মানসিক রোগীর চিকিৎসা না হলে স্বজনদের সাজার বিধান
মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির চিকিৎসায় অবেহলা করলে অভিভাবক বা স্বজনদের শাস্তির বিধান রাখার প্রস্তাব করে নতুন আইন হচ্ছে। সম্পত্তি ভাগাভাগিতে এই ধরনের ব্যক্তিদের ঠকালেও হবে সাজা।
এই ধরনের অপরাধের শাস্তি হিসেবে হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা তিন বছরের কারাদণ্ড বা উভয়দণ্ডের বিধান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়া ‘মানসিক স্বাস্থ্য আইন ২০১৮’ এর খসড়ায়।
সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) এন এম জিয়াউল আলম এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
সচিব জানান, মানসিক স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত কোন পেশাজীবী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মিথ্যা সনদ দিলে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা জরিমানা বা এক বছর কারাদণ্ড অথবা উভয়দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে এ আইনে।
বাংলাদেশে মানসিক স্বাস্থ্য এবং রোগের বিষয়টি খুব একটি গুরুত্ব পায় না নাগরিকদের কাছে। পরিবারের সদস্যরাও রোগটি উপেক্ষা করে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে শতকরা এক শতাংশ মানুষ জটিল মাসনিক সমস্যায় ভুগছে। আর ১০ শতাংশ মানুষ নানা ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত। আর ৩০ শতাংশ মানুষ এই রোগের ঝুঁকিতে আছে।
এই বাস্তবতায় চলতি বছর ‘নাগরিকের মানসিক স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত আইন’ করার উদ্যোগ নেয় সরকার। এতে আইনি সুরক্ষার পাশাপাশি এক ধরনের সচেতনতা তৈরি হবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
জানা গেছে, ১৯১২ সালে প্রণীত ‘দ্য লুন্সি অ্যাক্ট’কে হালনাগাদ করে নতুনভাবে মানসিক স্বাস্থ্য আইন করা হচ্ছে। প্রস্তাবিত আইনে ২৮টি ধারা রয়েছে। দেশের সব মানসিক হাসপাতাল চলবে প্রস্তাবিত আইনে।
এই আইনের মাধ্যমে নাগরিকদের মর্যাদা সুরক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা অধিকার নিশ্চিতকরণ, পুনর্বাসন ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে। এ লক্ষ্যে একটি যুগপোগী আইন প্রণয়নের অংশ হিসেবে এ আইনটি মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব করা হয়।
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি আইনটির খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয় মন্ত্রিসভায়। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় এখন এটি বিল আকারে জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে।
সংসদে উপস্থাপনের পর সেটি আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য যাবে সংসদীয় কমিটিতে। আর কমিটি প্রতিবেদন দিলে তা পাস করার জন্য আবার সংসদে তোলা হবে।
মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘জাতীয় ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা ২০১৮’ এর খসড়ার অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব।
গত ৫ থেকে ৭ জুন মেয়াদে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জাব্বারের থাইল্যান্ড সফর সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান জিয়াউল আলম।
ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এমএম/ডিএম/ডব্লিউবি