জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

বিশ্বমানের চলচ্চিত্র চান প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৮ জুলাই ২০১৮, ২০:৫২ | প্রকাশিত : ০৮ জুলাই ২০১৮, ২০:২৮

অভিনেতা ও কলাকুশলীদের মধ্যে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়ে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য সরকারের পক্ষ থেকে যা যা দরকার, তার সবই করার আশ্বাস দেন তিনি।

রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, যাদের হাতে তিনি পদক দিয়েছেন, তাদেরকে এরকম পুরস্কার তিনি আরও দিতে চান। তারা যেন আরও মনযোগী হয়ে কাজ করেন।

যৌথভাবে তথ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন সংস্থা (বিএফডিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। জাতীয় চলচ্চিত্র বিভাগ নিয়মিত ২৮টি শাখায় পুরস্কার প্রদান করে থাকে। তবে ২০১৬ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২৬টি শাখায় দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে চলচ্চিত্রশিল্পে বিশেষ অবদানের জন্য সরকার এ বছর ২৯ জন শিল্পী ও কলাকুশলীকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে যেন আমরা মাথা উঁচু করে চলতে চাই। কোনো দিকেই আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। শিল্পের দিক থেকেও, বিশেষ করে চলচ্চিত্র শিল্পের দিক থেকেও আমরা চাই বিশ্বমানের চলচ্চিত্র করে আমরা যেন এগিয়ে যেতে পারি।’

‘এর জন্য যা করা দরকার, কারণ আমার নিজের বাবার হাতে তৈরি এফডিসি এবং এই চলচ্চিত্র শিল্প। কাজেই এই শিল্পের উন্নয়নে যা যা দরকার আমি করব।’

চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করা একান্তভাবে প্রয়োজন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা ধীর্ঘ ২৩ বছর এবং নয় মাসের যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। সব সময় মনে রাখতে হবে।’

চলচ্চিত্র শিল্পের উন্নয়নে এরই মধ্যে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘চলচ্চিত্র মানুষের জীবনের প্রতিচ্ছবি। সমাজে অনেক ম্যাসেজ পৌঁছানো যায়। অনেক কথা বলা যায়, সমাজ সংস্কারে অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে এই চলচ্চিত্র।’

‘আমরা চাই আমাদের চলচ্চিত্র আরও আধুনিক হবে, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন হবে। …আমাদের চলচ্চিত্রের, সিনেমা তৈরি করা, সবক্ষেত্রে আধুনিকতা আসুক, আমরা আরও উন্নতমানের ছবি করি, যে ছবির মধ্য দিয়ে সমাজ সংস্কারে ভালো ভূমিকা রাখবে।’

এমনিতে নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় বলে সিনেমা দেখার ‍সুযোগ পাওয়া যায় না বলে বিমানে যখন যাতায়াতের সময় সিনেমা দেখেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

যাদের হাতে উঠল পুরস্কার

এ বছর অমিতাভ রেজা চৌধুরী পরিচালিত ‘আয়নাবাজি’ চলচ্চিত্র সাতটি বিভাগে পুরস্কার জিতে নিয়েছে। ছবিটি সেরা পরিচালক, সেরা অভিনেতা, সেরা চিত্রগ্রাহকসহ মোট সাতটি পুরস্কার পেয়েছে।

পুরস্কার অর্জনের দিক দিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নাদের চৌধুরী পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘মেয়েটি এখন কোথায় যাবে’। সেরা গীতিকার, সেরা সুরকার ও সেরা সঙ্গীত পরিচালকসহ চারটি পুরস্কার জিতেছে এ ছবিটি।

এবারের আসরে সেরা চলচ্চিত্রের পুরস্কার জিতে নিয়েছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম প্রযোজিত ও তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘অজ্ঞাতনামা’। সেরা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি ছবিটি সেরা কাহিনিকার ও সেরা খলঅভিনেতার পুরস্কারও জিতে নিয়েছে। এ আসরে গৌতম ঘোষের ‘শঙ্খচিল’ চলচ্চিত্রও পেয়েছে তিনটি পুরস্কার।

প্রামাণ্যচিত্রের জন্য পুরস্কার পেয়েছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও একাত্তর মিডিয়া লিমিটেড।

আর চলচ্চিত্রে আজীবন অবদানের জন্য পুরস্কার জিতে নিয়েছেন চিত্র নায়ক ফারুক এবং নায়িকা ববিতা।

এক নজরে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৬

শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র: অজ্ঞাতনামা

শ্রেষ্ঠ স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র: ঘ্রাণ

শ্রেষ্ঠ প্রামাণ্য চলচ্চিত্র: জন্মসাথী

শ্রেষ্ঠ পরিচালক: অমিতাভ রেজা চৌধুরী (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (প্রধান চরিত্র): চঞ্চল চৌধুরী (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (প্রধান চরিত্র): যৌথভাবে আফরোজা ইমরোজ তিশা (অস্তিত্ব) ও কুসুম শিকদার (শঙ্খচিল)

শ্রেষ্ঠ অভিনেতা (পার্শ্ব চরিত্র): যৌথভাবে আলীরাজ (পুড়ে যায় মন) ও ফজলুর রহমান বাবু (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)

শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী (পার্শ্ব চরিত্র): তানিয়া আহমেদ (কৃষ্ণপক্ষ)

শ্রেষ্ঠ খল-অভিনেতা: শহীদুজ্জামান সেলিম (অজ্ঞাতনামা)

শ্রেষ্ঠ শিশুশিল্পী: আনুম রহমান খান সাঁঝবাতি (শঙ্খচিল)

শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচালক: ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে)

শ্রেষ্ঠ গায়ক: ওয়াকিল আহমেদ (দর্পণ বিসর্জন, গান: অমৃত মেঘের বাড়ি…)

শ্রেষ্ঠ গায়িকা: মেহের আফরোজ শাওন (কৃষ্ণপক্ষ, গান: যদি মন কাঁদে…)

শ্রেষ্ঠ গীতিকার: গাজী মাজহারুল আনোয়ার (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান: বিধিরে ও বিধি বিধি..)

শ্রেষ্ঠ সুরকার: ইমন সাহা (মেয়েটি এখন কোথায় যাবে, গান- বিধিরে ও বিধি বিধি..)

শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার: তৌকীর আহমেদ (অজ্ঞাতনামা)

শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার: অনম বিশ্বাস ও গাউসুল আলম (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ সংলাপ রচয়িতা: সৈয়দা রুবাইয়াত হোসেন (আন্ডার কনস্ট্রাকশন)

শ্রেষ্ঠ সম্পাদক: ইকবাল আহসানুল কবির (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ শিল্পনির্দেশক: উত্তম গুহ (শঙ্খচিল)

শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক: রাশেদ জামান (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ শব্দগ্রাহক: রিপন নাথ (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ পোশাক ও সাজসজ্জা: যৌথভাবে সাত্তার (নিয়তি) ও ফারজানা সান (আয়নাবাজি)

শ্রেষ্ঠ মেকাপম্যান: মানিক (আন্ডার কনস্ট্রাকশন।

ঢাকাটাইমস/০৮জুলাই/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :