পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম বাংলা, মমতার যুক্তি ও বাস্তবতা

ড. মোহাম্মদ আমীন
 | প্রকাশিত : ১১ আগস্ট ২০১৮, ০৯:৩৭

২০১৬ সালের আগস্ট মাসের প্রথমার্ধের কোনো একদিন। আমার এক ভারতীয় বন্ধু জানালেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ বা ‘বঙ্গ’ রাখার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

আমি বললাম, কিছুদিন আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ইংরেজি নাম ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ পরিবর্তন করে বাংলা নামের অনুরূপ ÔPaschimbangaÕ করা হয়েছে। এর মধ্যে এমন কী ঘটল যে, নাম পরিবর্তন করতে হবে?

বন্ধু বললেন, কারণ নয়, ইচ্ছাই আসল বিষয়। কারণ খুঁজলে তো আগে ইন্ডিয়া নাম পরিবর্তন করা হয়।

ভেবেছিলাম, পশ্চিমবঙ্গ নাম পরিবর্তন করে ‘বঙ্গ’ রাখা হবে। কারণ এটিই ঐতিহাসিক এবং ঐতিহ্য বিবেচনায় সর্বাধিক যৌক্তিক আর ভাষাতাত্তি¡ক পর্যালোচনায় অধিক শক্তিশালী। তাই এ নিয়ে আর তেমন ভাবা প্রয়োজন মনে করিনি। কয়েকদিন পর জানতে পারি, দুটি নামের যেকোনো একটি রাখতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বদ্ধপরিকর। বুঝতে পারলাম, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ অথবা ‘বঙ্গ’ রাখা হচ্ছে এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।

কয়েক মাস পর আলাপ হলো এক ভারতীয় লেখকের সঙ্গে। তিনি রাষ্ট্রীয় কাজে বাংলাদেশ এসেছিলেন। আমার পূর্ব-পরিচিত এবং বেশ সজ্জন।

নাম পরিবর্তনের কথা তুলতে তিনি বললেন, নাম ঠিক হয়ে গেছে।

নিশ্চয় ‘বঙ্গ’।

লেখক বন্ধু বললেন, মমতা কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যকে বঙ্গ নয়, ‘বাংলা’ নামে দেখতে চান। তার নাম তিন অক্ষরের তাই রাজ্যের নামও হবে তিন অক্ষরের।

বঙ্গ নামেও তিন অক্ষরে (বংগ) লেখা যায়।

বন্ধু বললেন, মমতা যুক্তবর্ণ পছন্দ করেন না। তার নামে কোনো যুক্ত বর্ণ নেই। মমতা নামের শেষ বর্ণে আ-কার আছে, বাংলা নামেও শেষ বর্ণে আকার আছে। বাংলা নাম রাখার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গেও আলোচনা হয়ে গেছে। কেন্দ্রীয় সরকার সবুজ সংকেত দিয়ে দিয়েছে। অতএব আপনি ধরে নিতে পারেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ হয়ে যাচ্ছে এবং খুব তাড়াতাড়ি।

বললাম, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ রাখার সিদ্ধান্ত হবে বাংলাদেশের জন্য বিব্রতকর। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র । তার পাশে ‘বাংলা’ নাম নিয়ে ভারতের একটি রাজ্য বা প্রদেশ থাকবে, তা কী শোভনীয় এবং বন্ধুসুলভ হবে?

লেখক বন্ধু বললেন, ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলা’ দুটি ভিন্ন নাম। একটি পাঁচ বর্ণের এবং অন্যটি তিন বর্ণের। একই নাম নয়, অতএব আপত্তির কোনো সুযোগ নেই।

বললাম, বাংলাদেশ ও বাংলা দুটি ভিন্ন শব্দ হলেও ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলা’ নামের মধ্যে রয়েছে গভীর সম্পর্ক এবং নিবিড় সমার্থকতা। মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশ ‘বাংলা’ নামে পরিচিত ছিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘জয় বাংলা’ ছিল প্রেরণাদায়ক স্লোগান। এর অর্থ বাংলা নামক স্বাধীন ভ‚খণ্ড, অর্থাৎ স্বাধীন বাংলাদেশ। তাই ‘স্বাধীন বাংলাদেশ’ এবং ‘জয় বাংলা’ সমার্থক। সংগত কারণে ‘বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ সমার্থক। শুধু তাই নয়, ‘জয় বাংলা’ কথাটি আমাদের জাতীয় স্লোগান হিসেবে অতি উঁচু মর্যাদায় অধিষ্ঠিত। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ রাখা হলে বাংলাদেশের ‘জয় বাংলা’ স্লোগান এবং আমাদের স্বাধীনতার মহামন্ত্রে উজ্জীবিত কথাটি একই সঙ্গে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করবে। অধিকন্তু বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত নিয়েও বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি হবে। ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ এটি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত। এখানেও ‘বাংলাদেশ’, ‘বাংলা’ নামে প্রতিষ্ঠিত। তাই ‘বাংলাদেশ’ ও ‘বাংলা’ দুটো সমার্থক। এখন যদি জাতীয় সংগীত হিসেবে ‘আমার সোনার বাংলা’ গাওয়া হয় তাহলে এমন সংশয় সৃষ্টি হতে পারে, যে শুধু বাংলাদেশকে নয়, ভারতের একটি অঙ্গরাজ্যের কথাও বলা হচ্ছে।

লেখক বন্ধু বললেন, এটি শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, ভারত এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্যও আপত্তিকর। কেউ ভেবে নিতে পারে, বাংলা অর্থাৎ পশ্চিমবঙ্গও যেন স্বাধীন বাংলাদেশের অংশ। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত এটাই ঘোষণা করছে। বাংলা নাম রাখার সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন কেবল কিছু আনুষ্ঠানিকতা বাকি। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কি কোনো আপত্তি জানানো হয়েছে?

আমি জানি না।

এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ নিবাসী শুভাশিষ চিরকল্যাণ পাত্র বলেন, “বাংলাদেশ পাশেই রয়েছে বলেও আমাদের রাজ্যকে ‘বাংলা’ না বলে ‘পশ্চিমবঙ্গ’ বলাই ভালো। তাতে বঙ্গভঙ্গের ইতিহাসের স্মৃতিও মর্যাদা পায়। বিকল্প হিসেবে রাজ্যের নাম বঙ্গ, ‘বঙ্গভ‚মি’ বা ‘বঙ্গভ‚ম’ করা যেতে পারে। এই নামগুলো ইতিহাস ও ব্যাকরণের বিচারে সার্থক এবং সুন্দর। কিন্তু সেটা এখনই খুব দরকারি বলে আমি মনে করছি না। West Bengal কে Paschimbanga এবং India কে Bharat করাটা তার চেয়েও জরুরি। এখনই পশ্চিমবঙ্গের নাম ‘বাংলা’ করতে ব্যস্ত হওয়ার কোনো দরকার আছে বলে আমার মনে হয় না। যদি কখনো পূর্ব ও পশ্চিমবঙ্গ মিলে অঙ্গ রাজ্য বা দেশ গঠিত হয় তবে তার নাম বঙ্গ বা বঙ্গভ‚মি রাখার কথা ভাবা যেতে পারে (বাস্তবে সে আশা সুদূরপরাহত)। তবে পশ্চিমবঙ্গ নামটি বাঙালির দেশবিভাগের স্মৃতিকে জাগিয়ে দেয়, যার দরকার আছে।”

জানা গেল, ২০১৮ সালের ২৬ জুলাই ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব বিধান সভায় সর্বসম্মতভাবে পাস হয়ে গেছে। এখন প্রস্তাবটি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আছে। দেশবিভাগের ফলে পুরো বঙ্গের পশ্চিমাংশ ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল বলে রাজ্যটির নাম রাখা হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ। এই নামটিই ছিল যৌক্তিক, ঐতিহাসিকভাবে মর্যাদাময় এবং ভাষা-ভ‚খণ্ড ও সংগ্রাম বিবেচনায় ঐতিহ্যমণ্ডিত। এই নাম পরিবর্তনের পেছনে যে যুক্তি দেওয়া হয়েছে তা হচ্ছে, ‘পশ্চিমবঙ্গ’ নাম পরিবর্তন করে ‘বাংলা’ রাখা হলে সংসদে পশ্চিমবঙ্গের নেতারা আগে বক্তব্য রাখার সুযোগ পাবেন। কারণ ইংরেজি বর্ণমালায় ই বর্ণটি চ বর্ণের আগে। এটি খুব হালকা, হাস্যকর এবং ঠুনকো যুক্তি। এমন একটি বালখিল্য যুক্তির ভিত্তিতে এমনভাবে একটি রাজ্যের নাম পরিবর্তন করা সমীচীন নয়, যা স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ নামের বৈশ্বিক মর্যাদায় সামান্যও সংশয় সৃষ্টি করতে পারে।

নামকরণ নিয়ে ইউরোপেও একটি বিরোধ বিদ্যমান। এর প্রকৃতিও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নামকরণ বিতর্কের মতো। ১৯৯১ সালে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে যাওয়ার পর খণ্ডিত একটি অংশ নিজেদের নামে রাখে মেসিডোনিয়া। এ নামকরণের পর থেকে মেসিডোনিয়ার সঙ্গে গ্রিসের বিবাদ শুরু হয়। গ্রিসের একটি অঞ্চলের নাম মেসিডোনিয়া। অধিকন্তু প্রাচীন মেসিডোনিয়া রাজ্যের কেন্দ্রও ছিল গ্রিস। অতএব মেসিডোনিয়ার উত্তরে অবস্থিত খণ্ডিত কোনো ভ‚খণ্ডের নাম মেসিডোনিয়া রাখা উচিত নয়। গ্রিস সরকার প্রস্তাব দিলো, মেসিডোনিয়া যদি রাখতেই হয় তাহলে নর্দান মেসিডোনিয়া রাখলে তাদের আপত্তি নেই। এভাবে বিবাদ চলতেই থাকে। নাম বদল নিয়ে যখন মেসিডোনিয়া ও গ্রিসের আলোচনা চ‚ড়ান্ত পর্বে এসে পৌঁছেছে, সে সময় নাম পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয় মেসিডোনিয়ায়। এমনকি নাম বদলের বিতর্কে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে মেসিডোনিয়া। মেসিডোনায় গ্রিসের প্রায় দেড় লাখ মানুষ এই ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখায়। তারপরও সমস্যা সমাধান থেকে দুই দেশ পিছিয়ে পড়েনি।

সাতাশ বছরের বিতর্কের পর ২০১৮ সালের ১২ জুন গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী ইলেক্সেস সাইপ্রাস এবং মেসিডোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী যোরান যায়েপ বৈঠকে বসেন। আলোচনায় দীর্ঘ সাতাশ বছরের অবসান ঘটিয়ে দুই দেশ সমঝোতায় পৌঁছে। মেসিডোনিয়া দেশটির নাম বদলে রিপাবলিক অব মেসিডোনিয়া পরিবর্তন করে রিপাবলিক অব নর্থ মেসিডোনিয়া বা উত্তর মেসিডোনিয়া রাখার বিষয়ে মতৈক্যে উপনীত হন, যা ম্যান্ডেটের পর কার্যকর করা হবে। নাম নিয়ে বিরোধের কারণে মেসিডোনিয়ার ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রে ভেটো দিয়েছিল গ্রিস। এ চুক্তির ফলে পশ্চিম বলকান এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা তৈরি হবে। ন্যাটো জোটে মেসিডোনিয়ার যুক্ত হওয়ার পথ সুগম হবে।

মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নাম পরিবর্তন করে বাংলা নাম রাখার পক্ষে যে যুক্তি দেখিয়ে আগে বক্তৃতা দেওয়ার সুযোগ নেওয়ার কথা ভাবছেন, সে সুযোগে অন্য একটি রাজ্য পেছনে চলে যাবে। কখনো সে রাজ্যটিও যদি ভবিষ্যতে আগে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য এমনি খোঁড়া যুক্তি দিয়ে নাম পাল্টানোর উদ্যোগ নেয়, তাহলে ভারতের কী হবে? অনেকে বলছেন, শুধু বাংলা নাম রাখলে দ্ব্যর্থক হবে। বাংলাকে যদি দেশনাম হিসেবে ধরা হয় তাহলেও সেটা অখণ্ড বাংলা (ভাষাভাষী) অঞ্চল অর্থে প্রতিষ্ঠিত। তাই অভিন্ন নামাঞ্চলের একটি খণ্ডিত অংশকে মূল ভ‚খণ্ডের নাম প্রদান করা সমীচীন হবে না। ধরুন, কারো নাম সলিম। কোনো কারণে তার শরীর খণ্ডিত হয়ে গেল। একটি খণ্ডিত আঙুলের নাম সলিম রাখা হলে তা আসল ব্যক্তির প্রতি উপহাস করার তুল্য। তাহলে তার শরীরের অন্যান্য খণ্ডিত অংশও একই নাম দাবি করতে পারে। বাংলা নামটির ওপর বাংলাদেশ, এমনকি ত্রিপুরারও দাবি রয়েছে। তবে মমতা এসব যুক্তি অগ্রাহ্য করে বলেছেন, দ্ব্যর্থক হওয়ার কোনো হেতু নেই। কারণ একটি শব্দের একাধিক অর্থ থাকে এবং একই শব্দ প্রায়োগিকতা বিবেচনায় বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। তিনি আরো বলেছেন, পাকিস্তানে যেমন পাঞ্জাব আছে, ভারতেও পাঞ্জাব আছে, কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে একটি কথা স্মরণ রাখা দরকার, দুই দেশেই পাঞ্জাব একটি প্রদেশের নাম, কোনো রাষ্ট্রের নাম নয়।

এ বিষয়ে আলাপ প্রসঙ্গে ভারতের এক প্রশাসক বন্ধু বললেন, ভারত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। তার রাষ্ট্রিক স্বাধীনতা এবং সার্বভৌম ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে। এতে অন্য কারো আপত্তি-অনাপত্তি বিধেয় নয়। আমি বললাম, কেবল সংসদে রাজ্যের নেতাদের আগে বক্তব্য রাখার জন্য এমন একটি সিদ্ধান্ত কোনোভাবে যৌক্তিক হতে পারে না, যা বাংলাদেশ নামের সঙ্গে বিব্রত পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে। অবশ্য বাংলাদেশ, বাংলাদেশের স্লোগান, জাতীয় সংগীত, বাংলা ভাষা প্রভৃতি নিয়ে দ্ব্যর্থকতা এবং সংশয় সৃষ্টি না করলে বিষয়টি নিয়ে এত ভাবা হতো না। প্রশাসক বন্ধু বললেন, ব্যক্তি স্বাধীনতার মতো রাষ্ট্রীয় স্বাধীনতা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ প্রসঙ্গে তাকে একটি ঘটনার কথা বললাম।

জর্জ বার্নাড শ এবং এইচ জি ওয়েলস হাঁটছিলেন। ওয়েলস তার হাতের লাঠিটা এমনভাবে ঘুরাচ্ছিলেন যে, তা বারবার জর্জ বার্নাড শর নাকে লাগার উপক্রম হচ্ছে।

জর্জ বার্নাড শ ওয়েলসকে বললেন, তোমার লাঠি ঘোরানো বন্ধ কর।

কেন বন্ধ করব? এইচ জি ওয়েলস প্রশ্ন করলেন।

নইলে তা যেকোনো সময় আমার নাকে আঘাত করতে পারে।

ওয়েলস বললেন, রাস্তায় লাঠি ঘুরিয়ে হাঁটা আমার নাগরিক অধিকার এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা। তুমি আমার সেই ব্যক্তি স্বাধীনতা খর্ব করতে পার না।

ওয়েলসের কথা শুনে বার্নাড শ বললেন, তা আমি জানি।

ওয়েলস শেøষ দিয়ে বললেন, তাহলে আবার নিষেধ করছ কেন?

জর্জ বার্নাড শ বললেন, কারণ তোমার ব্যক্তিস্বাধীনতা অবারিত নয়। আমার নাকের ডগা যেখানে শেষ তোমার নাগরিক অধিকার এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা সেখান থেকেই শুরু।

শুধু সংসদের আগে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষে অত্যন্ত বিব্রতকর এমন একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ রবীন্দ্রনাথের ‘সামান্য ক্ষতি কবিতার কথা মনে করিয়ে দেয়। ওই কবিতায় কাশীর মহিষী করুণা ¯œান শেষে শীত দূরীভ‚ত করার লক্ষে আগুন পোহানোর জন্য সখীদের বলেছিলেন,

ওলো তোরা আয় ওই দেখা যায়

কুটির কাহার অদূরে,

ওই ঘরে তোরা লাগাবি অনল,

তপ্ত করিব করপদতল

এত বলি রানি রঙে বিভল

হাসিয়া ওঠিল মধুরে।

আদেশ পেয়ে রানির সখীরা আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল দীনহীনদের পর্ণকুটিরে। তারপর:

ছোটো গ্রামখানি লেহিয়া লইল

প্রলয় লোলুপ রসনা।

জনহীন পথে মাঘের প্রভাতে

প্রমোদক্লান্ত শত-সখী সাথে

ফিরে গেল রানি কুবলয় হাতে

দীপ্ত-অরুণ-বসনা।

ড. মোহাম্মদ আমীন: কথাসাহিত্যিক, গবেষক, ইতিহাসবেত্তা, জীবনীকার ও ব্যাকরণবিদ

সংবাদটি শেয়ার করুন

মতামত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :