রাজশাহী সিটি নির্বাচন: ওয়ার্ড ২৩-২৪

ভোটে প্রভাব ফেলবে রাস্তাঘাটের দুর্ভোগ

ব্যুরো প্রধান, রাজশাহী
 | প্রকাশিত : ২৭ জুলাই ২০১৮, ২২:০১

রাজশাহী শহরের ভেতর পিছিয়ে পড়া এলাকাগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ২৫ ও ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। স্থানীয় অধিবাসীরা বলছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তর পাশে শহরের এই এলাকার রাস্তাঘাটের দুর্ভোগ প্রভাব ফেলবে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে।

বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন মেহেরচ-ি, চকপাড়া, নামোভদ্রাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি মহল্লা নিয়ে সিটি করপোরেশনের ২৫ নম্বর ওয়ার্ড। ভোটার ৯ হাজার ১৮৮ জন। রাসিকের ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে একমাত্র এই ওয়ার্ডেই সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন একজন নারী। নুরুন্নাহার বেগম নামের এই নারী তিনবার সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবার ‘কাঁটা চামচ’ প্রতীক নিয়ে তিনি সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এ ওয়ার্ডের অন্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান কাউন্সিলর তরিকুল আলম পল্টু (টিফিন ক্যারিয়ার) ও সাবেক কাউন্সিলর আকবর হোসেন (ঠেলাগাড়ি)। নির্বাচনী প্রচারণার শেষ সময়ে তারা দিনভর ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। দিচ্ছেন উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি। পাশাপাশি নিজের প্রতীকে চাইছেন ভোট।

তরিকুল আলম পল্টু বলেন, ‘ওয়ার্ডের বড় রাস্তাগুলোই নষ্ট, ড্রেন কাদায় ভর্তি। আমার ওয়ার্ডের পানি বের হয় ২৭ নম্বর ওয়ার্ড দিয়ে। ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না। ফলে আমার ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আমি বড় বড় কয়েকটা টেন্ডার করেছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক মতানৈক্যের কারণে মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল টেন্ডারগুলোর বন্ধ করে দেন।’ এবার নির্বাচিত হলে সেসব কাজ আবার করতে চান বলে জানান তিনি।

কাউন্সিলর প্রার্থী নুরুন্নাহার বেগম বলেন, ‘চলতি মেয়াদসহ সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসাবে আমি তিনবার নির্বাচিত হয়েছি। এ সময়ের মধ্যে উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছি। তবে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর হিসাবে কাজ করার সুযোগ কম। তাই সাধারণ কাউন্সিলর পদে দাঁড়িয়েছি। সাধারণ মানুষের জন্য আরও করার ইচ্ছা থেকেই এই সিদ্ধান্ত। আশা করছি ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন।’

অন্যদিকে কাউন্সিলর থাকা অবস্থায় ওয়ার্ডের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন বলে দাবি করেন সাবেক কাউন্সিলর আকবর হোসেন। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ডের বড় রাস্তাঘাটগুলো আমি করেছি। এবার নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করব।’

এ ওয়ার্ডের যাতায়াতের দুরবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে নামোভদ্রা মহল্লার কলেজশিক্ষক দবির হোসেন বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই মহল্লায় পানি জমে যায়। তখন কাদায় হাঁটাচলা করা যায় না। ড্রেনগুলো পরিষ্কার না করার কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি এসব ড্রেনের কারণে এলাকায় মশার দাপট থাকে। সড়কবাতি নেই বললেই চলে। আমরা অত্যন্ত অবহেলার মধ্যে বাস করি। যে প্রার্থী এসব সমস্যার সমাধান দিতে পারবেন বলে মনে হবে তাকেই আমি ভোট দেব।’

নগরীর মেহেরচ-ি মধ্যপাড়া ও চকপাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি মহল্লা নিয়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ড। এখানে ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৯৩ জন। এ্ ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদের সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন- বিএনপি সমর্থিত মো. আক্তারুজ্জামান (লাটিম), আওয়ামী লীগ সমর্থক জাহিদুল ইসলাম আজগর (ঠেলাগাড়ি), মহিউদ্দিন বাবু (ট্রাক্টর), মখলেসুর রহমান খলিল (মিষ্টি কুমড়া) ও শরিফুল ইসলাম (রেডিও) এবং স্বতন্ত্র রবিউল ইসলাম (ঘুড়ি) ও রবিউল ইসলাম (টিফিন ক্যারিয়ার)।

এ ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর নূর মোহাম্মদ এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। তার ছেলে মো. আক্তারুজ্জামান এবারের নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থী। আক্তারুজ্জামান বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘ সময় থেকে এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছেন। এলাকার মানুষ আমার বাবাকে ভালোবাসেন। এ কারণে আমি প্রার্থী হয়েছি। আশা করছি, বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন।’ ২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কাউন্সিলরের দায়িত্ব পালন করেছেন মখলেসুর রহমান খলিল। তিনি বলেন, ‘কাউন্সিলর থাকাকালে রাস্তাঘাট ও ড্রেনসহ এলাকার অবকাঠামোগত ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। এ ছাড়া এলাকার মানুষের দুঃসময়ে পাশে দাঁড়িয়েছি। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ভোটাররা আমাকে নির্বাচিত করবেন বলে বিশ্বাস করি।’

আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী মহিউদ্দিন বাবু ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, ‘গত ৫ বছর থেকে ওয়ার্ডে গণসংযোগ করছি। সাধারণ ভোটাররা আমাকে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। তাদের সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমি নির্বাচন করছি। আশা করছি, ভোটাররা আমাকে হতাশ করবেন না।’ এ ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থী জাহিদুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম (জামায়াত), স্বতন্ত্র রবিউল ইসলাম ও শরিফুল ইসলামের নামও ভোটারদের আলোচনায় রয়েছে। তবে ভোটারদের ধারণা, এবার এ ওয়ার্ডে আক্তারুজ্জামান, মখলেসুর রহমান খলিল ও মহিউদ্দিন বাবুর মধ্যেই ভোটযুদ্ধ সীমাবদ্ধ থাকবে।

মেহেরচ-ি মধ্যপাড়া মহল্লার স্কুলশিক্ষক আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘বছরের পর বছর আমরা অবহেলার মধ্যেই বাস করি। আমাদের এলাকাটি নামেই শহর। আসলে এটি গ্রামের চেয়েও খারাপ। রাস্তাঘাটের এত দুরবস্থা যে এটাকে শহর বলে মনে হয় না। তাই আমি চাই, এমন কেউ কাউন্সিলর নির্বাচিত হোক, যিনি এলাকার উন্নয়ন করতে পারবেন।’

(ঢাকাটাইমস/২৭জুলাই/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি ১২ দলীয় জোটের

বিএনপি নেতারা হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে পড়েছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিটি সংসদীয় এলাকায় ‘এমপিরাজ’ তৈরি হয়েছে: রিজভী

উপজেলা ভোটের মাঠে বিএনপির তৃণমূল নেতারা

উপজেলা নির্বাচনে অংশগ্রহণ: বিএনপির ৬৪ নেতাকে শোকজ

ভোটের মাঠ থেকে স্বজনদের সরাতে পারেননি আ.লীগের মন্ত্রী-এমপিরা

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে: বিএনপির আরও ৫ নেতা বহিষ্কার

সরকারকে পরাজয় বরণ করতেই হবে: মির্জা ফখরুল

এমপি-মন্ত্রীর স্বজন কারা, সংজ্ঞা নিয়ে ধোঁয়াশায় আ.লীগ

মন্ত্রী-এমপির স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা: ওবায়দুল কাদের

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :