‘ভোট এলে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে না’
দেশের অর্থনীতি পুরোপুরি স্থিতিশীল জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেছেন, নির্বাচন অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব ফেলবে না।
২০১৪ সালে বিএনপি-জামায়াত জোটের ভোট বর্জন আর নির্বাচনের আগে ও পরে সহিংসতায় দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতার আশঙ্কা করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায়, প্রবৃদ্ধি এবং রাজস্ব আদায়, সবই ছিল প্রায় স্বাভাবিক।
আগামী জাতীয় নির্বাচনেও বিএনপির অংশগ্রহণ এখনও নিশ্চিত হয়নি। আর তারা ভোটে না এলে ২০১৩ এবং ২০১৪ সালের জানুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত পরিস্থিতি আবার সৃষ্টি হয় কি না, সে নিয়ে শঙ্কার কথা বলাবলি হচ্ছে।
বুধবার সন্ধ্যায় দুই দিনব্যাপী বাজেট পরবর্তী প্রশিক্ষণ কর্মশালায় কথা বলছিলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। এ সময় তিনি বলেন, ‘সরকারের যে স্থিতিশীলতা, ইলেকশন আসছে বা না আসছে, এতে করে কিন্তু আমাদের ইকোনমিক এক্টিভিটিসে প্রভাব পড়ে নাই এবং পড়বে না।
‘আমাদের জীবন যাত্রা, ইকোনোমি, রেভিনিউ কালেকশন এগুলো স্বাভাবিক ভাবে চলবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
চলতি অর্থবছরের বাজেটকে বর্তমান সরকারের শেষ বাজেট উল্লেখ করে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখানে আমরা এমন কিছু এখানে নিয়ে আসিনি সাধারণ মানুষের ক্ষতি হয় বা সমালোচিত হয়।’
‘আমি আগামী বছরের বাজেটে আরও কিছু বিষয় এক্সপেরিমেন্ট করার চেষ্টা করব, যেগুলোতে ভালো ফল আসতে পারে। আমাদের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এখন থেকে লক্ষ্য থাকবে যে কোন পলিসি প্রোগ্রাম যেন একটু দীর্ঘমেয়াদী চলে।’
করমুক্ত ব্যক্তি আয়ের সীমানা না বাড়ানোর পক্ষে যুক্তি দিয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের করমুক্ত আয়ের সীমা সেটা ভালো আছে। এটাকে আর বাড়িয়ে যারা এখন কর দিচ্ছে স্মতস্ফুর্তভাবে তাদেরকে আমরা আয়কর নেটের বাইরে নিতে চাই না। তবে প্রতিবন্ধী ছেলে মেয়ে যাদের আছে বা প্রতিবন্ধী করদাতাদের সুযোগ সুবিধা ভালো আছে।’
‘করপোরেট ট্যাক্স নিয়ে অনেকের সুপারিশ ছিল কমানোর জন্য, সেটা আমরা কমিয়েছি। তবে ট্যোবাকো ও মোবাইল ফোন কোম্পানির কর আমরা কমাইনি। কারণ দেশের সব থেকে বেশি আয়কর দাতা তারা।’
‘যদি ভবিষ্যতে করপোরেট ট্যাক্স আরও কমানোর চিন্তা হয় তবে আমরা এসব কোম্পানি বাদে অন্যদের হাত দেওয়া হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করপোরেট ট্যাক্স আমাদের চেয়ে ধীর গতিতে কমানো হয়।’
‘আমরা ভ্যাটের যেগুলো বাড়িয়েছি বা কমিয়েছি সব কিছুর মধ্যে দৃষ্টিভঙ্গী ছিল ব্যবসায়িক মনোভাব, যাতে ব্যবসা ভালো হয়। কোনো কোনো জায়গায় প্রটেকশন কোন কোন জায়গায় ব্যবসায়ীরা যাতে ভালো ভাবে ব্যবসা করতে পারে। ‘র’ ম্যাটেরিয়ালস (কাঁচামাল) এর দাম কমিয়েছি যাতে বিনিয়োগ বাড়ে প্রডাকশন বাড়ে। ‘র’ ম্যাটেরিয়ালস ইনপোর্ট আমাদের এক্সপোর্ট বাড়ে, এতে রেভিনিউ বাড়ে।’
বিদায়ী অর্থবছরে রাজস্ব আয় আগের বছরের তুলনায় সাড়ে ১৯ শতাংশ বেশি ছিল বলেও জানান এনবিআর চেয়ারম্যান। বলেন, ‘ট্রেজারিতে যে টাকা জমা হয়েছে, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলা হবে, বাড়িয়ে বলা হবে না। রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হওয়া অর্থই প্রকৃত রাজস্ব।’
ঢাকাটাইমস/০৪জুলাই/এসএস/ডব্লিউবি