পানামা পেপার্সে নাম নেই, শুধুই হয়রানি: হাসান রাজা
আলোচিত পানামা পেপার্স ক্যালেঙ্কারির ঘটনায় নাম আসা খবর সঠিক নয় দাবি করেছেন ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ রাজা। বলেছেন, ব্যবসায়িক প্রতিদ্বন্দ্বীর ‘চক্রান্তে’তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি 'জাস্ট হ্যারাসমেন্ট' বা হয়রানি।
সোমবার ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হওয়ার পর বেরিয়ে যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে হাসান রাজাকে মুদ্রা পাচারের অভিযোগে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে টানা তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেন কমিশনের উপ-পরিচালক এসএমএম আখতার হামিদ ভূঁঞার। পানামা পেপার্সে নাম আসা বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের মধ্যে হাসান মাহমুদ রাজাও রয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে হাসান মাহমুদ রাজা বলেন, পত্রিকার প্রবেদনের ওপর নির্ভর করে দুদক তাকে তলব করেছে।
‘তারা আমার ব্যক্তিগত ও কোম্পানির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছে। পানামা পেপার্সে আমাদের কোনো নাম নেই। এসব আমরা চেক করে দেখেছি। পানামা ও প্যারাডাইস পেপার্সে যাদের নাম এসেছিল তাদের ডাকা হয়েছিল। তখন আমাদের ডাকে নাই। আমাদের তো এখন ডাকার কথা না। এটা জাস্ট হ্যারাসমেন্ট।’
এ ব্যবসায়ীর দাবি, ২০১৬ সালে যখন পানামা পেপার্স প্রকাশ পেয়েছিল তখন কোনও না কোনও কমপিটিটর (প্রতিযোগি) উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি পত্রিকার মাধ্যমে তাদের নাম প্রকাশ করেছে।
ওই পত্রিকায় যাদের নাম প্রকাশ হয়েছে দুদক কর্তৃপক্ষ তাদের আয়করের সকল নথি-পত্র জমা দিতে বলেছে বলে জানান ইউনাইটেড গ্রুপের এই চেয়ারম্যান।
এদিকে ইউনাইটেড গ্রুপের চেয়ারম্যান ও পরিচালকসহ যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হচ্ছে সেটা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ওপর নির্ভর করেই করা হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন দুদকের সচীব শামসুল আরেফিন।
পানামা পেপার্স নয় বরং মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের বিষয়ে দুদকের তিন সদ্যের একটি দল এই তদন্ত পরিচালনা করছে বলে জানান দুদক সচিব।
তিনি বলেন, ‘পত্রিকায় প্রকাশিত খবর ও আমাদের গোয়ান্দা তথ্যের ভিত্তিতে করছি। মানি লন্ডারিংয়ের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জনে তাদের কোন সম্পৃক্ততা আছে কি না তা যাচাইয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।'
হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ নিয়ে সচিব বলেন, 'এখানে কমিশন নিশ্চত করতে চায় যে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না। দুদকের আইন মেনে করা হচ্ছে। তদন্ত চলছে এখনই কাউকে দোষি বলা যাবে না। যারা তদন্ত করছে তারাই পরবর্তি ব্যবস্থা নিবে।'
'এখানে কেউ স্বাস্থ্যগত কারণে সময়ও চাইতে পারতেন। অনুসন্ধানকারি দল অবশ্যই বিবেচনা করতেন।'
আলোচিত পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে এ পর্যন্ত রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীসহ ৩৪ বাংলাদেশি ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে। পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারিতে আসা বাংলাদেশি নামগুলো যাচাই করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৮ জুলাই দুদক চিঠি পাঠিয়ে পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় নাম থাকা হাসান মাহমুদ রাজা, খন্দকার মঈনুল আহসান, আহমেদ ইসমাইল হোসেন ও আকতার মাহমুদকে তলব করেছিল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাসান মাহমুদ রাজা, খন্দকার মঈনুল আহসান, আহমেদ ইসমাইল হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ কছে দুদক।
এদিকে প্যারাডাইস পেপার্স কেলেঙ্কারিতে নাম থাকার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে ডব্লিউএমভি লিমিটেডের এরিকসন জোহান আন্দ্রেস উইলসন, সেলকন শিপিং কোম্পানির মাহতাবুর রহমান এবং ইনট্রিডিপ গ্রুপের ইয়াকুবুর রহমানকে মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কমিশনে ডেকেছে দুদক।
ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/এএকে/ডিএম