যমুনায় ভাঙন, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

রানা আহমেদ, সিরাজগঞ্জ
 | প্রকাশিত : ১০ জুলাই ২০১৮, ২১:১০

যমুনার ভাঙন তাণ্ডবলীলায় সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে যমুনার দুই পাড়েই পাল্লা দিয়ে চলছে নদী ভাঙন। বিশেষ করে দক্ষিনাঞ্চলের প্রায় সাড়ে আট কিলোমিটার এলাকায় তীব্র নদী ভাঙনে গত এক মাসে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও বিস্তীর্ণ ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনই ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া না হলে আটটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বহু ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হবার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

এদিকে যমুনার পশ্চিম তীরে অবস্থিত মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চলছে ভয়াবহ নদী ভাঙন।

যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় চৌহালী উপজেলার খাষপুখুরিয়া থেকে পাথরাইল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৮ কিলোমিটার এলাকায় নদী ভাঙন চলছে। প্রতিনিয়তই নদীর পেটে যাচ্ছে বসত বাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, দোকানপাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা।

মঙ্গলবার দুপুরে খাষপুখুরিয়া ও চরছলিমাবদ এলাকায় সাতটি বসতবাড়িতে যমুনার হিংস্রতা বারবার আছড়ে পড়ছে। তাদের শেষ সম্বল টিনের চালা ও অন্যান্য আসবাব সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে নিরাপদ স্থানে।

এর আগে দক্ষিণ খাষপুখুরিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের, শুকুর মোল্লা, বাদশা মিয়া, হাবিবুর রহমান ও সকিনা খাতুনের বাড়িসহ, মসজিদ ও দুটি মুদি দোকান নদীতে বিলীন হয়ে যায়।

এছাড়া গতবারের নদী ভাঙনে খাষদেলদারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বীরবায়ুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খাষপুখুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদী গর্ভে চলে যায়। এছাড়া যমুনার পশ্চিম তীরে অবস্থিত খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল ও বিশ্ববিদ্যায়ের দক্ষিণে সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়েও চলছে যমুনা ভয়াবহ ভাঙনের তাণ্ডবলীলা। এ কারণে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দেশের সর্ববৃহৎ কাপড়ের হাট, চিকিৎসা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক আবু দাউদ সরকার জানায়, যমুনার রাক্ষুসী থাবার কাছে হার মেনে অসহায় মানুষগুলো নিজ বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে ওয়াবদা বাঁধে অথবা পরের বাড়িতে উটুলী থাকতে। এ বিভিষীকাময় পরিস্থিতিতে কান্নার রোলে যমুনা পাড়ের আকাশ বাতাস ভারি হয়ে যাচ্ছে। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে ভাঙনরোধে কোন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।

খাষপুখুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সরকার বলেন, যমুনা নদীর এতো ভয়ঙ্কর গর্জন বিগত দিনে দেখা যায়নি, এবছর নদীতে পানি বৃদ্ধির পর থেকে অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। দ্রুত ভাঙনরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে চৌহালী উপজেলা চেয়ারম্যান মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে যমুনার ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এখনই ভাঙন ঠেকানো না গেলে চৌহালীর বাকি অংশ মানচিত্রে থাকলেও বাস্তবে থাকবে না।

তবে উপজেলা ইউএনও (ভারপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান জানান, ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ঊর্ধ্বতন মহলকে জানানো হয়েছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহজাহান সিরাজ জানান, চরছলিমাবদ এলাকায় ভাঙনরোধে ডাম্পিং কাজ চলমান রয়েছে। এছাড়া বিধ্বস্ত চৌহালীরবাসী অংশকে নদী ভাঙন থেকে রক্ষায় পাউবো কর্মকর্তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/১০জুলাই/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :