শিক্ষার্থীদের জেরায় ঢাবি প্রক্টর, পদত্যাগ দাবি
কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা, নেতাদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানীর ‘নির্লিপ্ততায়’ ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা তাকে পদত্যাগের দাবি জানিয়েছে।
গত শনিবার কোটা আন্দোলনের বেশ কয়েকজন নেতাকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পেটায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে দুই দিন পরের কর্মসূচিতে পেটানো হয় আরও কয়েকজনকে। অথচ প্রক্টর দাবি করেন তিনি কিছুই জানেন না।
এর মধ্যে কোটা আন্দোরনের নেতা রাশেদ খাঁনকে গ্রেপ্তারের পর পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, কারাগারে পাঠানো হয়েছে ফারুক হাসানকে।
মঙ্গলবার নিপীড়নবিরোধী শিক্ষার্থীবৃন্দের ব্যানারে সমাবেশ শেষ করে শিক্ষার্থীরা দুপুর পৌনে একটার দিকে প্রক্টর গোলাম রব্বানীর কক্ষের সামনে অবস্থান নেয়। তারা প্রক্টরের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা কিছু প্রশ্নের জবাব জানতে চান।
প্রশ্নগুলো ছিল: ১. হামলার ব্যাপারে আপনি বলেছেন, আপনি কিছু জানেন না। পদাধিকার বলে আপনি কি মনে করেন এটা দায়িত্বশীল আচরণ?
২. এ ঘটনায় কোন তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে কি না?
৩. ১৫ ও ২৩ জানুয়ারি ছাত্রদের ওপর হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, তার কি অবস্থা?
৪. আবার যদি হামলা হয় এবং আমাদের নিরাপত্তা দিতে আপনি যদি ব্যর্থ হন। তাহলে কি পদত্যাগ করবেন?
৫. আর কতবার হামলা হলে আপনি নিজেকে ব্যর্থ বলে দাবি করবেন?
প্রক্টর পাঁচ মিনিট পর প্রশ্নের উত্তর দেয়ার কথা জানান। কিন্তু ২০ মিনিট গেলেও তিনি আসেননি। এরপর প্রক্টরের পদত্যাগ চেয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা।
বেলা একটা ২০ মিনিটের দিকে প্রক্টর শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন। তিনি এ সময় কিছু প্রশ্নের জবাব দিতে থাকেন।
প্রক্টর বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা যেমন দেয়া দরকার সেভাবে আছে। তবে এর মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে সেই বিষয়ে যদি লিখিতভাবে কোন অভিযোগ পাই তাহলে আমরা বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেব।’
‘১৫ ও ২৩ জানুয়ারির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ দাখিলকারীরা স্বাক্ষর দিতে না আসায় তদন্তের কাজে বিলম্ব হচ্ছে।’
কিন্তু প্রক্টরের এই জবাব সন্তুষ্ট করতে পারছিল না শিক্ষার্থীদেরকে। এ সময় প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান উঠে।
‘শিক্ষার্থীদের উপর হামলার কথা না জানা প্রক্টর চাই না চাই না’, ‘যে প্রক্টর হামলা জানে না, সে প্রক্টর চাই না’- এমন অনেক স্লোগান চলতে থাকে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাদ দাবি করতে থাকেন তারা।
এক পর্যায়ে প্রক্টর তার কার্যালয় ছেড়ে চলে যান। আর এ সময় এক ছাত্রী চিৎকার করে বলেন, ‘স্যার, যারা থানায় আটক আছে তাদের কী হবে?’।
গত ১৫ জানুয়ারি সাত কলেজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত কলেজের অধিভুক্ত বাতিলের দাবিতে কর্মসূচিতে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠে। আর ২৩ জানুয়ারি আন্দোলনকারীদের বেদম পিটুনি দেয় ছাত্রলীগ। সেই ঘটনারও সুরাহা হয়নি এখনও।
ঢাকাটাইমস/০৩জুলাই/এনএইচএস/ডব্লিউবি