ইতালিতে লুৎফর রহমান খানের মৃত্যুবার্ষিকী পালিত

ব্যুরো প্রধান, ইউরোপ
 | প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০১৮, ১৯:৪১

মানুষ চলে গেলেও তার কর্ম তাকে মহীয়ান করে তোলে। তিনি হলেন ‘ইতালির অভিবাসী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা বাংলাদেশ সমিতি ইতালির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লুৎফর রহমান খান।

৩০ জুলাই সোমবার ছিল তার ৯ম মৃত্যুবার্ষিকী। আর এই উপলক্ষে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও অল ইউরোপ বাংলা প্রেসক্লাব ও বাংলা প্রেসক্লাব ইতালির আয়োজনে রাজধানী রোমের স্পাইস অফ রেস্টুরেন্টের হল রুমে একটি স্মরণসভা হয়।

সাংবাদিক হাসান মাহমুদের সভাপতিত্বে সভাটি পরিচালনা করেন অল ইউরোপ বাংলা প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির।

অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সমিতির সাবেক সভাপতি কে এম লোকমান হোসেন, জি এম কিবরিয়া, অল ইউরোপ বাংলা প্রেসক্লাব ও প্রেসক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান, অর্থনীতিবিদ মো. সাইদুর রহমান লস্কর, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাসান ইকবাল, রোম কমিউনিটি প্রবীণ ব্যক্তিত্ব নুরুজ্জামান লাকী।

স্মরণ সভায় অতিথিরা বলেন, মরহুম লুৎফর রহমান খানের প্রতিটি কাজের মধ্যে যে মানবতা ও মানবিকবোধ ছিল, সেই সঙ্গে ছিল অভিবাসীদের অধিকার আদায়ের বিভিন্ন আন্দোলনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকার দৃঢ় মনোবল। যা বর্তমান সময়ে দুর্লভ।

কমিউনিটির নেতারা বলেন, লুৎফর রহমান খানের স্বপ্ন ছিল একটি বাংলাদেশি কমিউনিটি যেখানে সকলে তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-আনন্দ, চাওয়া-পাওয়ার কথা বলবে। যদিও আজ এই কমিউনিটি তার পুরনো ঐতিহ্য ভেঙে বহু ভাগে বিভক্ত।

রোম কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- বৃহত্তর ঢাকা সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমেদ, বরিশাল বিভাগ সমিতির সদস্য আতিয়ার রাসুল কিটন, ইতালি বিএনপির সদস্য আলম শাহ, রোম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মামুন, মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নয়না আহমেদ, বাংলাদেশ সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মজিদ বাবুল ও শামিমা পপি, পাবনা জেলা সমিতির সভাপতি পারভেজ খান, সিনিয়র সহ সভাপতি আসাদ হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ করিম।

সাংবাদিক হাসান মাহমুদ ও মনিরুজ্জামান মনির বলেন, বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন করার পাশাপাশি যারা এই কমিউনিটিকে তাদের সর্বস্ব দিয়ে আগলে রেখেছে তাদের জন্য সাংবাদিক সংগঠনগুলো কাজ করবে। তাদের কর্মজীবনের সেই সোনালী দিনগুলো অন্যের কাজের যেন অনুপ্রেরণা হয় এই জন্য এই স্মরণ সভার আয়োজন। যা আগামী প্রজন্মের জন্য হবে শিকড়কে জানা।

সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলা প্রেসক্লাব ইতালির সহ সভাপতি লাবন্য চৌধুরী, সাংবাদিক শাহীন খলিল কাউছার, হুমায়ূন কবির, মিনহাজ হোসেন।

মরহুম লুৎফর রহমান খান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এমএ পাস করার পর আশির দশকের মাঝামাঝি তিনি ইতালি এসেছিলেন। ওই সময় দেশটিতে ছিল সীমিতসংখ্যক বাংলাদেশির বসবাস। তখন ইতালিতে অভিবাসীরা নিজ নামে লাইসেন্স করে বৈধ ব্যবসা-বাণিজ্য করার অনুমতি পেত না। এই অনুমতির জন্য লুৎফর রহমান খান ইতালির পার্লামেন্ট হাউসের সামনে অনশন ধর্মঘট করেছিলেন। টানা ১৭ দিন অনশন ধর্মঘট করে ন্যায়সংগত এই দাবি আদায় করতে সক্ষম হন। তার সংগ্রামী আন্দোলনের সোনালি ফসল হিসেবেই বাংলাদেশিরা পরবর্তীতে নিজ নামে বৈধ ব্যবসা শুরু করে ইতালিতে। এখন ইতালিতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী হাজার হাজার।

২০০৯ সালের ৩০ জুলাই ইতালি প্রবাসী বাংলাদেশিদের কাঁদিয়ে লুৎফর রহমান খান চলে যান না ফেরার দেশে। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে রাজধানী রোমের একটি হাসপাতালে অনেকটা অকালেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। জন্মস্থান বাংলাদেশের পাবনার বেড়া উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয় তার।

(ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/সিকে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :