রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রান্নাঘর পাল্টে দেয়ার চিন্তা
পাহাড়ের গাছ বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের জন্য বিকল্প জ্বালানী হিসেবে কয়লা দেওয়া হবে। পরিবেশ রক্ষায় উজাড় হওয়া গাছের বিকল্প হিসেবে নতুন করে পাহাড়ে গাছও লাগানো হবে। আর পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাটের ব্যাগ দেওয়া হবে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে।
রবিবার দুপুরে সচিবালয়ের সম্মেলন কক্ষে এসব তথ্য জানান পরিবেশ ও বন মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। এ সময় উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা উপলক্ষ্যে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ১৮ জুলাই বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করবেন। অনুষ্ঠানে পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন অবদান রাখার জন্য ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জাতীয় পরিবেশ পদক-২০১৮ দেওয়া হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে অবদান রাখার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন’ পুরস্কার দেওয়া হবে।
এছাড়া বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় পুরস্কার এবং সামাজিক বনায়নে সুবিধাভোগীদের চেক বিতরণ করা হবে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের মুখে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশের দিকে ছুটে আসা ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার আশ্রয় হয়েছে কক্সবাজারের ক্যাম্পে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ের জন্য টিলা ও গাছ কাটতে হয়েছে বিপুল সংখ্যক। পাশাপাশি উন্নত পয়ঃনিষ্কাষণ ব্যবস্থা না থাকাতেও পরিবেশের দূষণ নিয়ে দুশ্চিন্তা আছে।
আবার বিপুল সংখ্যক পরিবারের খাবার তৈরিও একটি বড় চিন্তা। জ্বালানি হিসেবে সেখানে ব্যবহার হচ্ছে কাঠ। স্বভাবতই আশেপাশের বিভিন্ন বৃক্ষের ওপর পড়েছে খড়্গ।
রোহিঙ্গাদেরকে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। কিন্তু মিয়ানমারের টালবাহানায় যে প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল গত জানুয়ারিতে, সেটি এখনও অনিশ্চিত। ফলে রোহিঙ্গারা আরও বহুদিন এখানে থাকছে এটা অনেকটাই নিশ্চিত। আর তাই বিকল্প চিন্তা করতেই হচ্ছে সরকারকে।
বনমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে আমরা ক্যাম্পগুলোতে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু তা হতো বিপজ্জনক। যেকোন সময় বড় দুর্ঘটনা হতে পারে। তাই আমরা সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছি।’
‘আমি এ বিষয়ে সেখানে একাধিকবার পরিদর্শনে গিয়েছি। আমাদের সচিবও গিয়েছেন। সেখানে যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না ঘটে সেজন্য আমরা সব ব্যাস্থা নেব।’
মন্ত্রী জানান, গত তিন বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের স্মৃতির সম্মানে সারাদেশে ৩০ লাখ গাছের চারা রোপন করা হবে।
এই কর্মসুচিতে সাধারণ মানুষ স্বতস্ফুর্তভাবে অংশ নেবে বলেও আশা করেন মন্ত্রী। বলেন, এতে একসঙ্গে দুটি কাজই হয়ে যাবে। একদিনে রক্ষা পাবে পরিবেশ, অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিও জাগরুক থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার পরিবেশ সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত মোকাবেলায় কাজ করছে। একটি উন্নত দেশ গঠনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০ টি বিশেষ উদ্দ্যেগের মধ্যে একটি হচ্ছে পরিবেশ সুরক্ষা। তাই আমাদের মন্ত্রণালয় এ দিকে বেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।’
ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/এমএম/ডব্লিউবি