বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদকে ফেরাতে রাজি যুক্তরাষ্ট্র: কাদের

প্রকাশ | ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৮:২০ | আপডেট: ১৬ আগস্ট ২০১৮, ১৮:৪১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
রাশেদ চৌধুরী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড পাওয়া রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত দিতে যুক্তরাষ্ট্র রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক ওবায়দুল কাদের।

পলাতক আরেক খুনি নুর চৌধুরীকে কানাডা এখনও ফেরত দেয়ার সিদ্ধান্ত না নিলেও তাকেও ফিরিয়ে আনা যাবে বলে আশাবাদী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

বৃহস্পতিবার দুপুরের ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের শোক দিবসের আলোচনা সভায় এ কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যার ৩৫ বছর পর ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়। তারা হলেন কর্নেল (অব.) সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল (অব.) সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, লে. কর্নেল (অব.) মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), মেজর (অব.) এ কে বজলুল হুদা এবং মেজর (অব.) এ কে এম মহিউদ্দিন (আর্টিলারি)৷

তবে উচ্চ আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে মোট ১২ জনকে। বাকি সাত জনের মধ্যে অবস্থায় আবদুল আজিজ পাশা ২০০১ সালের ২ জুন জিম্বাবুয়েতে মারা গেছেন৷

বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন লে. কর্নেল (বরখাস্ত) খন্দকার আবদুর রশিদ, মেজর (বরখাস্ত) শরিফুল হক ডালিম, লে. কর্নেল (অব.) এ এম রাশেদ চৌধুরী, মেজর (অব.) এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, ক্যাপ্টেন (অব.) আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান৷

গ্রেপ্তার বা প্রত্যার্পণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, পাকিস্তান, লিবিয়াসহ আফ্রিকা ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বারবার অবস্থান বদলে করেছে খুনিরা৷

ছয় খুনির মধ্যে রাশেদ চৌধুরী ও নুর চৌধুরীর অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত সরকার।

রাশেদ অবস্থান করছেন যুক্তরাষ্ট্রে, আর নুর কানাডায়। এর মধ্যে কানাডা থেকে নুরকে ফেরানো অনিশ্চিত হয়ে গেছে দেশটি মৃত্যুদণ্ডবিরোধী হওয়ায়। কেবল নিজ দেশে নয়, অপরাধী তার দেশে ফিরে গেলেও যদি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হয়, তাহলেও দেশটি তাকে দেশে পাঠাবে না।

তবে কানাডা সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ আর কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ বিষয়ে একটি উপায় খোঁজার চেষ্টার কথা জানিয়েছেন।

আর রাশেদ চৌধুরী আছেন যুক্তরাষ্ট্রে-সেটাও আগে থেকেই জানা ছিল সরকারের। তিনি ওই দেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে আছেন। তাকে ফিরিয়ে আনতে বারবার কূটনৈতিক কথা চালাচালি হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আশ্বাসও মিলেছে৷ কিন্তু আলোচনায় কখনই গতি আসেনি৷

এর মধ্যে ১৪ আগস্ট আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানিয়েছেন, রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে আনতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে যাবেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে যেই খুনি (আবদুর রশিদ) অবস্থান করছে, তাকে সরানোর জন্য ট্রাম্প প্রশাসন সবুজ সংকেত দিয়েছে। আর কানাডায় (নুর চৌধুরী) মৃত্যুদণ্ড না থাকায় আইনি জটিলতার কারণে এই মূহূর্তে আনা যাচ্ছে না।’

ওয়াশিংটনভিত্তিক সংবাদপত্র ‘ডেইলি কলার’ সোমবার এক সংবাদে বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠাতে পারেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী এবং যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জিয়াউদ্দিনের বরাত দিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে পত্রিকাটি।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় প্রত্যক্ষভাবে অংশ নেয় রাশেদ চৌধুরীকে ১৯৭৬ সালে দ্বিতীয় সচিব হিসেবে জেদ্দায় বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্ব দিয়ে পাঠান বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। তিনি নাইরোবি, কুয়ালালামপুর ও ব্রাসিলিয়া দূতাবাসে কর্মরত ছিলেন।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাশেদকে বরখাস্ত করে দেশে ফেরার নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু তিনি দেশে না এসে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেন।

(ঢাকাটাইমস/১৬আগস্ট/টিএ/ডব্লিউবি)