সম্পূর্ণরূপে খেয়াল রাখলেও থাকে দুর্ঘটনারেআশঙ্কা। 

সি আইস রানওয়ে, অ্যান্টার্কটিকা

বিমানবন্দর মানেই পিচঢালা মসৃণ রানওয়ে। কিন্তু অ্যান্টার্কটিকার এ বিমানবন্দরে এর কিছুই নেই। এখানে পুরো বিমানবন্দরটি বরফের ওপর। আর রানওয়েও বরফের। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি ভারী বিমান বা চাপ দিলেই ভেঙে যেতে পারে বরফখণ্ড। তার চেয়েও বড় কথা, পিচ্ছিল বরফের উপরেই ল্যান্ড করতে হয় বিমানকে।

ব্যাররা, স্কটল্যান্ড

রানওয়ের পাশে সমুদ্র। প্রাকৃতিক এ বিমানবন্দরটি দেখতে খুব সুন্দর হলেও এখানে বিমান অবতরণ করানো অত্যন্ত ভয়ংকর ও বিপজ্জনক। রানওয়েটি সমুদ্রতীরে অবস্থিত। এখানে তখনই বিমান নামানো হয় যখন ভাটার সময় সমু্দ্রের পানি কিছুটা নিচে নেমে যায়।

প্রিন্সেস জুলিয়ানা এয়ারপোর্ট, ক্যারিবিয়ান

ক্যারিবীয় দ্বীপ সেন্টমার্টিনের সৈকতের পাশে অবস্থিত এ বিমানবন্দর। সৈকতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের একেবারে মাথার ওপর দিয়ে রানওয়েতে বিমান নামাতে হয় পাইলটকে। আর এতে সৈকতে থাকা পর্যটকরা আনন্দ পেলেও রয়েছে ভয়াবহ বিপদের শঙ্কা।

কঙ্গোনহাস, সাও পাওলো, ব্রাজিল

সাধারণত বিমানবন্দর থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত উঁচু ভবন করতে দেয়া হয় না। কিন্তু ব্রাজিলের এ বিমানবন্দরের চারপাশে রয়েছে উঁচু উঁচু ভবন। আর এ জন্য এখানে বিমান অবতরণের ক্ষেত্রে বিমানকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রানওয়েতে নামাতে হয়। এ কারণে বিশ্বের বিপজ্জনক বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে অন্যতম এটি।

কোউরকেভ্যাল, ফ্রান্স

ফ্রান্সের আল্পস পর্বতমালার ১ হাজার ৭২২ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এ বিমানবন্দরটি। আর এটির রানওয়েও পর্বতের শেষে এসে শেষ হয়েছে। ঢেউয়ের মতো ঢালু রানওয়েতে বিমান নামাতে গেলে অত্যন্ত অভিজ্ঞ হতে হয় পাইলটকে। একটু বেখায়াল হলেই ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।

ফাঞ্চাল, ম্যাডেরিয়া

পাহাড়ের পাদদেশে সমুদ্রের পাশে অসংখ্য পিলারের ওপর তৈরি এ বিমানবন্দরের রানওয়ে। বিমান অবতরণে অত্যন্ত দক্ষ না হলে দুর্ঘটনা ঘটা খুব সহজ। আর এর রানওয়ের দূরত্বও অত্যন্ত অল্প।

তেনজিং-হিলারি, নেপাল

৯ হাজার ফুট উচ্চতায় হিমালয়ের একটি পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে এই বিমানবন্দর। সবচেয়ে ভয়ানক কথা, একটি বিমানবন্দরের রানওয়ে যতটুকু হওয়া দরকার তার মাত্র দশ ভাগের এক ভাগ জায়গা রয়েছে এই বিমানবন্দরে।

সাবা আইল্যান্ড এয়ারপোর্ট, ক্যারিবিয়ান

হানিমুনের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় এই স্থানটির একটি মাত্র সমস্যা- বিমানবন্দরের রানওয়ে। বিশ্বের সবচেয়ে ছোট এই রানওয়ের তিন পাশে সমুদ্র এবং এক পাশে পাহাড়।

কাই তাক এয়ারপোর্ট, হংকং

শহরের পাশে সমুদ্রের মধ্যে খুব বিপজ্জনকভাবে তৈরি এ বিমানবন্দর। এক জরিপে বিশ্বের ষষ্ঠ বিপজ্জনক বিমানবন্দর নির্বাচন করা হয়েছিল কাই তাককে। এ জন্য বিংশ শতাব্দীর শেষ দিকে এ বিমানবন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

ত্রিভুবন এয়ারপোর্ট, নেপাল

সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৪ হাজার ৪০০ ফুট উচ্চতার এ বিমানবন্দরের চারপাশে উঁচু পাহাড়। এর প্রধান বাধা একটি বিশাল পাহাড়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ৭০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত পাহাড়টি ত্রিভুবন থেকে নয় মাইল দূরে। এ জন্য এর রানওয়েতে কোনো উড়োজাহাজই সোজা অবতরণ করতে পারে না। ওই পাহাড় পেরোনোর পরপরই দ্রুত উড়োজাহাজ অবতরণ করাতে হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/একে/মোআ)