রাসিক ওয়ার্ড ১৩-১৪

১০ কাউন্সিলর প্রার্থীর জমজমাট প্রচার

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২২ জুলাই ২০১৮, ০৮:৩৪

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) প্রতিটি ওয়ার্ডেই চলছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা। কাউন্সিরলর প্রার্থীরা দিচ্ছেন উন্নয়ন আর নাগরিক ভোগান্তি দূর করার নানা প্রতিশ্রুতি। নগরীর ১৩ ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ প্রার্থীর প্রতিশ্রুতি আর গণসংযোগে জমজমাট হয়ে উঠেছে প্রচারণা।

নগরীর ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটারসংখ্যা ৬ হাজার ৬৭০ জন। এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে লড়ছেন তিনজন প্রার্থী- বোয়ালিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বর্তমান কাউন্সিলর রবিউল আলম মিলু (ঠেলাগাড়ি), মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মমিন (লাটিম) এবং জামায়াত নেতা মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম (ঘুড়ি)।

রবিউল আলম মিলু ও আবদুল মমিনের মধ্যে মূল লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখছেন ভোটাররা। রবিউল আলম মিলু ২০০২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেন। ভোটারদের অভিযোগ, দীর্ঘ সময় দায়িত্বে থাকলেও তিনি ওয়ার্ডের কাক্সিক্ষত উন্নয়নে ব্যর্থ হয়েছেন। বিএনপির এই নেতার বিরুদ্ধে পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ হত্যাসহ সাতটি মামলা রয়েছে।

তার ওয়ার্ডে কাক্সিক্ষত উন্নয়ন না হওয়ার কথা অস্বীকার করছেন না মিলু। তবে এ জন্য তিনি মামলার জটিলতাকে কারণ হিসেবে সামনে আনছেন। তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ ২০১৩ সালের জুনে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মামলাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে এলাকায় সময় দিতে পারিনি। এ কারণে উন্নয়নমূলক কর্মকা- ব্যাহত হয়েছে। তবে এবার নির্বাচিত হতে পারলে নাগরিক দুর্ভোগ নিরসনে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।’

অপর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আবদুল মমিন মহানগর ছাত্রলীগেরও সভাপতি ছিলেন। দীর্ঘদিন রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় তার রয়েছে বিশাল কর্মীবাহিনী। এটি তার নির্বাচনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আবদুল মমিন বলেন, ‘রাজশাহী মহানগরীর মধ্যে আমাদের ওয়ার্ডটিতে শিক্ষা ও ব্যবসাসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নগর ভবনও এই ওয়ার্ডে। এলাকার উন্নয়নে একজন তরুণ ও পরিশ্রমী কাউন্সিলর প্রয়োজন। মূল শহর হিসেবে এ ওয়ার্ডের যে উন্নয়ন হওয়া দরকার ছিল তা হয়নি। তাই ওয়ার্ডটিকে ঘিরে আমার অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমি কাউন্সিলর নির্বাচিত হলে নিশ্চিত করতে চাই নাগরিক সেবা।’ ভোটাররা তাকে নির্বাচিত করবেন বলে আশা করছেন তিনি।

ওয়ার্ড ১৪

নগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ডেও চলছে নির্বাচনী তোড়জোড়। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী রয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় চারজন- আবুল কালাম আজাদ (ট্রাক্টর), আনোয়ার হোসেন আনার (ঠেলাগাড়ি), কুরবান আলী (ব্যাডমিন্টন র‌্যাকেট) ও মুরাদ আলী (মিষ্টি কুমড়া)। বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত দুই প্রার্থী হলেন বর্তমান কাউন্সিলর মো. টুটুল (লাটিম) এবং সুলতান আলী (ঘুড়ি)। এ ছাড়া আমিনুল ইসলাম নামে একজন জামায়াত সমর্থিত প্রার্থী ‘টিফিন ক্যারিয়ার’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনের লড়াইয়ে আছেন।

কর্মোদ্যোগী ও পরোপকারী ব্যক্তি হিসেবে পরিচিতি রয়েছে ১৪ নম্বর ওয়ার্ড (পশ্চিম) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন আনারের। তেরখাদিয়া পশ্চিমপাড়া এলাকার ভোটার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আনার সাধারণ মানুষের পাশে থাকেন। যেকোনো বিপদে ডাকলে তাকে পাওয়া যায়। এ কারণে বয়সে তরুণ এ প্রার্থীর প্রতি সাধারণ ভোটারদের আগ্রহ রয়েছে।’

আনোয়ার হোসেন আনার বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডের বড় একটি অংশ এখনো উন্নয়নবঞ্চিত। এলাকায় জলাবদ্ধতা ও ভাঙাচোরা রাস্তাঘাটের কারণে মানুষ কষ্ট পায়। এ ছাড়া মাদকদ্রব্য বিক্রি ও ছিনতাইও বড় সমস্যা। ওয়ার্ডটিকে মাদক ও ছিনতাইমুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার।’ নাগরিক দুর্ভোগ দূর করে একটি মডেল ওয়ার্ড গঠনে তার অঙ্গীকারের প্রতি ভোটাররা সমর্থন দেবেন বলে বিশ্বাস করেন তিনি।

কিছুটা নাগরিক দুর্ভোগ রয়েছে স্বীকার করে বর্তমান কাউন্সিলর মো. টুটুল বলেন, ‘কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার পর একদ- শান্তি পাইনি। আমার বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়েছে। উন্নয়ন করার জন্য টাকা পাইনি। এ কারণে উন্নয়ন কর্মকা- কিছুটা হলেও ব্যাহত হয়েছে।’

তবে আগামী দিনে নির্বাচিত হলে জনদুর্ভোগের বিষয়টি অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে এলাকার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন বলে জানান টুটুল। বলেন, এলাকায় এখনো কাঁচা রাস্তা আছে। আগে সেগুলো পাকা করতে চাই।’

এ ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল কালাম আজাদও ভোটারদের আলোচনায় রয়েছেন। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় কুরবান আলী ও মুরাদ আলী জোরেশোরে এলাকায় গণসংযোগ করছেন।

বিএনপি সমর্থক সুলতান আলী এবং জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলামও দিনভর গণসংযোগের মাধ্যমে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন। তবে তাদের ব্যাপারে আগ্রহ কম ভোটারদের।

এ ওয়ার্ডের বাসিন্দা জমসেদ আলী বলেন, ‘আমাদের ওয়ার্ডে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। পুরো রাস্তাঘাট কাঁদা হয়ে যায়। তখন চরম দুর্ভোগ দেখা দেয়। এলাকায় মাদকের কেনাবেচাও বেড়েছে। এসব সমস্যা যিনি মোকাবিলা করতে পারবেন আমরা তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করব।’

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :