ওষুধ প্রশাসনের ব্যর্থতায় রোগীদের ভোগান্তি: হাইকোর্ট
ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ব্যর্থতার কারণে দেশের রোগীদের এত ভোগান্তি বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
চুয়াডাঙ্গা শহরের ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের চক্ষুশিবিরে চিকিৎসা নিয়ে ‘চোখ হারানো’ ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানিতে এ মন্তব্য করেছেন আদালত।
সোমবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়েছে। আগামী ২১ অক্টোবর রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারন করেছেন হাইকোর্ট।
প্রতিবেদনের আলোকে আদালত বলেছেন, চোখ অপারেশনে যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে তা রেজিস্ট্রার্ড নয়। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ব্যর্থতার কারণে এদেশের রোগীদের এত ভোগান্তি।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইজীবী অমিত দাশগুপ্ত। ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আমিরুল ইসলাম।
এর আগে গত ১ এপ্রিল ‘চোখ হারানো’ এই ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না-তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
‘চোখ হারানো’ ২০ জনকে এক কোটি করে ২০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষুশিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন! শীর্ষক শিরোনামে ২৯ মার্চ একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেল্থ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষুশিবিরের দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। তবে বাসায় ফিরেই ২০ জন রোগীর চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়।
এসব রোগী ও তাদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ৫ মার্চ অপারেশনের পর ৬ মার্চ তাদের প্রত্যেককেই হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। বাড়ি ফিরে ওই দিনই কারও বিকেলে, কারও সন্ধ্যায়, কারও বা রাত থেকে চোখে যন্ত্রণা ও পানি ঝরতে শুরু করে। পরদিনই তারা যোগাযোগ করেন ইম্প্যাক্ট হাসপাতালে। তাদের তখন গুরুত্ব না দিয়ে কোনো রকম চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু যন্ত্রণা অসহনীয় হয়ে উঠলে ফের তারা ইম্প্যাক্টে যান। সেখান থেকে তখন কয়েকজন রোগীকে স্থানীয় এক চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
স্থানীয় ওই চক্ষু বিশেষজ্ঞ তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে ঢাকায় গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেন। এদের মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন। পরে ইম্প্যাক্ট থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেওয়া হয়। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে গেছে। ৫ মার্চের ওই অপারেশনের ফলে তাদের চোখের এতো ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে যে, ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়েছে।
ঢাকাটাইমস/১৩আগস্ট/এমএবি/ডিএম