বিএনপির সমাবেশে সরকারকে ‘ভয়াবহ পরিণতির’ সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২০ জুলাই ২০১৮, ২১:৫২ | প্রকাশিত : ২০ জুলাই ২০১৮, ২১:২৭

বর্তমান সরকারের পরিণতি ‘ভয়াবহ’ হবে বলে সতর্ক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। অন্যদিকে দলের আরেক নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন ভয় দেখিয়েছেন গণ অভ্যুত্থানের।

শুক্রবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশে এই হুঁশিয়ারি দেয়া হয়। বেগম খালেদা জিয়াসহ দলের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ‘সুচিকিৎসার’ দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

গত কয়েক মাসে পুলিশের অনুমতি না পাওয়ায় বেশ কিছু ঘোষিত সমাবেশ করতে পারেনি বিএনপি। তবে আজকের সমাবেশটি তারা করেছে নির্বিঘ্নে। বিকাল তিনটায় সমাবেশ শুরু হলেও জুমার নামাজের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসতে থাকেন নেতা-কর্মীরা। এক পর্যায়ে দলীয় কার্যালয়ের সামনের সড়ক নেতা-কর্মীদের ভিড়ে বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপির সাম্প্রতিক যে কোনো জমায়েতের তুলনায় আজকের সমাবেশটি ছিল বড়।

সমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতারা তাদের নেত্রীকে মুক্ত করে দেয়ার দাবি করে বলেন, খালেদা জিয়াকে ছাড়া নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।

দশম সংসদ নির্বাচনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘গতবার খালি মাঠে গোল দিয়েছেন, এবার খালি মাঠে গোল দেয়ার চেষ্টা করবেন না। ভয়াবহ পরিণতি অপেক্ষা করছে।’

‘বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়েই আমরা নির্বাচনে বিজয় অর্জন করব, গণমানুষের নেত্রী ছাড়া এ দেশে কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বরিশালে পুলিশ কমিশনারের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ধরে ঢাকার এক আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি। কি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্যে দেশে আমরা বাস করছি! এই রকম ঘটনা দেশে হবে ভাবতেও পারি নাই। দেশের মানুষের নিরাপত্তা কোথায় এনেছে ক্ষমতাসীনরা!’

‘বাংলাদেশে ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনা, এই সোনা কেমনে পাল্টে গেল? কেউ কয় তামা, কেউ কয় মাটি হয়ে গেছে। লুটপাট, খুন, হত্যা, জখম,গুম এখন নিত্ত নৈমেত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। অসংখ্য নেতাকর্মী জেলে আছে, বিএনপি নেতাদের ধ্বংস করতে গুম করা হচ্ছে। এসব কিছু থেকে পরিত্রান পেতে দেশের জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায় করবে।’

সমাবেশে দলে দলে অংশ নেন নেতাকর্মীরা। ছবি সংগৃহীত

খালেদা জিয়া কেমনে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় কারাগারে আছেন তা অনুভব করতে প্রধানমন্ত্রীকে বলেন মির্জা আব্বাস। বলেন, ‘একজন অসুস্থ একজন মানুষ কী করে আছেন কারাগারে? তারপরও আমাদের নেত্রী ভেঙে পরেন নাই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে বলেছেন।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশারফ হোসেন। বলেন, ‘গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধারের জন্য খালেদা জিয়ার মুক্তি প্রয়োজন। সোজা আঙ্গুলে ঘি উঠবে না। জনগণের অভ্যুত্থানের জন্য মানুষ অপেক্ষা করছে, ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে। সেই জনগণের সাথে রাস্তায় থাকব।’

‘সরকার বিচার বিভাগ ও প্রশাসন যন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু এ দেশের জনগণ আর তাদের ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া এই দেশে আর কোন নির্বাচন হতে দেবে না, দেবে না, দেবে না।’

‘সারা বিশ্বে বাংলদেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায়। কিন্তু খালেদা জিয়াকে ছাড়া এই দেশে কোন অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে না। এ্ই রকম প্রহসনের নির্বাচন আবার করলে, জনগণ বসে থাকবে না।’

মোশারফ বলেন, ‘তিনটি সিটি নির্বাচন খুলনা ও গাজীপুর মডেলের করতে চায় তারা। নিজেরা নিজের ভোটে পাস করবে, এটাই হলো গাজীপুর খুলনা মডেলের নির্বাচন। আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যদি শেখ হাসিনার অধীনে হয়, তবে একই দশা হবে।’

‘নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়ার মুক্তি দিতে হবে। নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে। সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন পৃথিবীর কোথাও নেই। নির্বাচনের কিছু দিন ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ারসহ সামরিক বাহিনী মোতায়েন করতে হবে।’

রাষ্ট্রের নির্বাহী ও আইন বিভাগ ধ্বংস হয়ে গেছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতা বলেন, “একটা অকেজো পার্লামেন্ট হয়েছে। বিচার বিভাগও সম্পূর্ণ রূপে ধ্বংস, যার কারণে খালেদা জিয়া জামিন পাচ্ছেন না। বিচার বিভাগ স্বাধীন থাকলে ‘মিথ্যা মামলায়’ সাজা হতো না, সাজা হলেও জামিন পেতেন।”

ঢাকাটাইমস/২০জুলাই/জিএম/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :