কয়লা ‘গায়েব’: ১৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১৪:১৩ | প্রকাশিত : ২৫ জুলাই ২০১৮, ১১:৩৩

দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে এক লাখ ৪২ হাজার মেট্রিকটন কয়লা গায়েব কেলেঙ্কারির ঘটনায় খনির সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদসহ ১৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ১২টায় পার্বতীপুর মডেল থানায় দুর্নীতি দমন আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারায় মামলাটি করেছেন খনির ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) আনিছুর রহমান।

অভিযোগে যাদের নাম দেয়া হয়েছে তারা হলেন খনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক (বর্তমানে ওএসডি) প্রকৌশলী হাবিব উদ্দিন আহমদ, সাময়িক বরখাস্ত মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খালেদুল ইসলাম, সাময়িক বরখাস্ত উপ-মহাব্যবস্থাপক (স্টোর) আবুল কাশেম প্রধানিয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক কোম্পানি সচিব মোশারফ হোসেন, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (প্রডাকশন ম্যানেজমেন্ট) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) জাহিদুল ইসলাম, ব্যবস্থাপক (ডিজাইন, কন্সট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেনেন্স) একরামুল হক, উপ-ব্যবস্থাপক (সেইফটি ম্যানেজমেন্ট) খলিলুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট) মোর্শেদুজ্জামান, উপ-ব্যবস্থাপক (মেইনটেনেন্স অ্যান্ড অপারেশন) হাবিবুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (প্রডাকশন ম্যানেজমেন্ট); জাহিদুর রহমান, উপ-ব্যবস্থাপক (মাইন ডেভেলপমেন্ট), সত্যেন্দ্র নাথ বর্মন, সহকারী ব্যবস্থাপক (ভেনটিলেশন ম্যানেজমেন্ট) সৈয়দ ইমাম হাসান, ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) জোবায়ের আলী, উপ-মহাব্যবস্থাপক (মাইন প্লানিং অ্যান্ড অপারেশন) আব্দুল মান্নান পাটওয়ারী, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) এবং গোপাল চন্দ্র সাহা, মহাব্যবস্থাপক (অর্থ ও হিসাব) এবং কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ নুরুজ্জামান চৌধুরী।

কয়লা খনির প্রায় ২৩০ কোটি টাকা সমমূল্যমানের ১ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ মেট্রিকটন কয়লা ঘাটতি অথবা চুরির সঙ্গে ওই ১৯ কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

অভিযোগে মজুদকৃত কয়লার হিসাবের গড়মিলের বিষয়টি দুর্নীত দমন প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) এবং ৪০৯ ধারা অনুযায়ী এজাহারভুক্ত করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।

অভিযোগে দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে পার্বতীপুর মডেল থানার ওসি হাবিবুল হক প্রধান জানান, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পার্বতীপুর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফকরুল ইসলাম জানান, এজাহারে কিছু ত্রুটি রয়েছে। তাছাড়া নিরাপরাধ কেউ যাতে অযথা মামলায় জড়িয়ে হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্প্রতি দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির বিপুলসংখ্যক কয়লার হদিস না পাওয়ার কথা জানা যায়। ২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত খনি থেকে উত্তোলিত দেড় কোটি টন কয়লার মধ্যে প্রায় দেড় লাখ টনের মতো কয়লার হিসাব পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সদস্য আবু সাঈদ কয়লা খনি এলাকা গত সোমবার পরিদর্শনে যাওয়ার পর কয়লা গায়েব হওয়ার কথা প্রথমে ধরা পড়ে।

এই ঘটনায় বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একজন মহাব্যবস্থাপককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সেই সাথে আরও একজন মহাব্যবস্থাপক ও উপ-মহাব্যবস্থাপককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে কয়লা খনি কোম্পানিটির নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান পেট্রোবাংলা কর্তৃপক্ষ।

এরই মধ্যে দুদক এই ঘটনা তদন্তে কমিটি করেছে। সোমবার সেই কমিটি খনি এলাকা পরিদর্শনও করেছে।

আবার খনি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব উদ্দিন আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) আবুল কাশেম প্রদানিয়া, জিএম আবু তাহের মো. নুরুজ্জামান চৌধুরী এবং ডিজিএম খালেদুল ইসলামের বিদেশে গমন ঠেকাতে চিঠিও দিয়েছে দুদক।

কয়লার অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে দেশের একমাত্র কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি। এতে চরম বিদ্যুৎ সংকটে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে রংপুর বিভাগের আট জেলায়। জাতীয় বিদ্যুৎ গ্রিডেও এর প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঢাকাটাইমস/২৫জুলাই/এসএএস/এমআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :