রাজশাহীতে পাঁচ দিনে আ.লীগ-বিএনপির ২১ অভিযোগ

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ১৫ জুলাই ২০১৮, ১৯:১৫

রাজশাহী সিটি নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর থেকেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একে অপরের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। গত পাঁচ দিনে ২১টি অভিযোগ দিয়েছে এই দুই দল।

এ নিয়ে আওয়ামী লীগ কোনো কথা বলছে না। তবে বিএনপি বলছে, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। তাই কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না।

আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার দপ্তর থেকে জানা গেছে, রবিবার পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে মোট ২১টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে শুধু রবিবারই আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আইন সহায়তা উপ-কমিটির সদস্য সচিব মুসাব্বিরুল ইসলাম অভিযোগ দিয়েছেন সাতটি।

একই দিন বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের প্রধান নির্বাচনি এজেন্ট তোফাজ্জল হোসেন তপু অভিযোগ দিয়েছেন একটি। এর বাইরে অন্য কোনো মেয়র প্রার্থীর অভিযোগ নেই।

বিএনপির রবিবারের অভিযোগে বলা হয়, শনিবার বিকালে নগরীর বোষপাড়া পুরাতন পুলিশ ফাঁড়ির মাঠ সংলগ্ন ধানের শীষের নির্বাচনি কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। রাত ১১টার দিকে হাদির মোড়ে আওয়ামী লীগের লোকজন ধানের শীষের সমর্থকদের হুমকি দেন। রাত ২টার দিকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ছেলেরা মোটরসাইকেল নিয়ে গিয়ে বিএনপির ২৫ নম্বর ওয়ার্ড নির্বাচনি কার্যালয় ভাঙচুর করে। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় ধানের শীষের প্রচারণার সময় নারীদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের অভিযোগে বলা হয়েছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে বুধপাড়া এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে বিএনপি ও জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী প্রচার চালানোর সময় ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করেন। সন্ধ্যায় ভাড়ালিপাড়া এলাকায় বিএনপি-জামায়াতের নারী কর্মীরা অপপ্রচার চালান। ওই এলাকায় বলা হয়, আওয়ামী লীগের প্রার্থী খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র নির্বাচিত হলে বসতবাড়ি উচ্ছেদ করে এখানে সিটি করপোরেশনের গুদাম নির্মাণ করা হবে।

ডাঁশমারি এলাকায় বিএনপি জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী সাধারণ ভোটারদের বলেন, এই এলাকা বিএনপির জামায়াতের ঘাটি, এখানে বসবাস করতে হলে ধানের শীষে ভোট দিতে হবে। তেরখাদিয়া ডাবতলার এলাকায় ধানের শীষ প্রতীকের বিএনপি কর্মীরা নিম্ন আয়ের মানুষের বাড়ি বাড়ি প্রচার চালান এবং তাদের নগদ টাকা দেয়ার প্রলোভন দেয়া হয়। এছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীরা বড়কুঠি এলাকায় নৌকা প্রতীকের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

তবে আওয়ামী লীগের এসব অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। উল্টো তিনি অভিযোগ করেন, বিভিন্ন ওয়ার্ডে তার পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর হচ্ছে। প্রচারণার সময় নেতাকর্মীদের বাধা দিচ্ছে নৌকার সমর্থকরা। ধানের শীষের নারী কর্মীদের অসম্মানজনক কথা বলা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

বুলবুল বলেন, নির্বাচন কমিশন সরকারের আজ্ঞাবহ। তাই বারবার অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হচ্ছে না। রবিবার সকালে নগরীর পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডে নির্বাচনি প্রচার চালাতে গিয়ে বুলবুল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু ও সাবেক এমপি নাদিম মোস্তফাসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে রবিবার বেলা ১১টায় নগরীর কাশিয়াডাঙ্গা এলাকায় গণসংযোগকালে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, নির্বাচনে পরাজয় অনুমান করতে পেরে বিএনপি মিথ্যাচার করছে। কেন্দ্রীয়ভাবে হয়তো তাদের শিখিয়ে দেয়া হয়েছে, প্রতিদিন একটার পর একটা অভিযোগ দেয়ার জন্য। তারা যে অভিযোগগুলো তুলেছে একটিও সঠিক নয়। বরং আমার অনেক পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে, বিলবোর্ড কেটে ফেলা হয়েছে।

তবে কোনো প্রার্থীরই অভিযোগ ‘সুনির্দিষ্ট’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন সিটি নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান।

তিনি বলেন, এক প্রার্থী অভিযোগ দিলেন, তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। আমরা গিয়ে কিছুই পেলাম না। এগুলো একটাও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নয়। যখন প্রমাণসহ অভিযোগ দেয়া হবে তখন সেটা সুনির্দিষ্ট অভিযোগ হবে। এ রকম অভিযোগ পেলে আমরা পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেব।

(ঢাকাটাইমস/১৫জুলাই/আরআর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :