বন্ধুকে সাত টুকরো করার স্বীকারোক্তি আদালতে

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০১৮, ২১:১৩

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

নারায়ণগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষ হত্যার চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়ে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন পিন্টু দেবনাথ।  পিন্টু সম্পর্কে প্রবীরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আদালতে পিন্টু স্বীকার করেছেন টাকা আত্মসাৎ ছিল হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ।

শনিবার (১৪ জুলাই) বিকালে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালতে পিন্টুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম পিন্টুর আদালতে স্বীকারোক্তি দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পিন্টু আদালতকে জানিয়েছেন, কালীরবাজার এলাকাতে স্বর্ণ মার্কেটে ‘পিন্টু স্বর্ণালয়’ নামের একটি দোকান রয়েছে। কয়েক মাস আগে প্রবীরের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়ে এই দোকানের পজিশন কিনেন পিন্টু। কিন্তু দুই মাস ধরেই পিন্টুর কাছে টাকা চাচ্ছিলেন প্রবীর। এ নিয়ে বিরোধ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তা চরম আকার ধারণ করে। এসব কারণেই এক পর্যায়ে প্রবীরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন পিন্টু। আর সেই কারণে বেছে নেন ঈদের ছুটির সময়টা।  হত্যাকাণ্ডের পর ঘাতক পিন্টু তার দোকানের কর্মচারী বাপেন ভৌমিক বাবুর কাছে প্রবীরের সিমকার্ড দিয়ে ভারতের পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা থেকে নারায়ণগঞ্জে বিভিন্নজনের কাছে ম্যাসেজ পাঠান বিষয়টি ভিন্ন দিকে নেয়ার জন্য।

তাছাড়া পিন্টুর সামান্য একজন স্বর্ণের দোকানের কর্মচারী থেকে দোকানের মালিক বনে যাওয়ার বিষয়টি প্রবীর মেনে নিতে পারতেন না। প্রবীর পিন্টুকে বন্ধুত্বের সুবাদে বিপদে আপদে অর্থ দিয়ে সহায়তা করলেও মাঝেমধ্যে তাকে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কটাক্ষ করতেন। সম্প্রতি প্রবীর পিন্টুকে নারী ও পুলিশ দিয়ে হয়রানি করার হুমকি দেন। এতে তার মনের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। পরে প্রবীরকে হত্যার মাধ্যমে তার অর্থ, বন্ধকী স্বর্ণালংকার ও দোকান আত্মসাতের লোভ জাগে পিন্টুর মনে। আর সেই ক্ষোভ ও লোভের বশবর্তী হয়ে তিনি নিজ বন্ধুকে সাত টুকরো করে হত্যা করেন।

প্রসঙ্গত, নিখোঁজের ২১ দিন পর ৯ জুলাই রাত ১১টায় শহরের আমলপাড়া এলাকার রাশেদুল ইসলাম ঠান্ডু মিয়ার চার তলা ভবনের নিচে সেপটিক ট্যাংক থেকে প্রবীরের খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘাতক পিন্টু ওই বাড়ির দুই তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন। গত ১৮ জুন রাত থেকে প্রবীর নিখোঁজ ছিলেন। তার সন্ধান দাবিতে দফায় দফায় আন্দোলন চালিয়ে আসছিলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা। স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষ কালিরবাজার স্বর্ণপট্টির ভোলানাথ জুয়েলার্সের মালিক ভোলানাথ ঘোষের ছেলে।

(ঢাকাটাইমস/১৪জুলাই/প্রতিনিধি/জেবি)