বঙ্গবন্ধুর কথা বলতে গেলেই কান্না আসে মমতাজের

প্রকাশ | ১৫ আগস্ট ২০১৮, ১৪:৪৯ | আপডেট: ১৫ আগস্ট ২০১৮, ১৭:৫৭

কাজী রফিকুল ইসলাম, ঢাকাটাইমস

বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে এসে কাঁদছিলেন মু্ক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন। কেন? বলছিলেন, ‘নেতার জন্য কান্না আসে। তাকে কাছ থেকে দেখেছি। এখানে আসলেই বুকটা হু হু করে উঠে।’

বাঙালির নিজের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে। আর এই দেশেই স্বাধীকার আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িতে সপরিবারে রক্ত প্রাণ দিতে হয়েছে বাঙালির মহানায়ককে।

অস্ত্রের জোরে জাতিকে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা হয়েছে বছরের পর বছর। কিন্তু গণমানুষের ভালোবাসা কত দিন আর ঠেকানো যায়? বাঙালির মনের রাজ্যে বঙ্গবন্ধু আবার ফিরে পেয়েছেন তার আসন।

৪৩ তম মৃত্যুবার্ষিকীতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিকে দেশবাসী স্মরণ করছে তাকে হারানোর আক্ষেপ, তার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা নিয়ে। সেই সঙ্গে খুনিদের প্রতি প্রকাশ পেয়েছে ঘৃণা।

সকাল থেকেই ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে মানুষের ঢল। তাদের একজন জীবন সায়াহ্নে পৌঁছে যাওয়া মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ উদ্দিন।  এ সময় বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি। পরে কথা বলেন চোখ মুছতে মুছতে।

৩ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধ করেছেন মমতাজ উদ্দিন। ১৯৭২ এ বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর সামনে সরাসরি দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল মমতাজের। বলছিলেন, ‘এই কথা ভোলা যায়? একবার নেতাকে যে দেখবে, তার মনে থাকবে সারা জীবন। এ রকম আর কেউ আমাদেরকে ভালোবাসেনি, পারবেও না। শেখ মুজিব একজনই।’

‘মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আজ নেই। তার এই শূন্যতা কখনও পূরণ করা সম্ভব নয়’- বলেন এই মুক্তিযোদ্ধা।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ মাঠ থেকে শুনেছেন মমতাজ। বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণের কথা মনে হলে এখনও চোখে পানি আসে। আজ বঙ্গবন্ধু নেই, কথাটা মনে হলে চোখ দিয়ে অঝরে পানি পড়ে।’

‘আজও সে ভাষণ আছে, নেই ভাষণ দেয়া সেই মানুষটি। যার ডাকে মুক্তিযুদ্ধে গিয়েছিলাম, আজ সে নেই’-বলতে বলতে আবার কাঁদেন মুক্তিযোদ্ধা মমতাজ।

প্রিয় নেতাকে হারানোর পর ২১টি বছর রাষ্ট্রীভাবে তাকে কার্যত নিষিদ্ধ করে রাখার পর এই হত্যার বিচার হবে, সেটি এক সময় বিশ্বাস করতে পারেননি মমতাজ। কিন্তু জাতির জনকের কন্যা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর বিচার হয়েছে, ফাঁসি কার্যকর হয়েছে পাঁচ খুনির। বাকি সাত জনের মধ্যে একজন মারা গেছে আর ছয় জন পালিয়ে বেড়াচ্ছে বিভিন্ন দেশে।

মমতাজের আশা, সব খুনির ফাঁসি দেখে তিনি চোখ বুঁজবেন।

ঢাকাটাইমস/১৫আগস্ট/কারই/ডব্লিউবি