সংসদের মেয়াদ ১০ বছর চান মুন্নুজান, নাকচ প্রধানমন্ত্রীর
সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছরের বদলে ১০ বছর হোক, এটাই চাওয়া খুলনা থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য বেগম মুন্নুজান সুফিয়ানের। আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভায় সেই প্রস্তাব তিনি তুলেওছিলেন। কিন্তু তাৎক্ষণিক নাকচ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতীয় সংসদে দলের সংসদ সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেন আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের নেতা শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু দিন নির্দেশনা দেন।
এ সময় আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যদের মধ্যে কথা বলেন খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মুন্নুজান সুফিয়ান। এ সময় তিনি সংসদের মেয়াদ দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দেন।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সংসদ সদস্য জানান, মন্নুজানের এই প্রস্তাবের সময় অন্য সংসদ সদস্যরা অস্তত্বিতে পড়েন।
তবে প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সঙ্গে এই প্রস্তাব নাকচ করে দেন। বলেন, সংসদের মেয়াদ বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।
মুন্নুজান আওয়ামী লীগ থেকে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য হন খুলনা-৩ আসন থেকে। ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে শপথ নেয়া মহাজোট সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রী হন তিনি।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের মুখে ভোটে দ্বিতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য হন মন্নুজান। তবে তিনি এবার আর মন্ত্রিসভায় স্থান পাননি।
রাষ্ট্রপতি শাসিত শাসন ব্যবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রপ্রধান প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার বছর হলেও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই নির্বাচিত সরকারের মেয়াদ থাকে পাঁচ বছর। বাংলাদেশেও ১৯৭২ সালের সংবিধানে সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর করা হয়।
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অনুযায়ী সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার শেষ ৯০ দিনের যে কোনোদিন ভোট হবে। তবে সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছরই থাকবে। ওই মেয়াদ শেষেই বসবে নতুন সংসদের অধিবেশন। তবে এই সংশোধনীর আগে সংসদের মেয়াদ পাঁচ বছর পার হলে ভোট হওয়ার বিধান ছিল।
সংবিধানের বিধান অনুযায়ী আগামী অক্টোবর থেকে ভোটের এই ৯০ দিনের ক্ষণ গণনা শুরু হবে। আর ওই মাসেই ভোটের তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
তার তফসিল ঘোষণার তিন মাস আগে দলীয় সংসদ সদস্যদেরকে নিয়ে এই বৈঠকে আগামী নির্বাচন নিয়ে বেশ কিছু দিক নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা।
দশম সংসদ নির্বাচন বিএনপি-জামায়াত জোটের বর্জনের মুখে ‘একতরফা’ হলেও আগামী নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে জানিয়ে সংসদ সদস্যদেরকে সেভাবেই প্রস্তুতি নেয়ার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে মনোনয়ন নিয়ে দলের মধ্যে কোনো অপকৌশল বা অন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদেরকে নিয়ে কটূক্তি না করারও নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।
দশম সংসদের সব সদস্য আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন পাবে না, এটিও জানিয়ে দিতে ভুলেননি প্রধানমন্ত্রী। আর যাকেই মনোনয়ন দেয়া হয়, তার পক্ষেই কাজ করার নির্দেশও দেন তিনি।
ঢাকাটাইমস/০৫জুলাই/টিএ/ডব্লিউবি