মা-ছেলে হত্যায় তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
রাজধানীর কাকরাইলে মা ও ছেলে হত্যা মামলায় স্বামী, তৃতীয় স্ত্রী এবং তৃতীয় স্ত্রীর ভাইয়ের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে রমনা থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রমনা থানার ইন্সপেক্টর মো. আলী হোসেন সোমবার ঢাকা সিএমএম আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।
এরপর এদিন ঢাকা মহানগর হাকিম খুরশিদ আলমের আদালতে চার্জশিট উপস্থাপিত বাদীর আইনজীবী নারাজির আবেদন করলে বিচারক আগামী ৮ আগস্ট নারাজি দাখিল ও শুনানির দিন ধার্য করেন।
চার্জিশিটের আসামিরা হলেন, শামসুন্নারের স্বামী আব্দুল করিম, তার তৃতীয় স্ত্রী শারমিন আক্তার মুক্তা ও মুক্তার ভাই আল আমিন ওরফে জনি।
চার্জশিটে হত্যার কারণ হিসেবে বলা হয়, আসামি আব্দুল করিম ২৮ বছর পূর্বে নিহত শামসুন্নাহারকে বিবাহ করেন। তাদের সন্তান নিহত শাওন ‘ও’ লেভেলে পড়ালোখা করতো। আসামি করিম জনৈকা ফরিদাকে দ্বিতীয় বিবাহ করেন। ওই ঘরেও আকাশ নামে একটি সন্তান রয়েছে। পরে ফরিদাকে তালাক দিয়ে ৪ বছর পূর্বে আসামি মুক্তাকে বিবাহ করেন। তৃতীয় বিয়ে করার পর আসামি করিম প্রথম স্ত্রী ও সন্তানের খোঁজ খবর নিতেন না এবং মাঝে মধ্যে বাসায় এসে স্ত্রীকে মারধর করতেন।
এ হত্যাকাণ্ডের ৩/৪ মাস পূর্বে তৃতীয় স্ত্রী মুক্তা বাসায় এসে নিহত শামসুন্নাহারকে মারধর করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে যায়। এরপর নিহত শামসুন্নাহার মুক্তাকে তালাক দেওয়ার জন্য আসামি করিমকে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় নিহত শামসুন্নাহার ও ছেলে শাওন আসামি করিমকে মরধর করেন। নিহত শামসুন্নারের নামে অনেক সম্পাদ থাকায় আসামি আব্দুল করিম তাকে তালাক দিতে পারছিলেন না। তাই মারধরের ঘটনার পর আসামি আব্দুল করিম মুক্তা ও জনিকে নিয়ে নিহত শামসুন্নাহারকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৭ সালের ১ নভেম্বর আসামি জনি নিউমার্কেট এলাকার নিউ সুপার মার্কেটের ১০০ নম্বর দোকান থেকে এগারশ টাকা দিয়ে একটি ছোরা কিনেন। পরে ওইদিন সন্ধার সময় ৭৯/১, ভিআইপি রোডস্থ কাকরাইলের ৫ম তলার নিহতদের বাসায় ঢুকে গৃহকর্মী রাশিদাকে রান্না ঘরে বন্দি করে রেখে প্রথমে শাওনকে বুকে ছরি চালিয়ে এবং পরে শামসুন্নাহারে পেটে মুখেসহ বিভিন্ন স্থানে ছুরি চালিয়ে হত্যা করেন।
প্রসঙ্গত, মামলাটিতে নিহতের স্বামী আবুল করিম, তার তৃতীয় স্ত্রী শারমীন আক্তার মুক্তা এবং শ্যালক আল আমিন ওরফে জনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। আসামিদের মধ্যে মুক্তা ও জনি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর নিহত শামসুন্নাহারের ভাই আশরাফ আলী বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঢাকাটাইমস/১৬জুলাই/আরজেড/ডিএম