দলে বিদ্রোহ, জামায়াত অনড়, কঠিন চ্যালেঞ্জে আরিফুল

সিলেট ব্যুরো প্রধান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১০ জুলাই ২০১৮, ১৪:৫৮ | প্রকাশিত : ০৯ জুলাই ২০১৮, ০৯:৪৫

পাঁচ বছর আগে সিলেটে বারবার ভোটে জেতা বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে হারিয়ে চমক দেখানো বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী এবার কঠিন পরীক্ষার মুখে।

এবার জোটের প্রধান শরিক জামায়াতে ইসলামীও মেয়র পদে প্রার্থী দিয়েছে মহানগরে। দলটিকে বাগে আনতে হিমশিম খাচ্ছেন বিএনপির শীর্ষ নেতারা। এমনকি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের অনুরোধও উপেক্ষা করেছে জামায়াত। তাদের মনোভাবে রীতিমতো বিরক্ত, বিস্মিত বিএনপি।

এর মধ্যে আবার কাঁটা হয়ে আছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সেলিম। আরিফুলকে ধানের শীষ প্রতীক দেয়ার বিষয়টি মেনে নিতে না পেরে তিনিও মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন।

আগামী ৩০ জুলাই যে তিন মহানগরে ভোট হচ্ছে তার মধ্যে রাজশাহী ও বরিশালে প্রার্থিতা নিয়ে বিএনপিতে কোনো প্রকাশ্য সংকট বা দ্বন্দ্ব নেই। রাজশাহীতে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল এবং বরিশালে মজিবর রহমান সরোয়ারকে দল বা জোটের কেউ চ্যালেঞ্জ করেননি পাল্টা প্রার্থী হয়ে।

কিন্তু সিলেটে আওয়ামী লীগকে সামলানোর আগে ‘ঘরের বিবাদ’ চেপে ধরেছে বিএনপিকে। আজ মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নিজ দলের বদরুজ্জামান সেলিম আর জামায়াতের এহসানুল মাহবুব জুবায়েরকে প্রত্যাহার করাতে না পারলে ভোটের ফল কী হবে এ নিয়ে বিএনপিতে শঙ্কা স্পষ্ট।

বিএনপিতে বিভেদের চেয়ে জামায়াতের সঙ্গে দ্বন্দ্ব নিয়ে শঙ্কা বেশি। কারণ, এই মহানগরে যদি পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যায় তারা তাহলে অন্য ‍দুই মহানগরেও এর প্রভাব পড়তে পারে বলে বিএনপিতে দুশ্চিন্তা আছে।

জামায়াতের মতোই একই ধরনের অটল মনোভাব দেখাচ্ছেন বিএনপির বিদ্রোহী নেতা বদরুজ্জামান সেলিম। শুরুতে তাকে পাত্তা না দেয়া বিএনপি নেতাকর্মীরা মনে করেছিলেন, আরিফুলকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন সেলিম। কিন্তু তিনি ভোট সরে না দাঁড়ানো কথা জানিয়েছেন।

রবিবার দুপুরে সিলেটের একটি হোটেলে সংবাদ সম্মেলনে সেলিম সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি নির্বাচনে থাকছেন। উল্টো বিএনপির ঘোষিত প্রার্থী আরিফুলের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে তাকে সমর্থন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

সেলিম বলেন, ‘আশা করি আমার দলের নেতৃত্বের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। সেই সাথে আরিফুল হক চৌধুরী মনোনয়ন প্রত্যাহার করে, দলের নেতাকর্মীর প্রত্যাশা অনুযায়ী আমাকে সমর্থন দান করবেন।’

তবে আরিফুলের আশা, শেষ পর্যন্ত এই বিভেদ থাকবে না। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘দলের জন্য অনেক ত্যাগ, অনেক অবদান আছে বদরুজ্জামান সেলিমের। মনোনয়ন না পেয়ে তিনি অভিমান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, দলের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন এবং আমার পক্ষে কাজ করবেন।’

এ তো গেল আরিফুলের নিজ ঘরের কথা, ‘যৌথ পরিবারে’র আরেক অংশীদার এবার ‘শত্রু’ হয়ে দেখা দেয়ায় চিন্তার ভাঁজ বড় হচ্ছে ক্ষণে ক্ষণে।

সোমবার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিনে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করবেন না বলে জানিয়েছেন জামায়াতের জুবায়ের। তিনি “আমরা সিলেট সিটি নির্বাচনকে ‘ওপেন’ করে রাখার জন্য জোটের নেতাদের জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা তা করেননি। সিলেটের জামায়াতের সমর্থনে মনোনয়ন দাখিল করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত নিশ্চিত আমি প্রার্থী থাকছি।

জামায়াতের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সতর্ক আরিফুল। তবে দলটির মনোভাবে বিরক্তি প্রকাশ করেছন বিএনপির স্থানীয় একাধিক নেতা। তারা দলের কেন্দ্রকে এ নিয়ে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু অবশ্য আশা করছেন, আজ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জামায়াত সরে দাঁড়াবে। আর গত ৪ জুলাই ২০ দলীয় জোটের বৈঠকের পর মুখপাত্র নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বরিশাল ও রাজশাহীর মতো সিলেটেও তাদের জোটের একক প্রার্থী থাকবে, তিনি যেই হোন না কেন।

অন্যদিকে আরিফুলের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা মার্কা পেতে যাওয়া সাবেক মেয়র কামরানের পক্ষে এবার তার দল ঐক্যবদ্ধ। জাতীয় নির্বাচনের আগে সিলেটের মেয়র পদ পুনরুদ্ধার করতে আওয়ামী লীগ দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

গত ১৫ মে খুলনা এবং ২৬ জুন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বড় ব্যবধানে জিতে এরই মধ্যে এগিয়ে গেছে ক্ষমতাসীন দল। অথচ ২০১৩ সালের নির্বাচনেই তারা বড় ব্যবধানে হেরেছিল বিএনপির কাছে।

ঢাকাটাইমস/০৯জুলাই/প্রতিনিধি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :