কনক্রিটের নগরে সবুজের সমারোহ

রহমান আরিফ, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৮, ০৯:৫৪ | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০১৮, ০৯:৫০

ফুল, ফল আর বিভিন্ন গাছে ছেয়ে গেছে প্রাঙ্গণ, ভরে গেছে সবুজের সমারোহে। সবুজের পরশ নিতে ইট-পাথরের যান্ত্রিক জীবনে এক ফুরসত নিতে মেলা প্রাঙ্গণে ছুটে যাচ্ছেন নগরীর অনেক ব্যস্ত মানুষ। নানা বয়সী বৃক্ষপ্রেমীদের আগমনে জমে ওঠতে শুরু করেছে জাতীয় বৃক্ষমেলা ২০১৮।

গত ১৮ জুলাই থেকে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে শুরু হয়েছে বৃক্ষমেলা। উদ্বোধনের দিন লোক সমাগম কিছুটা থাকলেও দ্বিতীয় দিন মেলা প্রাঙ্গণে ক্রেতা-দর্শনার্থীর ভিড় ছিল অনেকটা কম। প্রচণ্ড গরম হওয়ায় বৃক্ষপ্রেমীদের ঢল ছিল অনেকটা কম। যারা এসেছেন তারা ঘুরে ঘুরে গাছের খোঁজ করছেন। প্রয়োজনমতো অনেকে গাছ কিনছেনও। ছুটির দিন হওয়ায় আজ মেলা প্রাঙ্গণে দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়বে বলে আশা করছেন মেলার আয়োজকরা।

সবুজে বাঁচি, সবুজ বাঁচাই, নগর-প্রাণ-প্রকৃতি সাজাই’ এই প্রতিপাদ্যেকে সামনে রেখে এবারের মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের বৃক্ষ মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, বাণিজ্য মেলার মাঠ হিসেবে পরিচিত পুরো মাঠটিই যেন সেজেছে সবুজের সাজে। সবুজ পাতার ফাঁকে ফল বা ফুলের উঁকি-ঝুঁকি দেখে গাছ কেনার লোভ সামলানো দায়। কোন কোন গাছেতো পাতার থেকেও ফল বেশি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নবোদয় হাউজিং থেকে সাজ্জাদ, রতন, আলমগীর, ফয়সালসহ একদল শিশু মেলায় এসেছে। এদের মধ্যে ফয়সাল ঢাকাটাইমসকে জানায়, গাছের মধ্যে আম গাছ তার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। আর মেলায় ছোট ছোট গাছে অনেক আম ধরে থাকে, সেটা দেখতে তার খুবই ভালো লাগে। তার বলা শেষ হবার আগেই রতন বলল, ডালিম ও লটকন গাছ তার পছন্দ। তারা প্রতিবছরই দল বেঁধে এ মেলায় আসে বলে জানায় দলের আরেকজন।

এদের সাথে কথা বলতে বলতেই পাশ দিয়ে আরো দুই শিশু ঝুড়ি (টুকরি) হাতে যাচ্ছিলো। জিজ্ঞাসা করতেই তারা বললো, মেলা থেকে ক্রেতার কেনা গাছ তারা গাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। এতে ক্রেতারা খুশি হয়ে তাদের কিছু টাকা দেয়। এ থেকে তাদের ভালোই আয় হয়।

তিনবার জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত গ্রীন ল্যান্ড নার্সারির মালিক হারুন অর রশীদ ঢাকাটাইমসকে জানান, মাত্র দ্বিতীয় দিন হলেও মেলা ভালোই জমেছে। তবে এখন ক্রেতার থেকে দর্শনার্থীই বেশি। শেষের দিকে বেঁচা-বিক্রি আরো বাড়বে বলে জানান তিনি। মেলায় কারা বেশি গাছ কেনে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তরুণদের তুলনায় বয়স্ক আর শিশুরাই বেশি গাছ কেনে। শিশুরা অভিভাবকদের সঙ্গে এসে পছন্দ মতো গাছ কেনে। আর অভিভাবকরা তাদের পছন্দের যথাযথ মূল্যায়ন করে।

তার নার্সারিতে সব ধরনের গাছ পাওয়া যায় বলে জানান হারুন। তবে বিদেশি ড্রাগন ফ্রুটস গাছ দুইশ থেকে চার হাজার টাকা, ব্ল্যাব বেরি প্রায় পাঁচ হাজার টাকা, অলিভ জয়তুন গাছ সর্বনিম্ন আট হাজার টাকা বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া, পোলাউ পাতা, কারি পাতা, তেজ পাতা দারুচিনিসহ বিভিন্ন মসল্লার গাছও বিক্রি করেন তিনি। এগুলোর দাম পড়বে একশ থেকে আড়াইশ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া তার কাছে সর্বনিম্ন তুলশি গাছের দাম ৫০ টাকা আর সর্বোচ্চ দেশীয় বট বনশাই গাছের দাম চার লাখ টাকা।

রাজধানীর মহাখালীর ডিওএইসএস থেকে মনোয়ারা মনসুর এসেছেন গাছ কিনতে। তিনি অনেক দামাদামি করে বিডিং হার্ট ও নাইট কুইন গাছ কিনেছেন। গাছ লাগানো ও গাছের পরিচর্যা করা তার নেশা বলে ঢাকাটাইমসকে জানান তিনি। সময় পেলেই তিনি বৃক্ষ মেলা ও নার্সারিতে যান বলেও জানান তিনি।

এছাড়া কুমিল্লা থেকে ঢাকার আত্মীয়ের বাসায় বেড়াতে এসেছেন লাবনি। সুযোগ পেয়ে তিনিও আত্মীয়ের সাথে মেলায় এসেছেন। মেলা কেমন লাগছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, একসঙ্গে এতো ধরনের গাছ কখনো দেখিনি। অনেক অপিরিচিত গাছের সাথেও পারিচিত হতে পেরে ভালো লাগছে। বিশেষ করে ছোট ছোট গাছে ফল ধরে আছে দেখলেই মন ভালো হয়ে যায়।

ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/এআর/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

ফিচার বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :