বাদল ফরাজীর কারামুক্তি চেয়ে রিট খারিজ
ভারতে ভুল বিচারের শিকার কারাবন্দী বাদল ফরাজীকে কারামুক্ত করার নির্দেশনা চেয়ে রিট খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রিটটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজাদেশ দেন।
রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব ও ব্যারিস্টার কাউছার। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাসুদ হাসান চৌধুরী পরাগ।
এর আগে গতকাল বুধবার রিটটির শুনানি শেষে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেন আদালত। আজ তা খারিজ করে দিলো আদালত।
বাদল ফরাজীকে নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৮ জুলাই বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের আদালতের নজরে আনেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব ও কাউছার। তারা এ ব্যাপারে আদালতের নির্দেশনা চান। তবে আদালত তাদের রিট আবেদন করার পরামর্শ দেন। এর প্রেক্ষিতে ওই দুই আইনজীবী হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদন দাখিল করেন।
রিট আবেদনে বাদল ফরাজীকে জেলখানায় আটক রাখা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারির আবেদন জানানো হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব, আইন মন্ত্রণালয় সচিব ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিব এবং আইজি প্রিজনকে রিটে বিবাদী করা হয়।
ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির বলেন, বাদল ফরাজীর পরিচয় নিয়ে প্রশ্ন থাকার পর তার বিচার করেছে ভারতীয় আদালত। আদালত তাকে বাদল সিং হিসেবে ধরে নিয়ে বিচার করেছে। সেখানে ভুল বিচারের শিকার বাদল ফরাজী। এটা স্বীকার করে নিয়েছে দুই দেশের সরকারই। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে আইনের দৃষ্টিতে বাদল ফরাজী নির্দোষ ব্যক্তি। তাকে ভারত থেকে ফিরিয়ে আনা হলেও কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে আটক রাখা হয়েছে। নির্দোষ ব্যক্তিকে কেন কারাগারে রাখা হবে? এ কারণে রিট আবেদন করা হয়।
জানা গেছে, ২০০৮ সালের ৬ মে দিল্লির অমর কলোনির এক বৃদ্ধাকে হত্যার ঘটনায় দিল্লির পুলিশ বাদল সিং নামে এক ব্যক্তিকে খুঁজছিল। এ অবস্থায় ওই বছরের ১৩ জুলাই ট্যুরিস্ট ভিসায় বেনাপোল সীমান্ত পার হওয়ার পরপরই ওই বৃদ্ধা হত্যা মামলায় বাদল ফরাজীকে গ্রেপ্তার করে ভারতের পুলিশ। বাদল সিং মনে করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর সেখানে বিচার শেষে তাকে ওই মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এরপর থেকে তিনি ভারতের বিহার কারাগারে সাজা ভোগ করছিলেন।
পরে ভারতীয় একটি বেসরকারি সংস্থা বাদল ফরাজীর ঘটনা জানতে পেরে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেয়। তারা ঢাকার পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ অবস্থায় সরকার ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বন্দী বিনিময় চুক্তির আওতায় তাকে ৬ জুলাই দেশে ফেরত আনা হয়। এরপর তাকে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়।
(ঢাকাটাইমস/১১জুলাই/এমএবি/এমআর)