কমলাপুরে সিরিয়াল ‘বিক্রি হচ্ছে’ ৩০০ টাকায়!
স্বজনদের সঙ্গে ঈদ করতে কমলাপুরে টিকিটযুদ্ধের শেষ দিন চলছে। রবিবার সকাল থেকে তিল ধারণের ঠাঁই নেই কমলাপুরে। টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড় দেখে অনেকেই শঙ্কায় ভুগছেন শেষ পর্যন্ত টিকিট পাবেন তো! আর এই সুযোগই নিচ্ছে কিছু লোক। আগে থেকে লাইনে লোক দাঁড় করিয়ে তা বিক্রি করছে। সিরিয়াল এগিয়ে দেয়ার জন্য তারা আড়াইশ থেকে তিনশ টাকা নিচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে রেল কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এ ধরনের কোনো কিছু ঘটছে না।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিনুল ইসলাম রংপুর এক্সপ্রেসের টিকিটের জন্য দাঁড়িয়েছেন দীর্ঘ লাইনে। বেলা ১১টায় তিনি প্লাটফর্ম ছেড়ে বাইরে দাঁড়ানো। এত লোকের পরে তিনি টিকিট পাবেন কি না এটা নিয়ে সংশয়ে। কিছুক্ষণ পরেই তাকে আটজনের পরেই পাওয়া গেল।
বিষয়টি কীভাবে সম্ভব হলো জানতে চাইলে ঢাকাটাইমসকে আমিনুল বলেন, ‘আমি যখন টিকিট পাবো কি না এই সংশয়ে তখন হঠাৎ একজন আমাকে ফিস ফিস করে এসে বলল, ৩০০ টাকা দিলে সামনে সিরিয়াল দেব। আমি সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যাই। এরপর তিনি আমাকে সামনে নিয়ে আসেন এবং সেখানে আগে থেকে একজন বয়স্ক লোক দাঁড়ানো ছিল, তিনি সরে গিয়ে আমাকে দাঁড়ানোর জায়গা দেন।’
এই সিরিয়াল বিক্রি শুধু আমিনুলের কাছেই হয়েছে তা নয়, এ রকম আরও অনেক সিরিয়ালই বিক্রি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা টিকিটপ্রত্যাশীরা।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমদাদুল হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা মধ্যরাত থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। যখন এসেছি তখনও টিকিটের লাইনে অনেক মানুষ দাঁড়ানো। সকাল ৮টার সময় যখন টিকিট বিক্রি শুরু হয়, তখন আমাদের ৩/৪ জন সামনে যিনি দাঁড়িয়েছিলেন তিনি সরে গিয়ে অন্য একজনকে দাঁড়াতে দিলেন। উনি চলে যাওয়ার পর নতুন করে দাঁড়ানো ওই লোকের কাছ থেকে শুনলাম তিনি ২৫০ টাকা দিয়ে সেই সিরিয়াল কিনেছেন।’
তবে সিরিয়াল বিক্রির অভিযোগ অস্বীকার করেন কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ম্যানেজার সীতাংশু চক্রবর্তী। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ছিন্নমূলেরা যাত্রীবেশে দাঁড়াতেই পারবে না। কারণ, সাধারণ মানুষ খুবই সচেতন, আগের রাত থেকে তারা নিজেরাই লাইনে দাঁড়িয়ে সিরিয়াল ঠিক রাখে। সিরিয়াল বিক্রির অভিযোগ সঠিক নয়।’
সীতাংশু বলেন, ‘সকাল থেকেই প্রতিটি কাউন্টারের সামনে টিকিটপ্রত্যাশী মানুষের ভিড়। যাত্রীচাপের কথা মাথায় রেখে প্রতিটি ট্রেনেই অতিরিক্ত বগি সংযুক্ত করা হবে। অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে যেন কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীসহ রেলওয়ের নিজস্ব বাহিনী তৎপর রয়েছে।’
(ঢাকাটাইমস/১২আগস্ট/জিএম/জেবি)