রুটি কলার রাজনীতি...

কাজী মোখতার হোসাইন
 | প্রকাশিত : ১৫ মার্চ ২০১৮, ১৫:৫০

বিএনপির অন্যান্য কর্মসূচির সঙ্গে ছাত্রদলের কর্মসূচি থাকে প্রায় প্রতিদিন। ১০টায় কর্মসূচি থাকলে নাস্তা খাওয়ার সময় হয় না, সময় হলেও দুপুরে কি খাবে কিভাবে খাবে এই চিন্তায় কর্মসূচি পালনের ব্যস্ততায় অনেকের খাওয়া হয় না। সিভিল কর্মসূচি হলে এর ফাঁকেই বড়ভাইদের সঙ্গে রাস্তার পাশের টি স্টলে পাঁচ টাকা দামের দুধ চায়ে ভিজিয়ে তিন টাকা দামের এক পিস বিস্কুট। অথবা ওই ভাইয়ের পকেট যদি একটু ভারি হয় সর্বোচ্চ পাঁচ টাকার কলা পাঁচ টাকার রুটি আর এক কাপ লাল চা। আর কঠিন কর্মসূচি (বিক্ষোভ ও অন্যান্য) হলে তো খাওয়াই হয় না।

অনেক সময় অনেকে ওই রুটি কলাতেই দিন পার করে দেয়। দুপুরে খুঁজে খুঁজে সাধারণ মানের হোটেল বের করে একসঙ্গে খেতে বসলে ভর্তা ভাজি আর ডাল দিয়ে খায় তাও আবার ভাগাভাগি করে। ছোট ভাইয়েরা বলে ‘ভাই ভর্তা ভাজি আর ডালই মজা আসেন ভাগ করে খাই’। খাওয়ার ইচ্ছে হলেও বড় ভাইদের করুণ অবস্থা বুঝে ওরা দামি খাবার অর্ডার করতে দেয় না। দুপুরে কর্মসূচি থাকলে অনেক সময়তো খাওয়ার সময়ই হয় না।

আবার রাতে মেস বাসায় ফিরে কম বেতনের বুয়ার হাতের একগুঁয়েমি রান্না। নিজেরা সময় থাকলে রান্না করে খাওয়া নতুবা না খেয়ে সামান্য বিস্কুট (থাকলে) খেয়ে রাত পার করে দেয়া। যারা আবার বড় ভাই ছাড়া রাজনীতি করায় অভ্যস্ত তাদের অবস্থা আরো খারাপ।

ওদের অব্যক্ত মলিন কিন্তু অভ্যস্ত আত্মবিশ্বাসী চেহারার দিকে তাকিয়ে বুকটা হা হা করে উঠে আবার গর্বে ভরে উঠে। এরা এক একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকার নামিদামি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স মাস্টার্স করা ছাত্র হয়েও রাজনীতির বেড়াজালে এক অতি সাধারণ জীবনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে। এরা অনায়াসে এসপি ম্যজিস্ট্রেট হওয়া বাদ দিয়ে জাতীয়তাবাদের সঙ্গী হয়েছে।

এদের কাছে ভালোবাসা দিবস, ফাল্গুন, বৈশাখসহ সব অনুষ্ঠান এক মানসিক যন্ত্রণা। পুলিশি হয়রানির কারণে এরা এখন ভালোবাসা দিবসে বান্ধবীদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া বাদ দিয়েছে। অন্যান্য আনুষ্ঠানিক দিবসগুলোতে কর্মসূচি না থাকলে গোমড়ামুখে পুলিশের ভয়ে তটস্থ হয়ে মেসে সাধারণ খাবারে দিন কাটায়। নিশ্চিত গ্রেপ্তার জেনেও পরের দিন আবার কর্মসূচিতে হাজির হয়। এরা স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে পোড়তে পোড়তে জাতীয়তাবাদের খাঁটি সোনায় পরিণত হওয়া এক একজন অভিজ্ঞ সৈনিক।

স্যালুট হাজার হাজার ছাত্রদলের সৈনিকদের। এই অতি সাধারণ জীবনে অভ্যস্ত অভিজ্ঞ সৈনিকদের দ্বারা বিজয় আসতে বাধ্য এবং অবশ্যই একদিন জাতীয়তাবাদের বিজয় আসবে ইনশাআল্লাহ।

লেখক: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফেসবুক কর্নার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :