মেয়র খালেকের শপথ, দায়িত্ব গ্রহণ সেপ্টেম্বরের শেষে

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০১৮, ১২:৩৭ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৪০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের ২০ দিন পর মেয়র হিসেবে শপথ নিলেন তালুকদার আবদুল খালেক। তাকে শপথ পড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই শপথ অনুষ্ঠান হয়। অনুষ্ঠানে নবনির্বাচিত কাউন্সিলরদের শপথ পড়ান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

গত ১৫ মের ভোটে দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান মহানগরে ভোট হয়। এতে মেয়র ছাড়াও ৩১ জন সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং ১০ জন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরকে নির্বাচিত করে খুলনাবাসী।

অবশ্য শপথ গ্রহণ করলেও খালেকে মেয়রের পদে বসতে আরও দেড় মাসেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হবে।

বর্তমান করপোরেশনের পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর। মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুজ্জামান মনির মেয়াদ সে পর্যন্তই। ফলে খালেককে দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে এর পরদিন। অর্থাৎ ২৬ সেপ্টেম্বর করপোরেশনের নব নির্বাচিত সদস্যরা দায়িত্ব বুঝে নেবে।

আবার খালেককে দায়িত্ব নেয়ার পর ১০ মাস চলতে হবে বিএনপির মেয়র মনি ঘোষিত বাজেট দিয়েই। আর এতে খালেকের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে প্রথম বছর কিছুটা ঝামেলায় পড়তে হবে।

এবার ভোটের আগে খুলনার উন্নয়নে খালেক ৩১ দফা প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছিলেন খালেক। কিন্তু করপোরেশনের ঘোষিত বাজেটে এর পরিকল্পনা না থাকলে শুরুতেই পিছিয়ে পড়বেন তিনি। অবশ্য খালেক বলছেন, ঘোষিত বাজেট পরিবর্তনের সুযোগ আছে। পরে সম্পূরক বাজেট দিলেই চলবে। আর সাবেক মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা আছে।

আর আগামীতে কী কী করতে চান, সেসব বিষয়ে আগাম পরিকল্পনাও করা আছে বলে জানান আওয়ামী লীগের নেতারা।

মেয়র হিসেবে খালেক ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালে খুলনায় দৃশ্যমান উন্নয়ন করেছিলেন। আবারও জনপ্রতিনিধি হিসেবে খুলনাবাসীর উন্নয়নে কাজ করতে তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এ সময় খুলনায় বিশুদ্ধ সুপেয় পানির সংকটসহ নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে সেগুলোর সমাধানে সরকারের নানা চেষ্টা ও উদ্যোগের বিষয় তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।  এছাড়া যেসব উন্নয়ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে সেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমরা প্রতিটি গ্রামেই শহরের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করতে চাই। যেন গ্রামবাসীও শহরের সুবিধা পায়।’

এজন্য নতুন জনপ্রতিনিধিদের সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করারও নির্দেশ দেন। আর এই সেবার ক্ষেত্রে যেন দলীয় মনোবৃত্তি না থাকে তার ওপরও জোর দেন তিনি। বলেন, তারা ভোট করেছেন দলের থেকে কিন্তু তারা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বিএনপিসহ অন্যান্য দলের কর্মী সমর্থকদেরও জনপ্রতিনিধি। তারা যেন বঞ্চিত না হয়।

জনপ্রতিনিধিরা কে কোনো দল করেন সেটি যেন তাদের কাজে প্রভাব না ফেলে এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা কিন্তু মুখ দেখে কর্মসূচি গ্রহণ করি না। আমরা জনগণের সুষম উন্নয়নের বিশ্বাসী। কাজেই সরকারের পক্ষ থেকে কে কোন দল করলেন সেটা দেখা হবে না। আর আপনারাও সেটা বিবেচনা না করে কাজ করবেন।’

বিভিন্ন দল থেকে কাউন্সিলর পদে জয়ী হওয়ার বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র। এখানে বিভিন্ন দলের প্রতিনিধি আছেন। আপনারা দলমত নির্বিশেষে খুলনার জনগণের জন্য কাজ করবেন।

খুলনা সম্পর্কে শেখ হাসিনা বলেন, খুলনা এক সময় প্রাণবন্দ শহর ছিল। পরে তা মৃত নগরীতে পরিণত হয়। আমাদের চেষ্টায় আবার খুলনার সেই প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। তা যেনো বজায় থাকে।

বক্তব্যের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী খুলনা সিটি কর্পোরেশনের নতুন মেয়র ও কাউন্সিলরদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান।

ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/টিএ/ডব্লিউবি