নিবন্ধন না পেয়ে আইনের সমালোচনায় সাকি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৫ জুলাই ২০১৮, ২০:২৬ | প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০১৮, ২০:১৩

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের শর্ত পূরণ না হওয়ায় আবেদন বাতিলের পর এবার আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সম্বয়নক জোনায়েদ সাকি। তিনি আইনটিকে স্বেচ্ছাচারি বলছেন।

বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশ এই প্রশ্ন তুলেন বামপন্থী এই নেতা।

সাকি বলেন, ‘২০১৫ সালের পর থেকে যেহেতু স্থানীয় নির্বাচনও দলীয় অংশগ্রহণের ভিত্তিতে হচ্ছে, ফলে নিবন্ধন হারিয়ে ফেললে পাঁচ বছর দলীয়ভাবে স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যাবে না। এ আইন চরম স্বেচ্ছাচারি। এই নিবন্ধন আইন দিয়ে সাংবিধানিক অধিকার হরণ করা হচ্ছে।’

জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতির পদ দখল করার পর রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন চালু করেছিলেন। আর ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আবার বিভিন্ন শর্তে দলগুলোকে নিবন্ধনের আওতায় আনা হয়।

একাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গত অক্টোবরে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে নির্বাচন কমিশন। নিবন্ধন পেতে হলে একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি থাকতে হবে। সেই সঙ্গে অন্তত ১০০ উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকতে হবে।

এই গণ বিজ্ঞপ্তির পর মোট ৭৫টি দল নিবন্ধনের আবেদন করেছিল। এর মধ্যে ছিল সাকির গণসংহতি আন্দোলন। কিন্তু যে ৭৩টি দল শর্ত পূরণ করতে পারেনি তার মধ্যে এই দলটিও রয়েছে।

গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী (ভারপ্রাপ্ত) আবুল হাসান রুবেল বলেন, ‘রাজনীতি করা বা সংগঠিত হওয়ার অধিকার ও নির্দিষ্ট মত ও আদর্শের চর্চা করা নাগরিকের সংবিধান সংরক্ষিত অধিকার। সরকার আইন করে এবং নির্বাচন কমিশন আমলাতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সে অধিকারের রাশ টেনে ধরতে চাইছে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমরা কোনভাবেই তা মেনে নিতে পারি না।’

নিবন্ধনের শর্ত লংঘন করায় এরই মধ্যে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলামী দলীয় প্রতীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের অধিকার হারিয়েছে। আর বিএনপি ২০১৪ সালের মতো এবারও জাতীয় নির্বাচন বর্জন করলে তাদেরও নিবন্ধন বতিলের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। কারণ নিবন্ধন আইন অনুযায়ী কোনো দল পরপর দুইবার নির্বাচন বর্জন করলে তার নিবন্ধন থাকবে না।

সাকি বলেন, ‘আইনের শাসন নয় বরং শাসনের আইন জারি করে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে সকল দলকে অনুগত করার চেষ্টা করছে সরকার। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা যেমন গণতান্ত্রিক অধিকার আবার অংশগ্রহণ না করাও একইরকম অধিকার। কিন্তু আমাদের দেশের নির্বাচনী আইন অনুযায়ী একটি দল পর পর দুই বার জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে নিবন্ধন বাতিল হয়ে যাবে।’

রাজশাহী সিটি করপোরেশন গণসংহতি আন্দোলন সমর্থিত প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক দাবি এরও সমালোচনা করা হয় কর্মসূচিতে। সংগঠনটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য তাসলিমা আখতার বলেন, ‘নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য শতকরা এক ভাগ ভোটারের আগাম সমর্থন জমা দিতে হবে কেন? রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণসংহতি আন্দোলনের প্রার্থী মুরাদ মোরশেদকে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করতে হচ্ছে। তাঁকে যারা আগাম সমর্থন দিয়েছেন তাদের অনেকের বাড়িতে ভোর বেলা পুলিশ দিয়ে ভেরিফিকেশনের নামে ভয় দেখানো হয়েছে এবং আমাদের প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। এই অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।’

নির্বাচন কমিশনে স্মারকলিপি, পুলিশের বাধা

সমাবেশ শেষে একটি মিছিল শাহবাগের দিকে যেতে চাইলে তা পুলিশি বাধার মুখে পরে। পরে সমাবেশ সমাপ্ত করে সংগঠনের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে গিয়ে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত পুনঃনিরীক্ষার দাবিতে প্রাধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর একটি স্মারকলিপি জমা দেয়।

স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, গণসংহতি আন্দোলন সব শর্ত পূরণ করলেও তাদেরকে নিবন্ধন দেয়া হয়নি।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, ‘যেহেতু নির্বাচন কমিশনের প্রদর্শিত গঠনতন্ত্রের দুটি ঘাটতিই আমরা যথাবিহিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝেই জমা দিয়েছি, এবং যেহেতু নির্বাচন কমিশন আমাদের অন্য কোন ত্রুটি, ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতার কথা জানায়নি, কাজেই আমরা ধরে নিচ্ছি আমাদের জমা দেয়া দলিলপত্রাদি যথাযথ আছে বলে নির্বাচন কমিশন স্বীকৃতি দিচ্ছে।’

ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/কারই/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :