যানবাহন কম, যাত্রীর স্বল্পতা, উপস্থিতি কম স্কুলেও

অনলাইন ডেস্ক
| আপডেট : ০৭ আগস্ট ২০১৮, ২০:৪৯ | প্রকাশিত : ০৭ আগস্ট ২০১৮, ২০:০৪

রাস্তা ছেড়ে ক্লাসে ফেরার ঘোষণা দিলেও শিক্ষাঙ্গনে উপস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। নগরীতে বাস চলাচল পুরোদমে শুরু হয়নি, সেই সঙ্গে প্রাইভেট কারসহ অন্যান্য যানবাহনও সীমিত। ফলে নিত্য দিনের যানজট পরিস্থিতি সেভাবে দেখা যায়নি।

গত ২৯ জুলাই ঢাকার বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের জেরে পরদিন থেকে নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনে নামে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। টানা ছয় দিন সড়কে অবস্থান শেষে রবিবার থেকে তারা অবস্থান ছেড়ে দেয়।

আর সেদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা রাস্তায় নামে শাহবাগ এলাকায়। এই সোমবারও একটি এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও বহিরাগতদের সংঘর্ষ হয়। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে সব দিকেই শান্তির ছোঁয়া।

এরই মধ্যে সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শুরু হয়ে গেছে ক্লাস-পরীক্ষা। মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে শিক্ষার্থী আনাগোনা কম। শিক্ষকরা বলছেন, দূর থেকে যেসব শিক্ষার্থী আসত, তারা আসছে না সেভাবে।

শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে ঢাকাটাইমসকে জানিয়েছেন মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির।

মোহাম্মদপুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নুরুন্নাহার ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ছাত্রদের ম্যাসেজ করা হয়েছে। অভিভাবকদের সাথে কয়েক দফা মিটিং করেছি। দূর থেকে কিছু ছাত্র আসে। তাদেরই আসতে সমস্যা হচ্ছে। এছাড়া সব কিছু স্বাভাবিক আছে।’

আন্দোলন নয়, হামলার ঘটনা শিক্ষার্থীদের উপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে-বলেন গণভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র রেহান উদ্দিন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘আমার ক্লাসেই সবাই আসে না। অনেকে মিরপুর থাকে। মারামারি হওয়ার পর অনেকেই আসে না। ওদের বাবা-মা বাসা থেকেই বের হতে দেয় না। সবকিছু একেবারে শান্ত না হলে ওরা আসবে না।'

শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি কম থাকার পেছনে বাসের সংখ্যাট কম থাকাকেও দায়ী করেছেন মোহাম্মদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির। এই শিক্ষকের কথার সঙ্গে মিল পাওয়া গেল সড়কে নেমে।

সকালে সাড়ে নয়টার দিকে শ্যামলী এলাকায় বিপুল সংখ্যক যাত্রী অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু পর্যাপ্ত বাস ছিল না। যে কয়টি গাড়ি আসতে দেখা যায় তার মধ্যে যেগুলো সিটিং সার্ভিস হিসেবে চলে তাতে ওঠার সুযোগ ছিল না। আর যেগুলো লোকাল হিসেবে চলে সেগুলোতেও ভিড়ের কারণে উঠতে পেরেছেন কমই।

শ্যামলী মোড়ে দীর্ঘক্ষণ বাসের জন্য অপেক্ষায় থেকে উঠতে না পেরে হেঁটে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল পর্যন্ত হেঁটে এসেছেন শাহীন আহমেদ। সেখান থেকে একটি লেগুনায় চাপেন তিনি। জানান, ফার্মগেট নেমে সেখান থেকে আরেকটি বাসে করে যাবেন শাহবাগ।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে ব্যাপকভাবে চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির কাজগপত্র পরীক্ষা করে। আর এই আন্দোলনের মধ্যেই শুরু হয়েছে ট্রাফিক সপ্তাহ আর এর মধ্যেও চালকের লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সনদ পরীক্ষা করা হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়।

আবার সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেখান থেকে গাড়ি ছাড়া হয়, সেখানেই মালিক-শ্রমিকরা চালকদের লাইসেন্স ও গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করার কথা। আর এখন স্পষ্ট যে যানবাহনের একটি অংশেরই ফিটনেস সনদ ও চালকের লাইসেন্স নেই। আর এসব যানবাহনও নামছে না।

আবার কেবল বাস নয়, যানবাহনের তুলনায় ড্রাইভিং লাইসেন্স যেখানে কম, সেখানে প্রাইভেট কারের বহু চালকও এর বাইরে নয়। আর মোটর সাইকেলের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি প্রযোজ্য।

আবার গত দুই দিন রামপুরা এবং বসুন্ধরা এলাকায় যে সংঘর্ষ হয়েছে, তার প্রভাবও পড়েছে। যারা বাসা থেকে বের হচ্ছেন না, তারা পরিস্থিতি আরেকটু পর্যবেক্ষণ করতে চাইছেন, এটা স্পষ্ট।

ঢাকাটাইমস/০৬আগস্ট/কারই/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :