রাজশাহী সিটির ১৭-১৮ ওয়ার্ড

‘পিছিয়ে পড়া’ ওয়ার্ড দুটিকে এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি

প্রকাশ | ২৩ জুলাই ২০১৮, ১৩:২৪ | আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৮, ১৩:৫৩

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী

রাজশাহী মহানগরীর পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ডগুলোর মধ্যে ১৭ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ড দুটি অন্যতম। এ দুটি ওয়ার্ড দিয়ে উত্তরে শহর ক্রমাগত সম্প্রসারণ হওয়ায় ওয়ার্ড দুটিতে যোগ্য প্রার্থীকে কাউন্সিলর নির্বাচন ভোটারদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ভোটারের মন জয়ে প্রার্থীরাও দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি।

নগরীর উত্তর পাশে মধ্য নওদাপাড়া, বড়বনগ্রাম ভাড়ালিপাড়া, মাস্টারপাড়া ও উত্তর নওদাপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি মহল্লা নিয়ে ১৭ নম্বর ওয়ার্ড গঠিত। আগামী ৩০ জুলাইয়ের সিটি নির্বাচনে এ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হয়েছেন চারজন। তারা হলেন- সাবেক কাউন্সিলর শাহমখদুম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত আলী শাহু (ঘুড়ি), বর্তমান কাউন্সিলর বিএনপি সমর্থক মুনজুর হোসেন (লাটিম) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী আইয়ুব আলী (ঠেলাগাড়ি) ও জিল্লুর রহমান (ট্রাক্টর)।

শাহাদত আলী শাহু ১৯৮৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত এ কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে তিনি পরাজিত হন। এবারের প্রার্থিতা নিয়ে শাহাদত আলী শাহু বলেন, আমি দীর্ঘ সময় এ এলাকার জনপ্রতিনিধি ছিলাম। বিদ্যুৎ, পানি, রাস্তা, ড্রেন, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যসহ প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি, অতীতের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ভোটাররা আমাকে আবারও নির্বাচিত করবেন।

বর্তমান কাউন্সিলর মুনজুর হোসেন বলেন, কিছু দিন আগে আমার ওয়ার্ডে উন্নয়নের জন্য ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। সাড়ে চার কোটি টাকার কাজ চলছে। এই টাকার পুরো কাজটি করে এলাকার উন্নয়ন করতে চাই। এলাকায় বিদ্যুৎহীন লোক রয়েছে। তাদের ঘরে বিদ্যুৎ দিতে চাই। ভাল প্রাথমিক স্কুল নেই। সেটিও করতে চাই। কয়েকটি ড্রেন দরকার। এগুলো করে দুর্ভোগ দূর করতে চাই। তাই ভোটাররা আমাকে ভোট দেবেন বলে আমি আশাবাদী।

এছাড়া এ ওয়ার্ডের আরও দুই প্রার্থী আইয়ুব আলী ও জিল্লুর রহমান। তারাও নির্বাচনী কর্মকাণ্ড অব্যাহত রেখেছেন। পিছিয়ে পড়া এ এলাকার উন্নয়নে যিনি সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন, ভোটাররা তাকেই নির্বাচিত করার কথা জানিয়েছেন।

ভোটের এ তৎপরতা থেকে পিছিয়ে নেই ১৮ নম্বর ওয়ার্ডও। এ ওয়ার্ডটিতে ভোটযুদ্ধে কাউন্সিলর প্রার্থীদের প্রায় সবাই বিএনপি সমর্থক। এ ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম মনিরুজ্জামান (ঘুড়ি)। অন্য প্রার্থীরা হলেন- বর্তমান কাউন্সিলর মনির হোসেন (মিষ্টি কুমড়া), সাবেক কাউন্সিলর মো. মাসুদ (টিফির ক্যারিয়ার), মকসেদ আলী (ট্রাক্টর), ফাইজুল হক ফাহি (রেডিও), আবদুল মোমিন ওয়াহিদ হিরো (লাটিম), আবদুল্লাহ-আল-মোস্তফা (ঝুড়ি) এবং শহিদুল ইসলাম (ঠেলাগাড়ি)।

এদের মধ্যে অনেকেই রাজশাহী মহানগর এবং ওয়ার্ড বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা। কোনো দল করেন না এমন একমাত্র প্রার্থী মো. রন (এয়ারকন্ডিশনার) নামে একজন ব্যক্তি। প্রার্থী মাসুদের নামে দুটি মামলা বিচারাধীন। এছাড়া মনিরের নামে দুটি, মোস্তফার একটি, রনের তিনটি এবং শহিদুলের নামে একটি করে মামলা আছে। তবে এসব প্রার্থীরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন মাদকমুক্ত, সন্ত্রাস, ছিনতাইমুক্ত এক ওয়ার্ড গড়ে তোলার।

এ ওয়ার্ডে কমিশনার এবং কাউন্সিলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন বিএনপি সমর্থক মো. মাসুদ। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘ ২২ বছর ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছি। ২০১৩ সালের নির্বাচনে সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছি। আমি জনপ্রতিনিধি থাকাকালে এলাকার উন্নয়নে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। সেসব ভোটারদের ভাল লেগে থাকলে তারা ভোট দিবে, না হলে বয়কট করবে। তবে আমি আমার জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।

গত সাড়ে চার বছর থেকে এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপি নেতা মনির হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের এলাকাটি অবহেলিত। নগরীর একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে এ এলাকার অবস্থান। বিএনপির মেয়র নির্বাচিত হওয়ার কারণে আমি গত সাড়ে চার বছরে পাহাড়সম সমস্যার সমাধান করতে পারিনি। আগামীতে আমি নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়নে পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাব। এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মেয়র নির্বাচিত হলে সমস্যাগুলোর সমাধান করা ব্যাপার না।

নগরীর আসাম কলোনি, পবাপাড়া, পবা নতুনপাড়া, ফিরোজাবাদ ও এর আশপাশের কয়েকটি মহল্লা নিয়ে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। এ ওয়ার্ডে সাবেক কাউন্সিলর মো. মাসুদ ও শহিদুল ইসলাম এবং বর্তমান কাউন্সিলর মনির হোসেনের মধ্যেই ভোটযুদ্ধের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা।

পবা নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা কলেজশিক্ষক তৌফিকুর রহমান বলেন, যে তিনজন প্রার্থী ভালো অবস্থানে আছেন, তারা কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদের ব্যাপারেই ভোটাররা চিন্তা-ভাবনা করছেন। সবচেয়ে পরিশ্রমি ব্যক্তিকেই তিনি ভোট দেবেন।

ঢাকাটাইমস/২২জুলাই/আরআর/এমআর