৮০-তে পা দিলেন অলি আহমেদ

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ মার্চ ২০১৮, ১৮:৪৮

৮০ বছরে পা দিলেন লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অবঃ) অলি আহমদ বীর বিক্রম। ১৯৩৯ সালের ১৩ মার্চ তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

সাবেক এই মন্ত্রী ১৯৭১ সালে জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহে অংশ নেন। তিনি জিয়াউর রহমানের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে সাহসিকতার জন্য তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করা হয়।

১৯৭১ সালে অলি আহমেদ কর্মরত ছিলেন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে। এর অবস্থান ছিল চট্টগ্রামের ষোলশহরে। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মুক্তিযুদ্ধে। প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে ভারতে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার পর নিয়মিত মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীনে যুদ্ধ করেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্নেল পদে উন্নীত হয়ে অবসর নেন। পরে রাজনীতিতে যোগ দেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির (বাংলাদেশ)কর্ণধর।

জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে তিনি সেনাবাহিনীতে তার চাকুরী ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দান করেন। তখন তার আরো নয়বছর চাকুরী ছিল। এরশাদ সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

১৯৯১ সালে বিএনপি সরকার গঠন করলে তিনি যোগাযোগ মন্ত্রী হন। যমুনা সেতুর কাজ তার সময়েই শুরু হয়।

কর্নেল অলি আহমেদ বিএনপির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। বিএনপি সরকারের শেষদিকে এসে তিনি দুর্নীতি ও দুঃশাসনের অভিযোগ এনে দল থেকে পদত্যাগ করেন। বিএনপির ডাকসাইটে ও প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং সাংসদদের নিয়ে তিনি গঠন করেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পাটি (এলডিপি)।

পরবর্তীতে সাবেক রাষ্ট্রপতি ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন বিকল্প ধারা বাংলাদেশ একীভূত হয় এলডিপিতে। এরপর বদরুদ্দোজা চৌধুরী চেয়ারম্যান এবং কর্নেল অলি কো-চেয়ারম্যান হন। কিছুদিন যেতে না যেতে তাদের মধ্যে ফাটল তৈরি হয়। তারা পৃথক হয়ে যান। সাবেক মন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহমদ-এর নেতৃত্বাধীন এলডিপি বর্তমানে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ২০০৮ অনুযায়ী লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ( এলডিপি) বাংলাদেশের একটি রাজনৈতিক দল।

জানা গেছে, সেইভাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কখনো জন্মদিন পালন করেন না কর্নেল অলি আহমেদ।

ঢাকাটাইমসের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানো হয় অলি আহমদকে। এ সময় ঢাকাটাইমসকে কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘আসলে সেইভাব কখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জন্মদিন পালন করা হয় না। বাসায় দোয়া দরুদ পরে সময় কাটে। তারপরও নাতী-নাতনীরা ফুল নিয়ে আসে।

৮০ বছরে এসে নিজের অনুভুতি কেমন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘একজন তরুণ ক্যাপ্টেন হিসেবে ৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম প্রতিবাদ করেছিলাম। কিন্তু বেঁচে থাকবো এটা কখনো চিন্তাও করিনি। তবে যে বুক ভরা আশা নিয়ে পাকিস্তানিদের হাত থেকে বাংলাদেশকে স্বাধীন করলাম ৪৭ বছর পরে সেই দেশের জন্য দুঃখ হয়।

তিনি বলেন,‘মানুষের জন্য দুঃখ হয়। মনে হয় দেশের মানুষ বোবা এবং কানে শুনে না। কারণ আমাদের কারো ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে নিরাপত্তা নেই। স্বাভাবিকভাবে জীবন যাপনের নিরাপত্তা নেই। সুশাসনের অভাব। ন্যায় বিচার থেকে জাতি বঞ্ছিত। বিচার ব্যবস্থা বিধ্বস্ত। একদলীয় শাসন। যত্রতত্র লুটপাট। বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে। বড় বড় দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই। মনে হয় সবকিছু তাদের নিয়ন্ত্রণ।

অলি আহমদ বলেন, ‘শুধু গণতন্ত্র না থাকার কারণে,ভোটের অধিকার না থাকার কারণে, জবাবদিহিতা না থাকার কারণে এমনটা হচ্ছে। তাই সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জনগণের সরকার গঠিত হলে সেটা হবে জনগণের সরকার।’

তিনি বলেন, ‘সবকিছুর শেষ আছে। শেষটা যেন ধ্বংসাত্মক না হয়। বরং সুখকর হলে দেশের জন্য মঙ্গল।’

আগামী দিনের প্রত্যাশার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রহীন দেশে প্রত্যাশার কোনো মূল্য নেই। ১৯৭০ সালের সঙ্গে তুলনা করলে গণতান্ত্রিক পন্থায় যতটুকু এগিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ততটুকু যেতে পারিনি। উন্নয়ন হচ্ছে কিন্তু সেটা বড়লোকদের পকেটে সীমাবদ্ধ। গ্রামের অর্থনীতি সচল না হলে প্রকৃত উন্নয়ন হবে না।’

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/বিইউ/এমএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :