অ্যাপে বাইক চালকদের অনৈতিকতা

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৩ আগস্ট ২০১৮, ০৮:৪০
ফাইল ছবি

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সময় থেকেই ঘটনাটি ঘটছে। মোড়ে মোড়ে মোটর সাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা তরুণনা কাউকে যাত্রী ভাবলেই জিজ্ঞেস করছেন, ‘কোথায় যাবেন?’

এই তরুণরা অ্যাপে উবার বা পাঠাওয়ের মোটর সাইকেল চালিয়ে আয় করতেন। তবে শিক্ষার্থীর আন্দোলনের সময় বাড়তি ভাড়া আদায়ের কৌশলে অ্যাপ বন্ধ রেখে সিএনজি অটোরিকশার মতো করে চুক্তিতে গন্তব্যে গেছেন।

আন্দোলন শেষে ঘরে ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু যারা ‘মজা পেয়ে গেছেন’ তাদের বহুজন সেই অভ্যাস ছাড়তে পারছেন না। আর রীতিমতো যাত্রী ডাকছেন তারা।

এভাবে চললে চালকদের বাড়তি যে লাভটা হয়, সেটা হলো অ্যাপ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ভাড়ার যে অংশ কেটে নেয়, সেটা আর দিতে হচ্ছে না। ফলে ট্রিপ শেষে আয়টা বেশি হয়। কিন্তু এটি তৈরি করছে নিরাপত্তা ঝুঁকি। এটা যেমন যাত্রীর জন্য, তেমনি ঝুঁকির বাইরে নন চালকও।

অ্যাপে বাইক ডাকলে চালকের নাম পরিচয়ের বিষয়টি নিয়ে নিশ্চয়তা থাকে। সেই সঙ্গে যাত্রীরও নাম পরিচয় নিবন্ধন করা থাকে তার মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে। এটি চালক ও যাত্রী দুই পক্ষের জন্যই নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেয়।

কিন্তু এভাবে বাইকে চড়লে নির্জন স্থানে গিয়ে ছিনতাই বা অন্য কোনো অপরাধের শিকার হতে পারেন চালক-যাত্রী দুই পক্ষই।

যারা এভাবে যাত্রী টানছেন, তাদের একজনের সঙ্গে কথা হলো। কিন্তু ‘পাঠাও’য়ের নিবন্ধিত চালক। বলেন, ‘অ্যাপ ব্যবহারের ফলে প্রতিষ্ঠানটি আয়ের অংশ কেটে নেয়। পাঠাওকে এই অংশটুকু দিতে রাজি নন অনেক চালক।

‘পাঠাও’য়ে নিবন্ধন করে মোটর সাইকেলে যাত্রী টানেন ইমরান হোসেন। ঢাকাটাইমসকে তিনি বলেন, ‘অ্যাপের মাধ্যমে গেলে পাঠাও পারসেন্টিজ নেয়। ডাইরেক্ট (সরাসরি) গেলে তো পারসেন্টিজ দেয়া লাগে না। এটা আমাদের জন্য লাভ।'

ইমরান তার নাম প্রকাশ করে কথা বললেও মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ মোড় এলাকায় যাত্রী খোঁজা একজন চালক নাম বললেন না। তিনি কথাই বলতে চাইছিলেন না।

‘কোথায় যাবেন’ এই ধরনের কথা জিজ্ঞেস করার কারণ জানতে চাইলে ওই তরুণ বলেন, ‘ফোনে চার্জ নাই। তাই ইন্টারনেট চালু করতে পারছি না।'

নাম বলতে না চাওয়ার পর ছবি তোলার চেষ্টা করা হলেও তিনি আপত্তি জানান এবং তাড়াহুড়া করে চলে যান।

যাত্রীদের কাছ থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই ধরনের চালকরা অ্যাপে দূরত্ব অনুযায়ী যে ভাড়া নির্ধারণ হয়, তার চেয়ে কিছুটা কম নেয়।

তবে অ্যাপের নিয়মিত যাত্রী মাহাদী হাসান ঢাকাটাইমসকে বলেন, এই অল্প কয়টা টাকার জন্য ঝুঁকি নেয়ার মানেই হয় না। তিনি বলেন, ‘অ্যাপে যাওয়া মানে আমি নিরাপদ। কারণ, বাইকটা কোথায় যাচ্ছে না যাচ্ছে, কে চালাচ্ছে, কোম্পানির কাছে সব তথ্য থাকে। একটা ঝামেলা হলেও দ্রুত সমাধান পাওয়ার সুযোগ আছে।’

‘এখন যে কেউ একটা মোটর সাইকেল নিয়ে এসে বলল, উবার বা পাঠাও সার্ভিস। আর আমি উঠে গেলাম। এটা তো নেহাত বোকামি। সে আদৌ চালক কি না কে জানে। নাকি সে সন্ত্রাসী? এগুলো না যেনে আমি কেন উঠব? আর অ্যাপ তো আছেই। আমি অ্যাপ ব্যবহার করি। অযথা কয়টা টাকা বাঁচাতে গিয়ে বিপদে পরতে রাজি না।’

ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/কারই/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :