ছাত্রবিক্ষোভে ওঠা নয় দাবির বিশ্লেষণ

ওয়াসেক বিল্লাহ
| আপডেট : ০৩ আগস্ট ২০১৮, ২১:৩৫ | প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট ২০১৮, ১২:০১

নিরাপদ সড়ক একটি চমৎকৃত দাবি বটে। কিন্তু সেটা নিশ্চিত করতে কোনো জাদুকরি সমাধান আছে এটা কেউ বলতে পারে না। এগুলোর ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী কাজ করতে হবে। তবে ছাত্রদের ক্ষোভের পর এখন প্রকল্পগুলো অগ্রাধিকার প্রকল্পে নিয়ে আসতে হবে।

তবে দুই জন শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিক্রিয়ায় যে ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন হয়েছে তাতে মানুষ যে ব্যাপকহারে সমর্থন দিয়েছে, আমার ধারণা এর অন্যতম কারণ নগর পরিবহনে বিশৃঙ্খলা আর যানজট।

বছরের ছয় মাস যেখানে বেশ গরম থাকে, সেখানে বাসে দীর্ঘ সময় যানজটে আটকে থেকে এমনিতেই বিক্ষুদ্ধ থাকে মানুষ। তার ওপর সরকার নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে বেশি আদায়, আসন আরামদায়ক না হওয়া, নোংরা পরিবেশ, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠানামা, কথিত সিটিং সার্ভিসেও আসনের বেশি যাত্রী তোলা, মিটারে অটোরিকশা না চলাসহ নানা কারণে মানুষ এমনিতেই ক্ষুব্ধ। তার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবরও আসে নিয়মিত। সব মিলিয়ে এমন একটা পরিবেশ তৈরি হয়েছে যেখানে এই বিক্ষোভে সহমর্মিতা জানানোই যুক্তিসঙ্গত।

নাগরিকদের এই ক্ষোভ প্রশমনে নগর পরিবহনের সেবা উন্নত করতে কোনো বিশেষ প্রকল্পের দরকার নেই। রাস্তায় যেন সবাই শৃঙ্খলা মেনে চলে, সে জন্য অতিরিক্ত ‍পুলিশ মোতায়েন, তাদের ঘুষ গ্রহণের প্রবণতা ছাড়া আর আন্তরিক হলেই সব সমাধান।

কী সেই নয় দাবি?

ফেসবুকেই দেখছি, ছাত্রদের নয় দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানানো হচ্ছে। সরকারও চাপের মুখে তাই করেছে। কিন্তু কি আছে এই নয় দফায়?

অন্তত দুটি দফার কথা বলতে পারি, যা চলাচলে ভোগান্তি বাড়াবে এমনকি দুর্ঘটনারও কারণ হবে। আবার কিছু দাবি আইনের নিরিখে অবশ্যই পালনীয়, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। চাপ দেয়া যাবে, কিন্তু বেশি কঠোর হলে ঝামেলা হবে।

যেমন: প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাতে স্পিড ব্রেকার দিতে হবে

এক সময় সড়কে প্রায়ই স্পিড ব্রেকার বসানো ছিল। কিন্তু এগুলোই আবার প্রাণঘাতি দুর্ঘটনার কারণ হয়েছে আর এ কারণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে সেগুলো একে এসে তুলে দেয়া হয়েছে।

আরেক দাবি: ‘শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে, থামিয়ে তাদের বাসে তুলতে হবে।

এটা তো বিশৃঙ্খলা আরও বাড়াবে। কারণ, যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলা আর নামানো সড়কে বিশৃঙ্খলার অন্যতম কারণ। নগরীতে এই ব্যবস্থা হলে নিশ্চয় পরে সারা দেশেই এই ব্যবস্থার দাবি উঠবে। আর দেশে ছাত্র সংখ্যা তো নেয়ায়েত কম না, দুই কোটি তো হবেই। তারা যেখানেই হাত তুলবে, সেখানেই দাঁড়ালে তো বিপদের কথা। তাতে আর যাই হোক, সড়কে শৃঙ্খলা আসবে না।

আরেকটা দাবি, বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না।

এটা আইনত বৈধ। কিন্তু অধিক জনসংখ্যায় ভারাক্রান্ত রাজধানীতে কি এই নীতি গ্রহণ করলে চলাচলে ভোগান্তি কি কমানো যাবে? বরং যে ছাত্ররা সংকেত দিলেই দাঁড়াতে হবে বলছে, তারাই উঠতে পারবে না।

আরকেটা আইনত বৈধ কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে কঠিন, সেটা হলো: ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবে না।

এটি নিশ্চিত করাই সরকারি সংস্থার কাজ। কিন্তু বাস্তবতা এই যে, এই পেশায় যারা আসে তারা প্রধানত নিরক্ষর বা স্বল্প শিক্ষিত। আর যারা চালক হয় বা পরিবহন শ্রমিক হয় তারা নিতান্তই স্বল্প আয়ের মানুষ। প্রথমে খুবই কম পয়সায় শ্রমিক হয়ে আসে, তারপর ‘ওস্তাদের’ (চালক) কাছ থেকে চালনা শেখে।

এখন চট জলটি এটার সমাধান নেই। কিন্তু সিস্টেম পাল্টানো উচিত। তারও আসে যেটা উচিত, সেটা হলো, এই পেশায় নিয়োজিত মানুষের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গী পাল্টানো আর তাদের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতের বিষয়টি সামনে আনা।

রাজধানীতে তীব্র গরমে একটি দূরত্ব অতিক্রম করতেই ঘর্মাক্ত আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি, এই রকম দূরত্ব দিনে যাত্রী বহনে কতবার অতিক্রম করে পরিবহন শ্রমিকরা? কতটা ঘাম ঝরে তাদের?

তার ওপর নেই ছুটি সাপ্তাহিক বা অন্য ছুটি। এমনই ঈদেও যাত্রী বহন করতে হয় তাদের। যতটুকু জেনেছি, ঈদ-পার্বণে মালিক বোনাস দেয় না বলে যাত্রীদের কাছ থেকে ঈদের আগে দুই এক দিন দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে তারা।

তার মানে এই নয় যে ফিটনেসহীন গাড়ি চলবে আর চালকরা লাইসেন্স ছাড়াই চালাবে। তবে এটি সময়সাপেক্ষ বিষয়। ওস্তাদনির্ভর চালক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা পাল্টে সরকারি-বেসরকারি সংস্থা নির্ভর হতে পারে। যেহেতু পয়সার অভাব, তাই প্রশিক্ষণ ভাতা ঋণ হিসেবে দেয়া যেতে পারে। আর প্রশিক্ষিত হলে নিশ্চয় পরিবহনে কাজ করলে তারা বেতন নির্ধারণের ক্ষেত্রে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে। তাই ঋণ পরিশোধেও সমস্যা হবে না।

আবার চালকের গাড়ি চালনার কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করে দেয়া, তার সম্মানজনক বেতন ভাতা নিশ্চিত করা, সামাজিক মর্যাদার দিকে নজর দেয়ার বিষয়টিও আছে।

গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা বিভিন্ন দেশে বেসরকারি সংস্থাও করে থাকে। বর্তমানে যে ব্যবস্থা আছে, সেটা বিআরটিএর একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। বেসরকারি খাতে অবকাঠামো গড়ে তোলা উচিত, এতে বিনিয়োগও বাড়বে, বাড়বে কর্মসংস্থানও। সরকারি কর্মীরা কেবল তদারকিতে থাকতে পারে।

এখন দুই ক্ষেত্রে চাপ দিলে কী হয়, সেটা এর আগে নানা সময় দেখা গেছে। ফিটনেস বা লাইসেন্স নিয়ে সাঁড়াশি অভিযান নানা সময় হয়েছে রাজধানীতে। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা আরও কমে গেছে প্রতিবার। ফলে জনভোগান্তির কথা চিন্তা করে সরকার পিছু হটেছে। তাই এখানে দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প নিয়ে কাজ করার বিকল্প নেই।

আরেক দাবি, শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

এটা একান্তই শ্রেণি স্বার্থের দাবি। আমি পরিবহন মালিক নই, তাই ভাবতে পারছি না, মালিকরা এতে কী প্রতিক্রিয়া জানায়। তবে সরকারি সংস্থা রেলে কিন্তু ছাত্রদের জন্য কম ভাড়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। এখন কোনো বাসে যদি সবাই ছাত্র থাকে, তাহলে সেই বাসে চলার খরচ উঠবে কি না, তাও আমি জানি না। আর ছাত্ররা নিশ্চয় হোটেল-রেস্টুরেন্ট খেয়ে অটোরিকশা বা উবারে চললে অর্ধেক ভাড়ায় চলে না। তাহলে বাসে অর্ধেক ভাড়ায় চলতে হবে-এই দাবিটা কেন উঠে বারবার?

আরেকটা শ্রেণি স্বার্থের দাবি হচ্ছে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।

তাহলে যদি শ্রমিক নিহত হন, যদি চাকরিজীবী নিহত হন, তার দায়ভারও সরকারকে যে নিতে হয়। আমি নিজেও সড়ক দুর্ঘটনায় আহত একজন মানুষ। সামান্য এক ভুলে বড় ক্ষতি হয়ে গেছে জীবনের। একটি পাজেরো গাড়ি থেঁতলে দিয়েছে ডান পা। ছুড়ি, কাঁচির নিচ দিয়ে যেতে হয়েছে। এক বছর হয়ে গেল, এখনও ভালোভাবে হাঁটতে পারি না।

বলে রাখা ভালো, এখানে দোষটা আমার নিজেরই ছিল। অসাবধান ছিলাম। তাই চালকের বিরুদ্ধে মামলা করিনি। এখন আমার দায় কে নেবে? সরকার?

নয় দাবির প্রথমেই আছে, বেপোরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে এবং এই শাস্তি সংবিধানে সংযোজন করতে হবে।

এখানেই আমার আপত্তি। যদি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর জন্য ফাঁসি দিতে হয়, তাহলে এই পেশায় কারা আসবে? এমনিতেই তো পর্যাপ্ত চালক নেই। তারওপর এই বিধান হলে কতজন আসতে চাইবে এই ঝুঁকি নিয়ে। ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে উঠা স্লোগানটা অসাধারণ, কিন্তু এই দাবিটা তো ন্যায্য হলো না।

বেশ কিছু জায়গায় দেখা গেছে, সড়কের ত্রুটি সারানোর পর বা অবকাঠামো মেরামতে দুর্ঘটনা কমেছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। ২০১১ সালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জোঁকা মোড়ে সাংবাদিক মিশুক মুনীর ও চলচ্চিত্রকার তারেক মাসুদের মৃত্যুর পর জোঁকা মোড়সহ আরও বেশ কিছু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার প্রকৌশল ত্রুটির সমাধান হয়। আর এতে দুর্ঘটনাপ্রবণ এই মহাসড়কে এখন মৃত্যুর সংখ্যা নেই বললেই চলে।

একই চিত্র ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত সড়কে মৃত্যু ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। কিন্তু এখন তা কমে এসেছে বহুলাংশে। দুই লেনের সড়কটি চার লেন হওয়ার পর আর মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি একটিও।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও এই উন্নতিটা দেখা গেছে। সেখানেও আগের তুলনায় কম দুর্ঘটনা এবং কম মৃত্যু হচ্ছে।

বছর তিনেক আগে ঈদুল ফিতরের সময় বঙ্গবন্ধু সেতু থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত সড়কেই দুর্ঘটনায় ৫০ জনের বেশি নিহত হয়। আর এর কারণ অনুসন্ধান করে সড়কটি মেরামত করা হয় এবং এতে সেটি এখন তুলনামূলক অনেক নিরাপদ হয়েছে।

ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে হাটিকুমরুল থেকে রাজশাহীর দিকে দুর্ঘটনা বরাবরই কম। কারণ, মূল সড়কের পাশে ছোট ও ধীরগতির গাড়ির জন্য আলাদা লেন আছে। দুই লেনের সড়ক চার লেনে উন্নীত করার ক্ষেত্রে এই লেন ইদানীং করা হচ্ছে।

এখন যদি চালকের ফাঁসির বিধান করা হয়, তাহলে সড়কে প্রকৌশলগত ত্রুটির জন্য প্রকৌশলীর ফাঁসির বিধান করতে হবে না? লাইসেন্স ছাড়া চালক নিয়োগে গাড়ির মালিকের ফাঁসির বিধান করতে হবে না? যে পুলিশ রাস্তায় শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য করতে পারেনি, তার ফাঁসির বিধান করতে হবে না?

আর কেবল এই খাতে কেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের ফাঁসির বিধান করতে হবে না? ভুল সংবাদে সমাজে বিশৃঙ্খলা তৈরির জন্য সাংবাদিক-সম্পাদকের ফাঁসির বিধান করতে হবে না? বা অন্য আরও অনেক ক্ষেত্রে ফাঁসির বিধান করতে হবে না?

বাকি দুই দাবি, নৌ-পরিবহন মন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া আর শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা নিতে হবে-এগুলো অবশ্যই পালনীয়।

কেবল এই দুটিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাই না। সড়ক মহসড়কে যেখানে মানুষ বেশি পারপার হয়, সব জায়গায় এই ফুটওভারব্রিজ দরকার। আর কেবল নৌ মন্ত্রী নন, সব মন্ত্রী, রাজনীতিকসহ পাবলিক ফিগারেরই মুখের লাগাম থাকা দরকার।

চালকের ফাঁসির দাবিটি উঠেছিল ২০১১ সালে জোঁকা মোড়ের দুর্ঘটনার পর। সেটি ওখানেই থেমে যেত যদি না নৌমন্ত্রী বেফাঁস কথা বলতেন।

মন্ত্রী পরিবহন শ্রমিকদের নেতা এবং তিনি চালকদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা এইচএসসি নির্ধারণের দাবিতে কটাক্ষ করতে গিয়ে বলেছিলেন, ‘গরু-ছাগল চিনলেই তো হলো’। এই গরু ছাগল বলতে তিনি তাদেরকে বুঝিয়েছেন, সেটা নিয়ে আমার সংশয় আছে। তিনি দাবি উত্থাপনকারীদেরকেও বুঝাতে পারেন।

আর সাম্প্রতিক আন্দোলনেও আমার ধারণা ‘ঘি ঢেলেছে’ মন্ত্রীর ওই হাসি।

কানাডা প্রবাসী এক সাংবাদিক লিখেছেন, সে দেশে প্রধানমন্ত্রী বাইরের কোনো অনুষ্ঠানে কী চাহনি দেবেন, কোথায় হাত নাড়াবেন, হাসবেন কি না, হাসলে কতটুকু হাসবেন- এর সবই গণযোগযোগ বিশেষজ্ঞরা ঠিক করেন। আমাদের রাজনীতিক-মন্ত্রী বা অন্য পাবলিক ফিগাররা বিশেষজ্ঞ পালার পয়সা না থাকলে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে শিখতে পারেন। বাংলাদেশে এর আগের সব স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই বক্তব্যের কারণে সমালোচিত হয়েছেন। কিন্তু আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তা হননি। অথবা সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের কাছ থেকে শিখতে পারেন। কম কথা বলে কীভাবে জনপ্রিয় থাকা যায়।

এখন কী করতে হবে

ছাত্ররা বিশেষজ্ঞ নয়। কিন্তু তারা পরিবহন ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে আবেগ থেকে দাবিগুলো তুলেছে। যেভাবেই হোক, এর সমাধান করে উন্নত পরিবহন ব্যস্থা করতে হবে।

কিন্তু সড়ক নিরাপদ করতে আর চলাচলের দুর্ভোগ কমাতে যেসব উদ্যোগ আছে, সেগুলো যেন জটিলতার কারণে বিলম্বের চক্রে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা বা যেসব মোড়গুলো চিহ্নিত করা হয়েছে ও এর বাইরে যেগুলো আছে সেগুলো ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক বা বঙ্গবন্ধু সেতু-হাটিকুমরুলে যেভাবে মেরামত হয়েছে, সেভাবে মেরামত করুন, চালক প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নিন, রেলের সেবা বাড়ান, ঢাকায় মেট্রোরেলের গতি যেন আর কোনো কারণে ধীর না হয়, এই লাইনের কাজ শেষ হওয়ার আগেই যেন আরেকটি লাইনের কাজ শুরু হয়, সে ব্যবস্থা নিন। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আরও আগে চালুর কথা ছিল, সেটা যেন আর বিলম্ব না হয়, তার ব্যবস্থা করুন।

সবচেয়ে বড় কথা আমি ব্যক্তিগতভাবে পুলিশকে কখনো রাজধানীতে যানবাহনের শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে সক্রিয় অবস্থায় দেখিনি। এটা করতে কোনো প্রকল্পের দরকার নেই। বিশেষ করে বাস যেন যেখানে সেখানে থামতে না পারে, অতিরিক্ত সময় যেন ডাকাডাকি না করে যাত্রীর জন্য, সেটা নিশ্চিত করুন।

পুলিশকে শৃঙ্খলা ফেরাতে সক্রিয় না দেখলেও যেটা দেখেছি, সেটা হলো যানবাহন চালকের কাছ থেকে ঘুষ আদায়। আরও শুনেছি মাসোহারা পায় বলে বাসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না। এই ঘুষ বন্ধে কোনো প্রকল্পের দরকার নেই।

লেখক: সাংবাদিক

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :