বিএনপির অভিযোগ, তিন এমপিকে সতর্ক করল ইসি

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
| আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৮, ২২:২৯ | প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০১৮, ২২:১৮

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর নির্বাচন কমিশনে (ইসি) বেশ কয়েকটি অভিযোগ করেছে বিএনপি। তবে বেশির ভাগ অভিযোগই সুনির্দিষ্ট নয় বলে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেনি ইসি। তবে এবার ইসিতে একটি ‘সুনির্দিষ্ট’ অভিযোগ দিয়েছে দলটি।এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার দলীয় তিন এমপিকে মৌখিকভাবে সতর্ক করেছে ইসি।

বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে রাজশাহীর এক সমাবেশ থেকে রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি কাজী আবদুল ওয়াদুদ দারা এবং নাটোর-২ আসনের এমপি শফিকুল ইসলাম শিমুল নৌকা প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন।

এমপিদের এমন আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ দিতে শনিবার বিকালে খোদ বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তরে যান। তার সঙ্গে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনুসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

তবে লিখিত অভিযোগ দেন বুলবুলের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট ও জেলা বিএনপির সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন তপু।

বিএনপির এই অভিযোগে মোট আটটি অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমেই রয়েছে তিন এমপির নির্বাচনী সমাবেশ করার বিষয়টি। অন্য অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি। এছাড়া একের পর এক অভিযোগ করেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় ইসির বিরুদ্ধেই অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে অভিযোগপত্রের আট নম্বরে।

বিএনপির অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত শুক্রবার রাতে মহানগর যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম হারু, ৯ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নেতা শিবলী, রাজপাড়া থানা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম আপেলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ভোরে মহানগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খন্দকার ওয়ায়েস করনী ডায়মন্ড, ২৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইফতিয়ার মাহমুদ বাবুকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া দুপুরে ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি গোলাম নবী গোলাপকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কোনো মামলা বা পরোয়ানা ছাড়াই এসব নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি।

বিএনপির অভিযোগ দাখিলের সময় সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলাম তার দপ্তরে ছিলেন না। তাই বিএনপি নেতারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমানের কাছে অভিযোগপত্রটি হস্তান্তর করেন। এ সময় তারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কিছু সময় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনাও করেন।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, তিন এমপির নির্বাচনী সমাবেশ করার বিষয়টি তুলে ধরে বিএনপি নেতারা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তাদের আশ্বস্ত করেন। এরপর বিএনপি নেতারা বলেন, তাদের কোনো অভিযোগের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। তখন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, সব ঘটনার তদন্ত করা হচ্ছে। সত্যতা না পাওয়ায় বেশিরভাগ অভিযোগের ব্যাপারে কিছু করা যাচ্ছে না।

এরপর বিএনপি নেতারা বলেন, কোনো অভিযোগ ছাড়াই তাদের নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা তাদের বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত পুলিশ তাদের অধীনে থাকলেও যদি কোনো আগের মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাহলে এ ব্যাপারে ইসির কিছু করণীয় নেই। যেসব নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে থানায় আগে থেকে মামলা আছে বলে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছেন। তাই এ ব্যাপারেও ইসির কিছু করণীয় নেই।

বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমরা ইসিতে সুনির্দিষ্ট কিছু অভিযোগ দিয়ে এসেছি। ইসি কী ব্যবস্থা নিচ্ছে তা দেখার জন্য অপেক্ষা করছে। আমরা ইসির প্রতি কখনোই আস্থা হারাতে চাই না। আমরা চাই, তারা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সুন্দর একটা নির্বাচন উপহার দিক। তাতে জনগণের মতের প্রতিফলন ঘটুক। কিন্তু নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে তার দায় ইসিকেই নিতে হবে।

বিএনপির অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা আতিয়ার রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, বিএনপির সব অভিযোগই তদন্ত করা হয়। বেশিরভাগ সময়ই কোনো সত্যতা পাওয়া যায় না। তবে এবার তারা তিন এমপির বিরুদ্ধে একটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দিয়েছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তিন এমপিকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। তারা আগামীতে প্রচারে অংশ নেবেন না বলে কথা দিয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/আরআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজশাহী ও সিলেট সিটি নির্বাচন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা