বামদের নতুন জোট, উদ্দেশ্যের মধ্যে ‘ভোট বর্জন’

প্রকাশ | ১৮ জুলাই ২০১৮, ১৫:৩০

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নতুন জোট গঠনের ঘোষণা দিল আটটি বাম দল। জাতীয় নির্বাচনের বছরে ‘বাম গণতান্ত্রিক জোট’ নামে এই জোটের উদ্দেশ্য অবশ্য ভোট নয় বলে জানিয়েছেন নেতারা। এমনকি ভোট বর্জনও তাদের একটি উদ্দেশ্য হতে পারে।

মঙ্গলবার রাজধানীর পল্টনে মুক্তি ভবনের নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। জোটের আছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি সিপিবি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশ ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লিগ, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক আন্দোলন।

সেলিম বলেন, ‘আমাদের জোট ভোটেরসর্বস্ব জোট নয়, ইলেকশন আমাদের সামগ্রিক আন্দোলনের অংশ। এটাতে আমরা অংশগ্রহণও করতে পারি, আবার আন্দোলনের স্বার্থে আমরা নির্বাচনকে বয়কটও করতে পারি।’ 

‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় কাজ হলো নির্বাচনটিকে প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে আমরা একটা শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলব। নির্বাচন কমিশনসহ যেসব জায়গায় প্রয়োজন সেখানে আমরা লাগাতার অবরোধসহ আরও শক্তিশালী কর্মসূচি দিয়ে আমাদের দাবিগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’

‘আমাদের এই কর্মসূচি শুধুমাত্র ঢাকা সীমাবদ্ধ থাকবে না, এটা সারা দেশে ছড়িয়ে দেয়া হবে। আমরা নির্বাচন ব্যবস্থার আমুল সংস্কার চাই এবং নির্বাচনে টাকার খেলা, পেশীশক্তির ব্যবহার বন্ধ করতে চাই।’

লিখিত বক্তব্যে জোটের প্রথম সমন্বয়ক বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, ‘বর্তমান শাসক জোর করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অত্যাচার, নির্যাতন, হয়রানিমুলক মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তার রিমান্ডের নামে শারীরিক মানসিক নির্যাতন গুম খুন ও বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড এখন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে।’

‘এখন গোট নির্বাচনী ব্যবস্থাকে একটি প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে, আইনের শাসনকে বিদায় দেয়া হচ্ছে, বিরাধী দল ও মতকে গায়ের জোরে দমন করা হচ্ছে। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ ও ভীতি প্রদর্শনের অশুভ তৎপড়তা জোদার করা হয়েছে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আজ গুরুতর হুমকির মুখে।’

সুচনা বক্তব্য দেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, ‘উন্নয়নের আকাশ দেখিয়ে জমিনে মানুষের পকেট কাটা হচ্ছে। ক্ষমতা নিয়ে কামড়া কামড়ির বাইরেও ন্যায়সঙ্গত গণতান্ত্রিক যে কোন আন্দোলন দমন করতে করতে রাষ্ট্রকে পুলিশী রাষ্ট্রের চেহারায় দাঁড় করিয়েছে।’

‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও দলীয় সন্ত্রাস লাগামহীন চলছে। শ্রমিক-কৃষক ও তাদের সন্তান সন্তাতি প্রবাসী শ্রমিকরা বিদেশী মুদ্রা আনে, এরা আমিরি করে আর টাকা পাচার করে।’

‘কৃষক ফসল দ্বিগুণ তিনগুণ ফলায় এরা লুট করে, কৃষক অনাহারে থাকে। নারী শিশু নির্যাতন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, পাহাড় সমতলের আদিবাসী, ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা উপায়হীন হয়ে পড়েছে। শিক্ষার মানের অবনতি ও বেকার সমস্যা ক্রমবর্ধমান। এভাবে সমস্যা বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না, চাই সমাধান। তা করতে হলে শুধু এক হাত থেকে আরেক হাত ক্ষমতা বদল নয়, গোটা ব্যবস্থাপনার আমূল বদল করতে হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জোটের প্রথম সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য হিসেবে থাকছেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, শাহ আলম, খালেকুজ্জামান, বদলুর রশিদ ফিরোজ, আকবর খান, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী, ফখরুদ্দিন কবির আতিক, ফিরোজ আহমেদ, মোশারফ হোসেন নান্নু, অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার, মোশরেফা মিশু, মমিন উর রহমান বিশাল, হামিদুল হক ও রনজিৎ কুমার।

ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/জিএম/ডব্লিউবি