গুলিতে পাঁচ ‘মাদক কারবারি’সহ নিহত ৬

প্রকাশ | ১১ জুলাই ২০১৮, ১০:৩৪ | আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৮, ১৪:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
নাটোরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত ওসমান আলী

সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচজন মাদক কারবারি ও একজন ডাকাত দলের সদস্য বলে দাবি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত দেশের পাঁচ জেলায় পুলিশ ও র‌্যাবের সঙ্গে এসব বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে কুষ্টিয়ায় দুইজন, ঢাকা, যশোর, লক্ষ্মীপুর, ও নাটোরে একজন করে নিহত হয়েছেন। ঢাকাটাইমসসের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।

ঢাকার কেরানীগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মো. নুরা ওরফে নুরু নামে আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ডায়মন্ড মেলামাইন কারখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তি মাদক কারবারি বলে দাবি পুলিশের। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

কুষ্টিয়ার মিরপুরে র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে দুই মাদক কারবারি নিহত হয়েছেন। তারা হলেন ফুটু ওরফে মোন্না এবং ও রাসেল আহম্মেদ। বুধবার ভোরে মিরপুর উপজেলার কূর্শা ইউনিয়নের আনান্দবাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়াদ্দারের ইটভাটার কাছে এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

নিহত ফুটু রাজারহাট মোড় এলাকার আহম্মদ আলীর ছেলে এবং রাসেল একই এলাকার রবিউল ইসলামের ছেলে।

র‌্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মোহাইমিনুল জানান, মাদকদ্রব্য কেচাকেনার জন্য একদল মাদক কারবারি আনান্দবাজার বালুচর সংলগ্ন জোয়াদ্দারের ইটভাটার কাছে অবস্থান করছে এমন সংবাদ পেয়ে র‌্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান চালায়। র‌্যাবকে দেখামাত্র মাদক কারবারিরা গুলি ছোড়ে। জবাবে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। বন্দুকযুদ্ধের এক পর্যায়ে দুইজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় দুই র‌্যাব সদস্যও হয়েছেন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল থেকে দুটি পিস্তল, ১২ রাউন্ড গুলি এবং বিপুল ইয়াবা ও ফেন্সিডিল জব্দ করা হয়েছে।

নাটোরের বড়াইগ্রামে র‌্যাবের সঙ্গে কথি ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ওসমান আলী নামে এক মাদক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই র‌্যাব সদস্য। এ সময় বিপুল মাদক, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে উপজেলার বাহিমালী বাজারে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত ওসমান গণি বড়াইগ্রাম উপজেলার গুরুমশাইল এলাকার মুনসুর আলী মুনসীর ছেলে। ওসমান আলীর বিরুদ্ধে নাটোর জেলার বিভিন্ন থানায় মাদক ও চাঁদাবাজিসহ পাঁচটি মামলা রয়েছে। তিনি নাটোর জেলার অন্যতম শীর্ষ মাদক কারবারি হিসাবে পরিচিত বলে দাবি র‌্যাবের।

বন্দুকযুদ্ধের পর ঘটনাস্থল হতে একটি বিদেশি পিস্তল, চার রাউন্ড গুলি ভর্তি একটি ম্যাগজিন, পিস্তলের গুলির একটি খালি খোসা ও ৪১০ গ্রাম হেরোইন জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব-৫ সিপিসি-২ এর কমান্ডার মেজর শিবলী মোস্তফা।

লক্ষ্মীপুরে পুলিশের সঙ্গে মাদক বিক্রেতাদের গোলাগুলিতে সোহেল রানা ওরফে চোরা সোহেল নামে এক মাদক বিক্রেতা নিহত হয়েছেন। বুধবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।

রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মককর্তা(ওসি) একেএম আজিজুর রহমান মিয়া জানান, সোহেল রানা ওরফে চোরা সোহেল পুলিশের তালিকাভূক্ত শীর্ষ মাদক বিক্রেতা।তার বিরুদ্ধে রায়পুর ও ফরিদগঞ্জসহ বিভিন্ন থানায় মাদক, ডাকাতি ও চাঁদাবাজিসহ ১৯ মামলার পলাতক আসামি তিনি। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার ঝুমুর সিনেমা হল এলাকা থেকে  তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরে ভোররাতে তাকে নিয়ে ইয়াবা উদ্ধারে যায় পুলিশ।  রায়পুর-চাঁদপুর সড়কের পাশে চরপাতা এলাকা পৌঁছালে সোহেলের সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। আত্মরক্ষার্থে  পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে সোহেল গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।

এ সময় মোস্তফা ও মোতাহের হোসেন নামে দুই পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়। ঘটনাস্থল থেকে তিনশ পিস ইয়াবা ও ৯ রাউন্ড কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

যশোরের মণিরামপুরে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। দুই দল সন্ত্রাসীর মধ্যে গোলাগুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছে পুলিশ।

বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে থানা পুলিশ যশোর-রাজগঞ্জ সড়কের গাঙ্গুলিয়া জামতলা-সংলগ্ন পাকা রাস্তার ওপর থেকে লাশটি উদ্ধার করে যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

তার পরনে নেভি ব্লু জিন্স প্যান্ট ও একই রঙের গেন্জি এবং কোমরে একটি গামছা  পরিহিত ছিল। গুলিতে লাশের মাথার খুলি উড়ে গেছে।

পুলিশ পড়ে থাকা মরদেহের ডান হাতের ওপর থেকে একটি পাইপগান, একজোড়া চামড়ার স্যান্ডেল এবং মাঠের মধ্য থেকে একটি মাফলার উদ্ধারের দাবি করেছে।
মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকাররম হোসেন বলছেন, ভোর পৌনে পাঁচটার দিকে খেদাপাড়া ক্যাম্পের আইসি উপপরিদর্শক (এসআই) আইনুদ্দিন খবর পান যে, একটি লাশ পড়ে আছে। পরে সেখান থেবে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/প্রতিনিধি/এমআর