বৃক্ষমেলা শুরু: ঘুরে আসুন সবুজের সমারোহে
‘সবুজে বাঁচি, সবুজ বাঁচাই, নগর-প্রাণ-প্রকৃতি সাজাই’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শুরু হয়েছে জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৮।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পশ্চিমে আজ বুধবার শুরু হয়েছে মাসব্যাপী এই মেলা। চলবে আগামী ১৮ আগস্ট পর্যন্ত।
প্রতিবছরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একটি গাছের চারা রোপণ করে মেলার উদ্বোধন করেন।
মেলায় স্থান পেয়েছে ফলদ, বনজ, ঔষুধিসহ সব ধরনের গাছ। দেশীর শত শত প্রজাতির গাছের পাশাপাশি এখানে সমারোহ ঘটেছে বিদেশি গাছের। আছে গাছের বীজ ও গাছ পরিচর্যার নানা সামগ্রী ও সার।
এবারের মেলায় রয়েছে মোট ১০১টি স্টল। ১৩টি স্টল রয়েছে সরকারি সাতটি প্রতিষ্ঠানের জন্য। ব্যক্তিমালিকানাধীন নার্সারি ও বেসরকারি ৫৭টি সংস্থার স্টল রয়েছে ৭৭টি। নন-নার্সারি ৯টি প্রতিষ্ঠানের আছে ৯টি স্টল, যেগুলোতে স্থান পেয়েছে নানা হস্তশিল্প। বাকি দুটি স্টলের মধ্যে একটি মেলা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও অপরটি তথ্যকেন্দ্র।
মেলার প্রথম দিনই দেখা গেছে বৃক্ষপ্রেমিকদের আনাগোনা। কেউ কিনছেন কেউ বা দেখছেন। অনেককে পরিচিত হতে দেখা গেছে নানা প্রজাতির গাছের সঙ্গে।
জাতীয় বৃক্ষ মেলায় আসা মুনতাহা ইসলাম ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আজ মেলার শুরুর দিন হাতে সময় ছিল, তাই চলে আসলাম। অনেক অপরিচিত গাছ দেখছি। স্টল মালিক ও মালিদের কাছ থেকে এসব গাছ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছি।’
তার পুরো বাসা গাছ দিয়ে ডিজাইন করা বলে জানান মুনতাহা। বলেন, ‘এটা যেমন পরিবেশবান্ধব, তেমন সুন্দর। আমার নিজের সংগ্রহে প্রায় ১০০ প্রজাতির গাছ আছে।’
ফলদ, বনজ, ফুল ঔষধি গাছের পাশাপাশি এবারের মেলার বাড়তি আকর্ষণ অর্কিড। বিগত কয়েক বছরে দেশীয় বাজারে ভালো অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে এই উদ্ভিদ। এমনটা দাবি মেলার অর্কিড বিক্রেতাদের।
দীপ্ত অর্কিডস লিমিটেডের সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং ম্যানেজার জাকির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দেশীয় বাজারে এখন অর্কিডের বেশ চাহিদা। ক্রেতার চাহিদাকে প্রাধান্য দিয়ে আমরা নতুন কিছু জাতের অর্কিড নিয়ে এসেছি। মেলা তো মাত্র শুরু হলো, আমরা আরো কিছু নতুন জাতের অর্কিড আনব মেলায়।’
মেলা ঘুরে বেশ কিছু জাতের অর্কিড দেখা গেছে। পাঁচ ধরনের জান্ডা অর্কিড, সাত ধরনের রেন্ডুবিয়াম অর্কিড ও চার ধরনের মাকার অর্কিড। এ ছাড়া আছে প্রায় অর্ধশতাধিক প্রজাতির ক্যাকটাস উদ্ভিদ।
থাইল্যান্ডের নানা প্রজাতির আমগাছ বড় আকর্ষণ হবে এবারের মেলায়। বিক্রেতারা জানান, পালমা, কিউজাই, মহাচর্মা, সূর্য ডিম, তুতা বরিসহ বিভিন্ন জাতের দ্রুত বর্ধনশীল আমগাছ পাওয়া যাচ্ছে মেলায়। আশুলিয়া গার্ডেন সেন্টারের বিক্রেতা সনি আহমেদ দাবি করেন, দেশীয় জাতের আমগাছের চেয়ে এই আমের স্বাদ বেশি। প্রতিবছরই আম ধরে।’
পরিচিত-অপরিচিত হাজার জাতের গাছের সমাহারে সেজেছে এবারের বৃক্ষমেলা। এখন পর্যন্ত সবচেয়ে দামি গাছ থাইল্যান্ডের ‘আমলকী’। দেশীয় বাজারে খুব একটা দেখা যায় না এই গাছ। দেশি আমলকীর তুলনায় আকারে বেশ বড় হয় এই গাছের ফল। সুমী নার্সারি মেলায় এনেছে গাছটি। দাম চাইছে ৪০ হাজার টাকা।
নার্সারিটির বিক্রেতা মো. রনি ঢাকাটাইমসকে জানান, চলতি বছর আরো দামি গাছ আনতে যাচ্ছেন তারা। কয়েক দিনের মধ্যেই মেলায় এসে পৌঁছবে লাখ টাকার ‘বনসাই’ ।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুলাই/কারই/মোআ)