মুন্সীগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানের কক্ষে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ

সিরাজদিখান (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৬ জুলাই ২০১৮, ২২:২১

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কোলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের খাসকামরায় অষ্টম শ্রেণীর এক কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে হোল্ডিং প্লেট বিতরণকারী সাজিদের বিরুদ্ধে (২৫)। ওই ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় ঘটনাটি প্রকাশিত হয়।

জানা যায়, ওই ইউনিয়নের কোলা গ্রামের একজন রিকশাচালকের স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ফুঁসলিয়ে ধর্ষণকারী সাজিদ টংগীবাড়ী উপজেলার বেত্কা গ্রামের বাসিন্দা।

ধর্ষিতা জানায়, তাকে ধর্ষণের ভিডিও গোপনে মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখে সাজিদ। পরে ওই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের খাসকামরায় নিয়ে কয়েকবার ধর্ষণ করে।

ঘটনাটি ছয় মাস আগের। ধর্ষণকা- এত দিন চাপা থাকার জন্য চেয়ারম্যান মীর লিয়াকত আলীর দিকে অভিযোগ তুলছেন ধর্ষিতার পরিবার। আর ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ উঠছে মলি আক্তার নামের একজন ইউনিয়ন তথ্যসেবা উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে।

সাজিদের সঙ্গে আগে থেকে কোনো পরিচয় ছিল না জানিয়ে ধর্ষিতা বলে, ‘প্রায় ছয় মাস আগে ইউনিয়ন পরিষদের তথ্যসেবার উদ্যোক্তা মো. বাবু অসুস্থ থাকায় তার আপন ভাগনি মলি আক্তার ভারপ্রাপ্ত উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করতেন। তখন মলি আপু আমাকে প্রায়ই কম্পিউটার শিখতে বলত। তাই আমি তার সাথে ইউনিয়ন পরিষদে যেতাম। কম্পিউটার শিক্ষার সময় ওই ছেলে আমার সাথে নানা দুষ্টামি করত, গায়ে হাত দিত। আমি মলি আপুকে জানালে, তিনি বলতেন কিছু হবে না। কয়েক দিন পরে মলি আপু বলেন ওই ছেলেদের খাবার রানèা করে দিতে। তিনি বলেন, ‘তোর মা আয়ার কাজ করেন, তুই ওদের রানèা করে দিলে ওরা তোকে অনেক টাকা দেবে। তোকে ভালো মোবাইল কিনে দিবে।’ তখন সাজিদ আমাকে ভালো ভালো কথা বলত এবং আমার সাথে প্রেম করত। এরই মধ্যে একদিন আমার সাথে এসব ঘটনা করে।’

মেয়েটি বলে, ‘আমি মলি আপুকে ঘটনা সব বললে তিনি আর কারো কাছে না বলতে বলেন। তার পর থেকে আমি আর ইউনিয়ন পরিষদে যাই নাই। সাজিদ আমাকে ফোন দিয়ে উত্ত্যক্ত করত। আমি ফোন নম্বর বন্ধ করে দেই।’

মলির প্রতি অভিযোগ করে ধর্ষিতার মা বলেন, ‘মলির সহযোগিতায় চেয়ারম্যানের খাসকামরায় আমার মেয়ের জীবনটা নষ্ট করে দিল ওই লম্পট সাজিদ। মলি ও চেয়ারম্যান সব জানে। কিন্তু এখন আমার মেয়ের সর্বনাশ হয়ে গেল। আমি এর বিচার চাই। মলি আমার মেয়েকে চেয়ারম্যান অফিসে বারবার ডেকে নিয়ে এই সর্বনাশ করল। চেয়ারম্যানের অফিসে আমার মেয়ের এই সর্বনাশ হলো। আমি এর বিচার চাই।’

এলাকাবাসীও এ ঘটনায় ইউপি সচিব ও মলি সহযোগিতার অভিযোগ তুলছেন। এ ব্যপারে ইউপি চেয়ারম্যান মীল লিয়াকত আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এসব ব্যাপারে এখন আপনাদের কাছ থেকে শুনছি। এর আগে আমি এসব ঘটনা শুনিনি বা জানিও না।’

চেয়ারম্যান আরও বলেন, ‘এই ছেলেকে (সাজিদ) পরিষদের হোল্ডিং ট্যাক্স কাটার জন্য এনেছিলাম। তাকে আমার কাছে যে পাঠিয়েছিল আমার সাথে তার ডিট ডুকুমেন্ট আছে। আমার সচিব ঢাকা গেছেন। সে আসলে আমি তার ঠিকানা দিতে পারব।’ জানা যায়, সাজিদকে এখানে পাঠান টঙ্গিবাড়ীর বজ্রজোগিনীর গোলাম মোর্শেদের স্ত্রী। এজেন্টের মালিক ওই মাহিলার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি ঢাকার বাইরে আছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘সাজিদ আমার ভাতিজা হয়। আমি ব্যাপারটা দেখছি।’

সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (প্রশাসন) মো. আবুল কালাম জানান, এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাননি তারা। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :