যৌন হয়রানি: অভিযুক্তদের ধরতে প্রশাসনের তোড়জোড়

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৫ জুলাই ২০১৮, ২১:৫৮

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে আতঙ্কে দিন পার করছে কিশোরী জমজ দুই বোন। পরিবারের লোকের পাহারায় স্কুলে যাচ্ছে তারা।

বৃহস্পতিবার থেকে অভিযুক্তদের ধরতে তৎপর হয়ে উঠেছে জেলা পুলিশ, র‌্যাব ও ডিবি। থানায় মামালা গ্রহণের পরে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেন তাদের পিতা। স্থানীয় গাজীরটেক ইউনিয়নের চরহাজিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী তারা।

বৃহস্পতিবার সকালে যমজ দুই বোনের সাথে কথা বলে ও অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, কয়েক মাস ধরে এলাকার কিছু বখাটে তাদেরকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে উত্যক্ত করে আসছিল। গত শনিবার দুই বোনের একজন তার ভাইয়ের মোটরসাইকেলে চড়ে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটেরা তাকে হাত ধরে টেনে নেয়ার চেষ্টা করে। এসময় তার ভাই রাশেদুল বাধা দিলে ওই ইউনিয়নের বেপারী ডাঙ্গী গ্রামের মিজান, তরিবুর, আকমাল, রাজু, রনি, রাশেদ, ইমরান বেপারী ও আইয়ুব খালাসী তাকে পিটিয়ে আহত করে।

স্থানীয়দের ও পরিবারের সদস্যদের দাবি, বখাটেদের শাস্তি ও নিরাপদে কিশোরী দুইজনের পড়ালেখার সুযোগ করে প্রশাসন।

দুই কিশোরীর মা বলেন, বখাটেদের ভয়ে আমরা ঠিকমত বাড়ির কাজকর্মও করতে পারছি না। আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই।

চরহাজিগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আযাদ আবুল কালাম বলেন, স্কুল পরিচালনা সুষ্ঠু পরিবেশ প্রয়োজন। বখাটের লাগাম এখনই টেনে ধরতে হবে। তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে, এটা প্রত্যাশা করি প্রশাসনের কাছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, ওই বখাটেরা প্রায়ই স্কুলের আশপাশে অনেক অন্যায় কাজ করে থাকে। কেউ ভয়ে তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। কারণ স্থানীয় প্রভাবশালী মাতব্বররা তাদের আশ্রয় দেয়।

এদিকে অভিযুক্তদের সাথে যোগাযোগের সাথে চেষ্টা করে তাদের পাওয়া যায়নি, তবে চর হাজিগঞ্জ বাজারে অভিযুক্ত মিজানের পিতাকে পাওয়া যায়। তিনি তার ছেলেকে নির্দোষ দাবি করে বলেন, মেয়েদেরকে বিরক্ত করায় মিজান উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা করতে গেলে মিজান মেয়ে পক্ষের আক্রমণের শিকার হয়।

চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুন নাহার বলেন, অভিযোগ পেয়ে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করছি। এছাড়া র‌্যাব ও পুলিশ প্রশাসন তৎপর রয়েছে। দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না, সে যতোই ক্ষমতাশালী হোক না কেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে চাই।

এদিকে ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ও অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টদের।

তিনি বলেন, যারাই এই ধরনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

চরভদ্রাসন থানার ওসি রাম প্রসাদ ভক্ত জানান, বুধবার রাতেই নয়জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। ইতিমধ্যে তরিবুর রহমান খালাসিকে গ্রেপ্তার করেছি। অন্যদের ধরতে জোড় তৎপরতা চালানো হচ্ছে।

ফরিদপুর র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রইচ উদ্দিন জানান, ইভটিজিংকারীদের হাত যতো লম্বা থাক না কেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। প্রশাসন কোনো রকম ছাড় দেবে না।

(ঢাকাটাইমস/৫জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :