ইউজিসি স্বর্ণপদক পাচ্ছেন নোবিপ্রবির ড. শফিকুল

নোবিপ্রবি প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১০ আগস্ট ২০১৮, ১৮:২০

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রদত্ত স্বর্ণপদকের জন্য মনোনয়ন পেয়েছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম। ১১ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে পুরস্কারটি (স্বর্ণপদক) তাকে প্রদান করবেন বলে জানা গেছে।

প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন-এর বাছাইকৃত সেরা গবেষণা ও গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশককে এ স্বর্ণপদক প্রদান করা হয়।

২০১৬ ও ২০১৭ সালের দেশের মোট ৩৪ জন গবেষক তাদের মৌলিক গবেষণা ও বস্তুনিষ্ঠ বিষয়বস্তু গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশের জন্য ইউজিসি পুরস্কারের জন্য মনোনয়ন পান।

নোবিপ্রবির শিক্ষকের গবেষণার বিষয়বস্তু হলো ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ নামক এক ধরনের মানসিক ব্যধি। এটা এমন প্রকারের একটি মানসিক সমস্যা, যা আক্রান্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক ব্যক্তিত্বকে বাধাগ্রস্ত করে। একই সময়ে অনেক বেশি আমোদ-প্রমোদ, অনেক বেশি সক্রিয় জীবন-যাপন এরপর পরই মানসিক হতাশাগ্রস্ততা, কাজে অমনোযোগিতা কাজ করা।

ড. শফিকুল ইসলাম জানান, ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’-এর তথ্যমতে- বাইপোলার ডিজাঅর্ডার হল বিশ্বের ষষ্ঠ চিহ্নিত মানসিক ব্যধি যার দিনদিন প্রাদুর্ভাব জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। এই গবেষণার জন্য আমরা ঢাকাস্থ ন্যাশনাল ইন্সটিটউট অব মেন্টাল হেলথ থেকে ৫৫ জন মানসিক রোগীর আর ৫৫ জন সুস্থ মানুষের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে গবেষণা কার্যক্রম শুরু করি, এক্ষেত্রে তাদের বয়স ও লিঙ্গ (পুরুষ বা মহিলা) প্রাধান্য দেয়া হয়। সম্পূর্ণ গবেষণা চলে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের ল্যাবে।

এসময় তিনি ও তার সহযোগীরা দেখেন যে, ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ শুধু জেনেটিক বা মস্তিষ্কের আকার পরিবর্তনের জন্য হয় না, এছাড়াও বিভিন্ন ননএনজাইমেটিক এন্টিঅক্সিডেন্ট যেমন: ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি ও ভিটামিন-ই ছাড়াও কিছু ট্রেস উপাদান যেমন: জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, সোডিয়াম ও সেলেনিয়াম এর উপর নির্ভর করে। গবেষণায় ধরা পড়ে এন্টিঅক্সিডেন্টস ও ট্রেস উপাদানগুলোর অভাব এসব মানসিক রোগের ঝুঁকি অনেকগুণ বাড়িয়ে দেয়। লিপিড পারঅক্সিডেশন প্রোডাকশনাল মেলোনডিএলডিহাইডের মাত্রা বেড়ে গেলেও রোগটি মানবদেহে বাসা বাঁধে প্রকটরূপে।

ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে আমরা এমন অনেক মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভোগী; তবে গুরুত্ব না দেয়ার কারনে এর মাত্রা দিনদিন বাড়ে এবং একটা সময় এ রোগ মারাত্মক আকার ধারণ করে- যা আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যক্তিগত, পরিবারিক ও সামাজিক সম্পর্কের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।

বাংলাদেশে ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ নিয়ে গবেষণা এই প্রথম। বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ৮.৯৫ ভাগ লোক ‘বাইপোলার ডিজঅর্ডার’ রোগে ভোগে। আমাদের গবেষণা কার্যক্রম চলছে, এ ব্যাপারে নতুন আরো অনেক বিষয় উপস্থাপন করতে পারব।

এই স্বর্ণপদক নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, এরকম পুরস্কার আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের জন্য প্রথম, আমি অত্যন্ত আনন্দিত এই ভেবে যে আমার শিক্ষার্থীরা এরকম পদকের জন্য উৎসাহিত হয়ে গবেষণায় প্রচুর মনোনিবেশ করতে পারবে।

তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৩য় বিশ্বের একটি দেশ হিসেবে আমাদের বাংলাদেশে গবেষণা খুব কম হয়। মহান আল্লাহ পাক আমাকে যদি তৌফিক দান করেন তাহলে বাংলাদেশে আমি ‘জেনেটিক ডায়াগনস্টিক ল্যাব’ প্রতিষ্ঠা করতে চাই এবং উন্নত বিশ্বের মতো আমার দেশ ও ঔষুধ শিল্পে এগিয়ে যাক একজন ফার্মাসিস্ট হিসেবে এই আশাবাদ রাখি।

(ঢাকাটাইমস/১০আগস্ট/প্রতিনিধি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :