কতটা শেখাল ছাত্ররা, নিজেরাই কতটা শিখল?

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০১৮, ২৩:২৭ | প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০১৮, ২০:৪৩

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ব্যাপক সমর্থন দিলেও তারা উঠে যাওয়ার পর সড়কে চলাচালের ক্ষেত্রে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো পরিবর্তন চোখে পড়েনি। এমনকি নিরাপদে রাস্তা পারাপারে শিক্ষার্থীরাও আগের চেয়ে বেশি সচেতন হয়েছে, এমন কোনো নমুনাই দেখা যায়নি।

গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর সারা ঢাকায় ছড়িয়ে পড়া ছাত্র আন্দোলনে নিরাপদ সড়কের দাবি সামনে আসে। তবে নগর পরিবহনের বিশৃঙ্খলার বিষয়টি নিয়েও সবচেয়ে বেশি আলোচনায় হয়।

রাস্তায় নামা শিক্ষার্থীরা ব্যাপকভাবে যেমন বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স পরীক্ষা করেছে, তেমনি লেন মেনে চলতে বাধ্য করেছে।

এক সপ্তাহ টানা সড়কে অস্থানের পর রবিবারই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেনি। পরদিন ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাদে গোটা রাজধানীতে পরিস্থিতি ছিল শান্ত। নেমেছে বাস, শুরু হয়েছে যান চলাচলও।

এই কয়দিনের আন্দোলনে নগরবাসী ট্রাফিক আইন মানতে কিছুটা হলেও সচেতন হয়েছে কি না, এটা দেখতেই দিনভর পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যানবাহন আর পথচারীদের। নজর রাখা হয়েছে ছাত্রদের ওপরও। কিন্তু কোনা পরিবর্তন এসেছে, সেটার প্রমাণ মেলা মুশকিল।

সকালে নয়টার পর ধানমন্ডি এলাকায় রাস্তায় যানজট তৈরি হতেই ফুটপাতে লাইন বেধে মোটরসাইকেল উঠে পড়তে দেখা যায়। সেখানে তুলে রাখা হয়েছিল তিন চাকার ভ্যানও। আর এর ফাঁক দিয়েই এগিয়ে চলেছে মোটর সাইকেলগুলো।

রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা কম থাকায় বাস, লেগুনাকে চালাতে দেখা গেছে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হতিতে।

অতিরিক্ত গতিতে চালানোর কারণে লেগুনা যাত্রী মেহেরুন বেগমের সাথে তর্কে বাধে চালকের। মেহেরুন ঢাকাটাইমসকে বলেন, আটিবাজার থেকে নিউমার্কেটে রুটে চলাচলকারী গাড়িটি সাত মসজিদ রোডে ওঠার পর থেকেই বেশ জোড়ে চালেছে। এতে দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা ছিল।

চালকের অসর্তকতার সাথে সাথে যাত্রীদের নানা অসতর্কতাও চোখে পড়ে রাজধানীর মিরপুর রোডের বিভিন্ন অংশে। রাস্তার পাশে নয়, দ্বিতীয় লেন এমনকি মাঝে দাঁড়িয়েও বাসে ওঠানামা করতে দেখা গেছে যাত্রীদের।

‘আমরা আমাদের মতো চলব, আপনার কী?’

যে শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক আইন মানাতে বাধ্য করেছে ছয় দিনেরও বেশি, তারাই পথ চলা, রাস্তা পারাপারে নিয়ম মেনেছে এমন প্রমাণও মেলেনি।

রাস্তার সময় নির্দিষ্ট স্থান থেকে বাসে ওঠা, জেব্রা ক্রসিং ব্যবহার সহ নানা নিয়মের কথা শিক্ষার্থীরা বললেও বাস্তবে তাদেরই তা মানতে দেখা যায়নি।

দুপুরের দিকে মিরপুর রোডে আসাদ গেট, শ্যামলী ও কলেজগেট এলাকায় বেশ কিছুক্ষণ পর্যবেক্ষণ করে তিনটি এলাকাতেই ফুটওভার ব্রিজ থাকা স্বত্বেও নিচ দিয়ে চিরাচারিত ভাবেই দৌড়ে পার হতে দেখা হেছে শিক্ষার্থীদের। ফাঁকা রাস্তায় তুলনামূলক দ্রুত গতিতে গাড়ি চলাচলের মধ্যে এই প্রবণতায় ঝুঁকি ছিল আরও বেশি।

ফুটওভার বীজ ব্যবহার না করে তার নিচ দিয়ে রাস্তা পারাপারের কারণ জানতে চাইলে কথা বলতে চাননি কোনো পথচারী। বরং ফুটওভার ব্রিজের বদলে নিচ দিয়ে দৌড়ে রাস্তা পার হওয়ার ছবি তোলায় বিতণ্ডায় জড়ান মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের এক ছাত্র।

নাম বলতে রাজি না হওয়া ওই ছাত্র বলেন, ‘আমরা আমাদের মতো থাকব। আপনার মাথা ঘামানোর দরকার নেই।’

সংবাদ কর্মী পরিচয় দিলে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘তো হইছে কি? আপনি ছবি তুলবেন কেন?’

ঢাকাটাইমস/০৬আগস্ট/কারই/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :