রাজশাহীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১৬ দফা ইশতেহার

প্রকাশ | ২১ জুলাই ২০১৮, ১৭:৪০

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

‘পরিবর্তন সম্ভব, পরিবর্তন চাই’ -এই শ্লোগান নিয়ে ১৬ দফা ইশতেহার ঘোষণা করলেন রাজশাহী সিটি নির্বাচনের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মুরাদ মোর্শেদ। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরীর একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি তার ইশতেহার ঘোষণা করেন।

রাজশাহী সিটি নির্বাচনের পাঁচ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মুরাদ মোর্শেদই একমাত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে তাকে সমর্থন দিয়েছে বামপন্থী সংগঠন গণসংহতি আন্দোলন ও রাজশাহী গণমঞ্চ। পেশায় আইনজীবী মুরাদ গণসংহতি আন্দোলনের রাজশাহী জেলা শাখার আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ইশতেহার ঘোষণার সময় মুরাদ মোর্শেদ বলেন, আমি নির্বাচিত হলে নাগরিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠা হবে নগর সংস্থার প্রধান কাজ। মানুষ বিনা হয়রানিতে তার সেবা বুঝে নেবেন। এই বক্তব্যের ওপর দাঁড়িয়ে আমরা সবাইকে ছাড়িয়ে যেতে চাই।  একটা মানবিক, পরিচ্ছন্ন, প্রকৃতিবান্ধব, নারী ও শিশুর প্রতি দায়িত্বশীল এবং তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থানের নগরী প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমরা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।

মুরাদ মোর্শেদ তার ইশতেহারে বলেছেন, দুর্নীতিমুক্ত ও জনগণের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে নগর প্রশাসন পরিচালনা হবে সিটি করপোরেশনের মূলনীতি। প্রতিষ্ঠা করা হবে সব শ্রেণির নাগরিকের অধিকার। প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষায় আছে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা। গণপরিবহন থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে যুক্তিসঙ্গত ভাড়াও নির্ধারণ করতে চান তিনি। খাদ্যে ভেজাল ও বিষক্রিয়া রোধে থাকবে জোরালো পদক্ষেপ।

এছাড়া নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য পরিসেবার ওপর নজর রেখে মানুষকে সুন্দর নগরী উপহার দিতে চান তিনি। নাগরিক সেবা নিশ্চিতে গঠন করা হবে স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী। পদ্মাপারের এই শহরকে সংস্কৃতি ও বিনোদনের অঞ্চলে পরিণত করতে তিনি গ্রহণ করবেন নানামুখি পদক্ষেপ। প্রতিটি কাজের জন্য থাকবে জবাবদিহিতা। নগরবাসীর মতামত সংগ্রহ করে বিশেষজ্ঞ পর্ষদ গঠন করে কাজ করতে চান তিনি।

মুরাদ মোর্শেদ তার ইশতেহারে অঙ্গীকার করেছেন, ভারত থেকে পদ্মার পানির নায্য হিস্যা আদায়ে জনমত গঠনেরও কাজ করবেন তিনি। দুর্নীতি, চাঁদাবাজি রোধ এবং নগর সংস্থার আয় বৃদ্ধি করতেও নিরলসভাবে কাজ করবেন। রাজশাহীকে তিনি এমন নগরীতে পরিণত করতে চান, যেখানে শিশুরা নিরাপদে স্কুলে যাবে, তরুণ-তরুণীরা থাকবে কর্মচঞ্চল। নারীরা চলাচল করবেন কোনো ভয়ভীতি ছাড়াই।

মুরাদ মোর্শেদ বলেন, আমরা মানুষের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়েও চিন্তা করি। আমি মেয়র হলে নগর সংস্থার উদাসীনতায় কোনো নাগরিকের কিছু ক্ষতি হলে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে সিটি করপোরেশন বাধ্য থাকবে। সিটি করপোরেশনে দুর্নীতির মাধ্যমে যে পরিমাণ টাকা লোপাট হয়, সেটা রোধ করেই মানুষের এই সেবা নিশ্চিত করতে চাই। বাস্তবায়ন করতে চাই ইশতেহারের সব প্রতিশ্রুতি।

ইশতেহার প্রকাশের সময় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকিও উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, এ দেশের মানুষ একটা আকাঙ্খা নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু সেই আকাঙ্ক্ষা এখনও পূরণ হয়নি। লুণ্ঠনের একটা চক্র দেশে দাপটের সঙ্গে টিকে থাকছে। যখন রাস্তায় নামি তখন বুঝতে পারি, মানুষ চক্রটাকে ঘৃণা করে। এ জন্যই আমরা লড়াইটা চালিয়ে যেতে চাই।

সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী গণমঞ্চের আহ্বায়ক মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসনাত বেগ, নদী ও পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট এনামুল হক, বাসদের জেলা শাখার আহ্বায়ক আলফাজ হোসেন, রাজশাহী গণমঞ্চের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম, আনোয়ার হোসেন, এমএ মতিন ও হাবিবুর রহমানসহ মুরাদ মোর্শেদের কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন।

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/আরআর/জেবি)