চাঁদপুরে গৃহবধূ হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৭ জুলাই ২০১৮, ১৮:৪৬

চাঁদপুরে যৌতুকের দাবিতে শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এরশাদ উল্যাহ নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড ও গৃহবধূর চাচাশ্বশুর আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

গৃহবধু শাহিনুর বেগম কে হত্যার অপরাধে মঙ্গলবার দুপুরে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এরশাদ উল্যাহ কচুয়া উপজেলার সাদীপুরা গ্রামের মুন্সী বাড়ির রুহুল আমিন এর ছেলে এবং চাচা শ্বশুর আবু তাহের মুন্সী একই বাড়ির আব্দুল খালেক মুন্সীর ছেলে। এরশাদ উল্যাহ সম্পর্কে আবু তাহেরের ভাতিজা।

আর হত্যার শিকার শাহিনুর বেগম (২০) পাশের গ্রামের শহীদুল্লাহ মিয়াজীর কন্যা।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৬ জানুয়ারি এরশাদ উল্যাহর সাথে শাহিনুর বেগম এর বিয়ে হয়। ওই সময় ছেলেকে কনের পিতা আড়াই লাখ টাকা যৌতুক দেন। কিন্তু আরো যৌতুকের দাবিতে এরশাদ উল্যাহ নিজ বাড়িতে পরিবারের লোকজনসহ শাহীনুরকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে এরশাদ উল্যাহ ও শাহিনুর বেগম এর মধ্যে যৌতুক নিয়ে ঝগড়া বিবাদ হয়। এ সময় এরশাদ উল্যাহ তার চাচা আবু তাহের মুন্সীর সহযোগিতায় শাহিনুরকে মারধর করে এবং শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন।

শাহিনুরের পিতা শহীদুল্লাহ মিয়াজী জানান, ঘটনার পর চাচা আবু তাহের তাঁকে মেয়ে অসুস্থ্য বলে সংবাদ দেন। কিন্তু তারা এসে শাহিনুরকে এরশাদ উল্যাহর বসত ঘরের বারান্দায় চাদর দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় আবু তাহের ও এরশাদ উল্যাহ বলেন শাহীনুর আত্মহত্যা করেছে এবং কোনো মামলা করার প্রয়োজন নেই বলে চাপ প্রয়োগ করেন। এরপরে শহীদুল্লাহর বিষয়টি সন্দেহ হলে কচুয়া থানা পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করেন।

এই ঘটনায় ১ মার্চ ২০১৫ তারিখে শাহিনুরের পিতা শহীদুল্লাহ কচুয়া থানায় এরশাদ উল্যাহ ও আবু তাহের মুন্সীকে আসামী করে ৩০২/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ তাদেরকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করেন।

সরকার পক্ষের আইনীজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আমান উল্যাহ জানান, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কচুয়া থানার তৎকালীন সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তফা চৌধুরী একই বছরের ১০ ডিসেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। প্রায় ৩ বছর মামলাটি চলমান অবস্থায় আদালত ১৮জন সাক্ষীর মধ্যে ১৪ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন। সাক্ষ্য প্রমাণ ও নথি পর্যালোচনা করে বিচারক আসামিদের উপস্থিতিতে শাহিনুরের স্বামী এরশাদ উল্যাহকে মৃত্যুদণ্ড এবং চাচা আবু তাহের মুন্সীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করেন।

সরকার পক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) ছিলেন মোক্তার আহম্মেদ এবং আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন সেলিম আকবর।

ঢাকাটাইমস/১৭জুলাই/প্রতিনিধি/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :