জার্মান কোম্পানির সঙ্গে ই-পাসপোর্ট চুক্তি সই

প্রকাশ | ১৯ জুলাই ২০১৮, ১৭:৪৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

জার্মান সরকারের সঙ্গে জিটুজি চুক্তির আওতায় বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট (ই-পাসপোর্ট) চালু করছে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে জার্মানির ‘ভেরিডোস জিএমবিএইচ’ কোম্পানির সঙ্গে চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার একটি চুক্তিতে সই করেছে বাংলাদেশ।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের পক্ষে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান ও জার্মানির পক্ষে ভেরিডোস এর মি. কুনস চুক্তিতে সই করেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল ও বাংলাদেশে সফররত জার্মান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

স্বাক্ষরিত ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে ‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা’। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরেই বিদ্যমান মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) জায়গায় নাগরিকদের হাতে পৌঁছবে এই ইলেক্ট্রনিক পাসপোর্ট।

চুক্তি অনুযায়ী প্রকল্পের মেয়াদ হবে ১০ বছর। জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস প্রথম পর্যায়ে তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। এছাড়া রাজধানীর উত্তরায় একটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট তৈরির কারখানা স্থাপন করা হবে। দেশের বিভিন্ন বন্দরে ৫০টি ই-গেট (ইলেক্ট্রনিক প্রবেশ পথ), দেশের অভ্যন্তরে ৭২টি পাসপোর্ট অফিস, ৮০টি বিদেশি মিশন, ৭২টি এসবি ও ডিএসবি (পুলিশের বিশেষ শাখা) এবং ২২টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ সব অফিসে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার-হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক প্রদান করবে জার্মানি।

প্রকল্পের আওতায় ১০০ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জার্মানিতে দুই সপ্তাহব্যাপী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া একটি দুর্যোগকালীন রিকভারি সেন্টার ও ১০ বছর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেবে জার্মানির সংশ্লিষ্ট কোম্পানিটি।

অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নে থেমে নেই আমরা। এ পর্যন্ত দুই কোটিরও বেশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বাংলাদেশি নাগরিকদের দেওয়া হয়েছে এবং ১১ লাখেরও বেশি মেশিন রিডেবল ভিসা বিদেশিদের দেওয়া হয়েছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের ৩০ জুন এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) প্রকল্প শেষ হলেও আপাতত আবেদনকারীদের এমআরপি দেয়া হবে। আশা করি, শিগগিরই ই-পাসপোর্ট প্রদান কার্যক্রম শুরু করতে পারব।'

অনুষ্ঠানে জার্মান পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিয়েলস আনেন বলেন, ‘বাংলাদেশ খুব অল্প সময়ে অনেক অর্জন করেছে। তারা (বাংলাদেশ) এখন ই-পাসপোর্টের মালিক হতে যাচ্ছে। এই চুক্তির মাধ্যমে জার্মানি কোম্পানির সহায়তায় বাংলাদেশ তার চ্যালেঞ্জের পক্ষে আরও এগিয়ে যাচ্ছে। জার্মানির ভেরিডোস কোম্পানির বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা এর আগেও আছে। আমরা বাংলাদেশিদের এ কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে দক্ষ করে গড়ে তুলতে সাহায্য করবো।’

২০১৬ সালের পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রদানের ঘোষণা দেন। এরপর প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিআইপি) তৈরি থেকে শুরু করে আনুষঙ্গিক সব কাজ দ্রুততম সময়ে শেষ করে পাসপোর্ট ও বহির্গমন অধিদপ্তর।

বাংলাদেশে ২০০৯ সাল পর্যন্ত হাতে লেখা পাসপোর্ট প্রচলিত ছিল। ২০১০ সালে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বাংলাদেশে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) দেয়া শুরু হয়। এমআরপিতে ৩৮টি নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য সম্বলিত থাকলেও এতে জালিয়াতির সুযোগ থেকে যায়। অভিবাসন প্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে ই-পাসপোর্ট প্রবর্তন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৯ জুলাই/এনআই/এমআর)