চোখের নীরব ঘাতক গ্লুকোমা সপ্তাহ শুরু
আজ থেকে শুরু হয়েছে পাঁচ দিনব্যাপী গ্লুকোমা সপ্তাহ ২০১৮। চলবে আগামী ১৮ মার্চ পর্যন্ত। গ্লুকোমা এক ধরনের চোখের উচ্চচাপ জনিত রোগ। এই রোগ চোখের নীরব ঘাতক হিসাবেও পরিচিত। চোখের উচ্চ প্রেসারকে অকুলার হাইপার টেনশন বলে। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক চোখের চাপ ১১-২১ মিমি. মার্কারির চেয়ে বেশি হলেই অকুলার-হাইপার টেনশন বলে। যদিও অপটিক ¯œায়ু বা দৃষ্টি পরীধি (ভিজ্যুয়াল ফিল্ড) এর কোনো পরিবর্তন নাও হতে পারে। তবে যখনই অপটিক ¯œায়ু বা ভিজ্যুয়াল ফিল্ড এর ক্ষতি হয় এবং চোখের উচ্চ প্রেসার থাকে তাকে গ্লুকোমা বলে।
গ্লুকোমা কেন হয়?
চোখের অবস্থান ঠিক রাখার জন্য সিলিয়ারি এপিথিয়াম থেকে যদি পানি জাতীয় প্রত্যক্ষ নিঃসরণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয় এবং পরোক্ষ নিঃসরণ ২০% স্বাভাবিক। যদি কোনো কারণে (ওষুধ দ্বারা) এর চেয়ে কম হয় তাহলে গ্লুকোমা হয়।
যদি ট্রাবিকুলাম, কর্নিও স্কে¬রাল মেসওয়ার্ক, স্মেস ক্যানাল প্রভৃতি কোনো পথে প্রতিবন্ধকতা হয় তাহলে গ্লুকোমা হয়।
গ্লুকোমা আছে কি না কিভাবে জানা যায়?
চোখের প্রেসার যন্ত্র টনোমিটার দিয়ে। ১১-২১ মি. মি. এর বেশি হলে গ্লুকোমা অফথালমোসকোপ দিয়ে অপটিক ¯œায়ুর পরিবর্তন হয়েছে কি না দেখতে হবে।
দৃষ্টি পরীধি বা ভিজ্যুয়াল ফিল্ড দেখার যন্ত্র পেরিমিটার/এনালাইসার (হামফ্রে বা অক্টোপাস দিয়ে)।
চোখের কোণ সরু কি-না দেখে।
চোখের দৃষ্টিশক্তির লক্ষণগুসমূহ আলোচনা।
আলোর পার্শ্বে রংধনুর মত দেখা।
চোখে ব্যথা হওয়া।
মাথা ব্যথা ও মাথা ঘোরা।
চোখ লাল হওয়া/ঝাপসা দৃষ্টি।
চোখ দিয়ে পানি পড়া।
চোখে ঝাপসা দেখা।
বমি হওয়া
দৃষ্টি পরীধি কমে যাওয়া (ভিজ্যুয়াল ফিল্ড)
মনি বড় হওয়া (মিড ডাইলেটেড পিউপিল)
শেষের দিকে চোখ সম্পূর্ণ অন্ধ হয়ে যাওয়া।
সবচেয়ে মারাত্মক হলো কখনো কোনো লক্ষণ ছাড়াই চোখের প্রেসারে মানুষ ঘুণে ধরার মত অন্ধত্ববরণ করে।
চোখের উচ্চ চাপের প্রকারভেদ বা গ্লুকোমার প্রকারভেদ:
জন্মগত: গ্লুকোমা বা বুথথালমোস।
একোয়ার্ড বা জন্ম পরবর্তী সংশ্লিষ্টতা।
প্রাইমারি : (ক) চোখের কোণ ছোট হওয়া। (খ) কোণ থাকা সিম্পল গ্লুকোমা বা ক্রনিক গ্লুকোমা)সেকেন্ডারি: চোখের অন্য রোগের কারণে-ইউভিয়াইটিস, কর্নিয়ায় ক্ষত, চোখের টিউমার, ভিট্রাসে বা এ্যাসিতে রক্ত জমা, ছানি রোগের অপারেশন না করা।
চিকিৎসা
চোখের ওষুধ: চক্ষু বিশেষজ্ঞের পরামর্শমতো- পাইলো ড্রপ, টিমো ড্রপ, ল্যাটোনো প্রস্ট, প্রস্টাগামিন, আলফাগান, বেটাগান।
খাওয়ার বড়ি: এসিমক্স, ইলেকট্রো-কে।
ট্রাবিকুলোপ্লাস্টি: লেজার।
অস্ত্রপচার: আইরিশে ছিদ্র করা, ট্রাবিকুলেক্টমি, ট্রাবিকুলেক্টটিম, সিজ বা ফিল্টারিং অপারেশন।
সেকেন্ডরি গ্লুকোমার কারণসমূহ দূর করা। যেমন ছানি রোগ দীর্ঘদিন অপারেশন না করালে, ছানি অপারেশনের পরে ইউভিয়াটিস বা কর্নিয়ার ক্ষত চিকিৎসা।
অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ
প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (প্রশাসন)
অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান
কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়।
মোবাইল নম্বর-০১৭১১ ৫৪ ২৪ ৬২ঢাকাটাইমস/১৩ মার্চ/এএ